মরিয়া: নিজেকে প্রমাণ করতে চান পরিশ্রমী ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র।
বয়স কি শুধুই একটি সংখ্যা? ঋদ্ধিমান সাহার ফিটনেসে নজর রাখলে তা হয়তো সংখ্যা হিসেবেই দেখা যেতে পারে। ৩৭ বছর বয়সেও অন্যতম সেরা উইকেটকিপার হিসেবেই স্বীকৃত ঋদ্ধি।
অথচ, গণমাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে তাঁর অবসর নিয়ে জল্পনা চলছে। বলাবলি হচ্ছে, ঘরের মাঠে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজ়েই নাকি শেষ বারের মতো ভারতীয় দলের জার্সিতে দেখা যেতে পারে ঋদ্ধিকে। কারও কারও মত, ঋষভ পন্থের সঙ্গেই কে এস ভরতকে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে রাখা হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে। ঋদ্ধি এ ধরনের মন্তব্যে কান দিতে চান না। অবসরের সব জল্পনাও তিনি উড়িয়ে দিলেন নির্দ্বিধায়। সোমবার মুম্বই থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে বঙ্গ উইকেটকিপার বললেন, ‘‘কারা আমার অবসর নিয়ে এত চর্চা করছে? সমর্থকেরা তো অনেক কিছুই বলেন। সে সবে কান দিলে কী করে চলবে? আমি কতটা তৈরি, তা টেস্ট সিরিজ়েই দেখা যাবে। প্রস্তুতিতে কখনও ফাঁকি দিইনি। ভবিষ্যতেও দেব না।’’
আইপিএল শেষে ভারতীয় দল যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ব্যস্ত, ঋদ্ধি তখন বাংলার হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে খেলেছেন। টেস্ট সিরিজ় শুরু হওয়ার দশ দিন আগে মুম্বই উড়ে গিয়েছেন তিনি। সেখানে তিন দিনের শিবির আয়োজন করা হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটারদের জন্য। ঋদ্ধির সঙ্গেই শিবিরে রয়েছেন কে এস ভরত, শুভমন গিল, চেতেশ্বর পুজারা, অজিঙ্ক রাহানেরা। লাল বলের ক্রিকেটে শেষ খেলা হয়েছে ইংল্যান্ড সিরিজ়ে। তার পর থেকেই শুরু হয়েছে আইপিএল। ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারদের ছন্দে ফেরানোর জন্যই কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের নির্দেশে আয়োজন করা হয়েছে এই শিবির। যেখানে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে ফিটনেসের উপরে। সেই সঙ্গেই চলছে নেটে ব্যাটিং প্রস্তুতি। ঋদ্ধি বলছিলেন, ‘‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে এই প্রস্তুতি। লাল বলের ক্রিকেটে ছন্দ ফেরানোর জন্য বাড়তি অনুশীলন করতেই হয়। সেটার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে এই বিশেষ শিবিরে।’’
গত কয়েক মাসে ভারতীয় দলে প্রথম কিপারের জায়গা নিয়েছেন ঋষভ। তাই ঋদ্ধি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডে সুযোগ পাননি। শেষ টেস্ট খেলেছিলেন মেলবোর্নে দুঃস্বপ্নের সেই টেস্টে। যেখানে ৩৬ অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু দেশের মাঠে যেখানে ভাল কিপার দরকার, সেখানে সব সময় ঋদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। তা ছাড়া এই সিরিজে ঋষভও বিশ্রামে। তাই কানপুরে অশ্বিন, অক্ষরদের বিষাক্ত স্পিন সামলাতে ঋদ্ধির উপরেই সম্ভবত ভরসা রাখতে চলেছে দল। ঋদ্ধি বলছেন, ‘‘প্রত্যেকটি ম্যাচই আমাদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। ভাল করার উদ্দেশ্যেই প্রত্যেকে মাঠে নামে। কখনও হয়, কখনও হয় না। এক দিনে কেউ খারাপ অথবা ভাল হয়ে যেতে পারে না। এই সিরিজ়কে আরও একটি পরীক্ষা হিসেবেই দেখছি।’’
রাহুল দ্রাবিড়ের প্রশিক্ষণে এর আগে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করেছেন। প্রথম বার কোচ হিসেবে পাচ্ছেন তাঁকে। যা নিয়ে ঋদ্ধি বেশ উৎসাহী। ‘‘জাতীয় অ্যাকাডেমিতে যখনই সাহায্য চেয়েছি, রাহুল দ্রাবিড় আমার সমস্যা মিটিয়েছেন। যে মাপের ক্রিকেটার ছিলেন, তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেই যে কেউ উপকৃত হবে।’’ ভারতীয় দলের আরও অনেকের মতো ঋদ্ধিও গুরু দ্রাবিড়ের অপেক্ষায়।