বীরেন্দ্র সহবাগ। — ফাইল চিত্র
স্টিং অপারেশন কাণ্ডে পদত্যাগ করার পর নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মার পরিবর্ত এখনও খুঁজে পাননি ভারতীয় বোর্ডের কর্তারা। শিবসুন্দর দাস এখন দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর, এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের আগে নতুন নির্বাচক আনতেই হবে বোর্ডকে। তবে কোনও বড় নামকেই এই পদে আসার জন্যে আগ্রহী হতে দেখা যাচ্ছে না। দায়িত্ব সামলাতে অনীহা, না কি কম বেতনের কারণেই প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা আগ্রহী হচ্ছেন না নির্বাচক হতে?
অতীতে নির্বাচকের দায়িত্ব সামলাতে দেখা গিয়েছে বিশ্বকাপজয়ী মোহিন্দর অমরনাথ, সন্দীপ পাটিল, দিলীপ বেঙ্গসরকরকে। কিন্তু কয়েক বছর আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন এমন কাউকেই এই কাজে আসতে দেখা যাচ্ছে না।
চেতন উত্তরাঞ্চলের প্রতিনিধি ছিলেন। সেই জায়গা থেকেই নতুন নির্বাচক নিতে হবে বোর্ডকে। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে নাম উঠে আসছে বীরেন্দ্র সহবাগের। কিন্তু বোর্ড যদি বেতন বাড়ায় তা হলেই রাজি হবেন তিনি। এই মুহূর্তে প্রধান নির্বাচক বছরে এক কোটি টাকা পান। বাকিরা পান বছরে ৯০ লাখ টাকা। এত কম বেতনে সহবাগ আসতে রাজি নন।
বোর্ডের এক সূত্র সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘প্রশাসকদের কমিটি বোর্ডের দায়িত্বে থাকার সময় কোচের পদে আবেদন করার অনুরোধ করা হয়েছিল বীরুকে। পরে সেই দায়িত্ব অনিল কুম্বলে পায়। নিজে থেকে নির্বাচক হওয়ার আবেদন বীরু করবে না। পাশাপাশি ও যে ধরনের মানুষ, তাতে এই বেতনে রাজি হবে বলেও মনে হয় না। তবে এই মুহূর্তে উত্তরাঞ্চল থেকে ওর মতো ভাল প্রার্থী আর কেউ নেই।”
বেশ কিছু বছর আগে অবসর নেওয়া বেশির ভাগ নামী ক্রিকেটারই অন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত। কেউ ধারাভাষ্য দিচ্ছেন, কেউ আইপিএলে যুক্ত, কেউ কলাম লেখেন আবার কেউ নিজের অ্যাকাডেমি চালান। নির্বাচক হলে যে টাকা পাবেন, তার থেকে অনেক বেশি আয় করেন সেই কাজগুলি থেকে। সেই প্রসঙ্গেই বোর্ডের ওই সূত্র আরও বলেছেন, “বোর্ডের এতটাও খারাপ অবস্থা নয় যে নির্বাচকদের বছরে ৪-৫ কোটি টাকা দিতে পারবে না। তবে স্বার্থের সংঘাতের মতো বিষয়গুলির জন্যেও ওরা এই কাজে অনাগ্রহী হতে পারে।”
উত্তরাঞ্চল থেকে গৌতম গম্ভীর, যুবরাজ সিংহ, হরভজন সিংহও নির্বাচক হওয়ার দাবিদার। কিন্তু অবসর নেওয়ার পর তাঁদের কারওরই এখনও পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি।
ভারতীয় ক্রিকেটে একটা কথা বার বারই বলা হয়, ক্রিকেটার বা কোচেদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন বা নিজেদের মতো অবস্থান নিতে পারেন, এমন নির্বাচক এখন আর নেই। ফলে বিরাট কোহলি, রবি শাস্ত্রী বা রাহুল দ্রাবিড়দের সামনে বসতে গেলে অনেকেই ঘাবড়ে যান। অতীতে বেঙ্গসরকর মুখ্য নির্বাচক থাকার সময় কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সুব্রহ্মণ্যম বদ্রিনাথ এবং কোহলির মধ্যে কাউকে বেছে নিতে হত। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ভারত ‘এ’ দলের কিছু ম্যাচ দেখার সুবাদে বেঙ্গসরকর এক জনকেই বেছে নিয়েছিলেন। বাকিটা ইতিহাস। গ্রেগ চ্যাপেলের মতো কোচের বিরুদ্ধেও কথা বলার ক্ষমতা ছিল ওর।”
যদি বড় নাম না থাকে, তা হলে উত্তরাঞ্চল থেকে নির্বাচক হতে পারেন প্রাক্তন উইকেটকিপার অজয় রাতরা। তিনি আগে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন বিবেক রাজদান, যিনি ধারাভাষ্যকার হিসাবে এখন বেশি পরিচিত। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দেওয়ার সুবাদে প্রচুর ম্যাচ দেখেছেন। তিনি নির্বাচক হতেও রাজি বলে জানা গিয়েছে।