অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা হঠাৎ শ্রীলঙ্কার সমর্থক। ছবি: আইসিসি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌঁছতে অস্ট্রেলিয়া শিবির তাকিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কার দিকে। দাসুন শনাকার দল ইংল্যান্ডকে হারালেই এক মাত্র শেষ চারে যেতে পারবে বিশ্বকাপের আয়োজকরা। গ্রুপ পর্বের শেষ পর্যায়ে এসে অস্ট্রেলিয়ার শ্রীলঙ্কা নির্ভরতার কথা মেনে নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সম্পর্ক দীর্ঘ দিন মধুর নয়। মুথাইয়া মুরলিথরনের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলীয়রা বল ছোড়ার অভিযোগ তোলার পর থেকে দু’দেশের ক্রিকেট সম্পর্ক তিক্ত। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কায় খেলতে যায়নি মার্ক টেলরের দল। অথচ সেই শ্রীলঙ্কার কাছেই এখন কার্যত ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে বিশ্বকাপের আয়োজকদের। যদিও তীব্র আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে গত জুন মাসে প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথরা শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ায় পুরনো ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ পড়েছে।
শুক্রবার আফগানিস্তানকে মাত্র ৪ রানে হারিয়ে অঙ্ক জটিল করে ফেলেছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। এই পরিস্থিতিতে ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘‘বড় ব্যবধানে জেতার লক্ষ্য নিয়ে আমরা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নেমেছিলাম। ১২ ওভার পর্যন্ত ঠিক মতোই এগোচ্ছিলাম আমরা। ভাল রান তোলার জন্য সব চেষ্টা করেছি আমরা। কিন্তু ওরা শেষ চার ওভার দারুণ বল করেছে। ওরা ওদের পরিকল্পনা দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছে। তাতে আমাদের কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল।’’
অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডারের আশা, শ্রীলঙ্কা বড় ব্যবধানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে তাঁদের সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ করে দেবে। শনাকাদের সামনে সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও জস বাটলারদের রয়েছে। শনিবারের ম্যাচ জিতলেই প্রতিযোগিতার শেষ চারে জায়গা করে নেবে তারা। এই তথ্য অজানা নয় অস্ট্রেলিয়া শিবিরের। ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিকে আমরা সকলে তাকিয়ে রয়েছি। এই পরিস্থিতির দায় আমাদেরই। নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়ুল মেরেছি। আশা করব শ্রীলঙ্কা আমাদের কাজটা করে দেবে।’’
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জিতলেও মহম্মদ নবি, রশিদ খানদের প্রশংসা করেছেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান সত্যিই দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। ওদের ব্যাটাররা ভাল শট নিয়েছে। শুরুতেই আমাদের চাপে ফেলে দিয়েছিল। পাওয়ার প্লের পর আমরা ঘুরে দাঁড়ালেও শেষ দিকে ওরা ভাল বল করেছে।’’ প্রশংসা করেছেন রশিদের আগ্রাসী ইনিংসের। ম্যাক্সওয়েল মেনে নিয়েছেন, রশিদের ইনিংস তাঁদের মধ্যে হারের আশঙ্কা তৈরি করেছিল।
২২ গজে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার অ্যাসেজ সিরিজ়ের লড়াই ক্রিকেট ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে দশকের পর দশক। এমন প্রতিপক্ষকে টপকে শেষ চারে জায়গা করে নিতে ফিঞ্চরা শনিবার শ্রীলঙ্কার সমর্থক। হয়তো অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২ কোটি ৫৭ লাখ নাগরিকও।