হেডিংলে-তে দেখা যাবে না এই দৃশ্য ছবি: টুইটার থেকে।
বর্ণবৈষম্যের বিতর্কের জেরে তোলপাড় ইংল্যান্ডের ক্রিকেট। অভিযুক্ত মাইকেল ভন-সহ অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটার ও কর্তা। শাস্তির মুখে ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যশালী কাউন্টি ইয়র্কশায়ার। কাউন্টির প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যমূলক মন্তব্যের অভিযোগ ওঠায় তারা আপাতত আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করতে পারবে না। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)-এর তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হেডিংলে-তে কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে না। এই কাউন্টিতে খেলেছেন ক্রিকেটের দুই খ্যাতনামী জিওফ্রে বয়কট ও সচিন তেন্ডুলকর। এখানেই খেলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়ক জো রুট। সেই ক্লাবেই এ বার লেগে গেল বর্ণবিদ্বেষের কালিমা।
ইসিবি-র তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইয়র্কশায়ারের প্রাক্তন ক্রিকেটার আজিম রফিক যে অভিযোগ করেছিলেন তা সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে ম্যানেজমেন্ট। এই ঘটনা ইংল্যান্ড ক্রিকেট, সর্বোপরি খেলার সম্মানহানি করেছে। তাই ক্রিকেটের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে ইসিবি।’ অভিযোগ ওঠার পরে ক্লাবের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দলের স্পনসর নাইকি। ফলে আর্থিক ধাক্কার সম্মুখীন ক্লাব।
ঠিক কী অভিযোগ করেছিলেন রফিক? পাক বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটার ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের হয়ে খেলেছেন। ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রফিক অভিযোগ করেন, ১০ বছর ক্লাবের হয়ে খেললেও তাঁর সব সময় মনে হয়েছে তিনি বাইরের কেউ। প্রতিভা থাকলেও ঠিক মতো সুযোগ পাননি বলেও অভিযোগ করেন রফিক।
বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে ইয়র্কশায়ারের অধিনায়ক গ্যারি ব্যালান্স এবং ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভনের উপরে। ভন ১৯৯৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই কাউন্টির হয়েই খেলেছেন। ব্যালান্স তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিলেও ভন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ব্যালান্সকেও শাস্তি দিয়েছে ইসিবি। জাতীয় দলে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিনি ডাক পাবেন না।
এই বিতর্কের মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন ইয়র্কশায়ারের চেয়ারম্যান রজার হাটন। একটি বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, যে পরিস্থিতি হয়েছে তার জন্য কিছুটা হলেও তিনি দায়ী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তাই চেয়ারম্যানের পদে থাকার কোনও অধিকার তাঁর নেই। পদত্যাগ করলেও আরও অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন রজার। তাঁদেরও পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি।
ইংল্যান্ডের ফুটবল মাঠে অনেক আগে থেকেই বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে খেলা শুরুর আগে মাঠে হাঁটু মুড়ে প্রতিবাদ করেন ফুটবলাররা। চলতি বিশ্বকাপে ক্রিকেট মাঠেও দেখা যাচ্ছে সেই দৃশ্য। তার মধ্যেই অবশ্য ফের বর্ণবিদ্বেষে বিদ্ধ হল ইংল্যান্ড ক্রিকেট।