তামিম ইকবাল। —ফাইল চিত্র।
তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপের দলে রাখা হয়নি। সেই সিদ্ধান্তের পরেই দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর দাদা নাফিস ইকবাল। বাংলাদেশ দলের লজিসটিক্স (যাতায়াত, হোটেল এবং অন্যান্য ব্যবস্থা) ম্যানেজার ছিলেন তিনি। মনে করা হয়েছিল, ভাই সুযোগ না পাওয়ার হতাশায় তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু দু’দিন পরে এ নিয়ে মুখ খুললেন নাফিস। জানালেন, তামিমের জন্য নয়, তিনি দল ছেড়েছিলেন অপমানে।
নাফিস যখন দল ছাড়েন, তখন বাংলাদেশ বনাম নিউ জ়িল্যান্ড তৃতীয় এক দিনের ম্যাচ চলছে। ম্যাচের মাঝখানে দল থেকে তাঁর বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাফিস বলেন, “তৃতীয় এক দিনের ম্যাচ চলাকালীন সাজঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। আবেগের বশে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। ম্যাচ চলাকালীন আমাকে বলে দেওয়া হয়েছিল, বিশ্বকাপের দলে রাখা হবে না। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও ঠিক এটাই হয়েছিল। বার বার একই জিনিস ঘটায় নিজের আবেগ সামলাতে পারিনি। আমি মানুষ, আমারও আবেগ আছে।”
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল বাছাইয়ের পর তামিমকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তামিমকে বাদ দিয়েই দলগঠন করে বাংলাদেশ। তিনি নিজে জানান যে, এক কর্তার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তামিমকে প্রথম দিকে খেলানো হবে না বলে জানান তিনি। ওপেন না করিয়ে মিডল অর্ডারে খেলানোর কথাও বলা হয় তামিমকে। এমন অবস্থায় তামিম বিশ্বকাপে খেলতে যেতে রাজি হননি। তিনি নিজেই বলেন, তাঁকে বাদ দিয়ে দল গড়তে। তামিমের বাদ পড়ার পরেই দল ছেড়েছিলেন তাঁর দাদা। সেই কারণেই মনে করা হয় তামিমকে বাদ দেওয়ার কারণেই তিনি দল ছেড়েছেন। কিন্তু নাফিস বলেন, “আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে ইস্তফা দিইনি। আমার দল ছাড়ার সঙ্গে তামিমের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ছ-সাত ঘণ্টা পর বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করা হয়। সব নিয়ম মেনেই দল ছেড়েছিলাম। কোচ এবং বোর্ডের কর্তাদের নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাই। আমার কোনও কাজও বাকি ছিল না। সমস্ত কাগজপত্র সই করে বেরিয়েছি। এমনকি বিশ্বকাপের জন্য যে টাকা আমার কাছে ছিল, সেটাও ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম। আমার একটু হলেও সম্মান প্রাপ্য। যখন খেলতাম, তখনও সৎ ভাবে কাজ করতাম। এখনও সেই ভাবেই নিজের দায়িত্ব পালন করি। আগামী দিনেও করব।”
তামিম দল থেকে বাদ যাওয়ার পর অধিনায়ক শাকিব আল হাসানের একটি মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক হয়। শাকিব বলেন, “রোহিত শর্মা শুরুতে সাত নম্বরে ব্যাট করতেন। সেখান থেকে ওপেনার হয়ে এখন ১০ হাজার রানও করে ফেলেছে। তাই কখনও তামিমকে যদি তিন বা চারে খেলতেও হয়, সেটা কি বিরাট সমস্যা? পুরোপুরি বাচ্চাদের মতো আচরণ। যেন ব্যাট আমার, আমিই খেলব। বাকি কেউ খেলতে পারবে না। এক জন ক্রিকেটারকে দলের স্বার্থে যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে হতে পারে। দল আগে। আপনি আগে ১০০ করেছেন না ২০০ সেটা কেউ মাথায় রাখবে না। ব্যক্তিগত কীর্তি নিয়ে কী করবেন?”