নায়ক: আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মেজাজে রোহিত। ছবি বিসিসিআই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠার অভিযানে মগ্ন থাকা ভারতীয় দলের চাহিদা নিশ্চয়ই মরুশহরের দীপাবলির রোশনাই কিছুটা পূরণ করবে। গ্রুপে তিনটি কঠিন ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে ভারতের। যদিও ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে কোনও দলকেই হাল্কা ভাবে নেওয়া যায় না, তবু বলতে হবে, নামিবিয়া বা স্কটল্যান্ডের মতো অনভিজ্ঞ দলকে চাপে ফেলাটা বোধ হয় তুলনামূলক ভাবে সহজ।
আজ, শুক্রবার স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে সঠিক দল নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এটা জানা কথা যে ভাল স্পিন আক্রমণের বিরুদ্ধে খেলার সে রকম অভিজ্ঞতা নেই স্কটল্যান্ডের। তাই স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন স্পিনার খেলাতে পারে ভারত। এদের মধ্যে এক জন লেগস্পিনার হওয়া জরুরি। এক জন ভাল লেগস্পিনার পাওয়া সব সময়ই কঠিন। তার পরে মাথায় রাখতে হবে যে, লেগস্পিনাররা হাওয়ায় খুব আস্তে বলটা ছাড়ে। যে কারণে পিচে পড়ার পরে বলে গতি সে রকম থাকে না। যেটা ব্যাটারদের কাছে সমস্যা হতে পারে।
আরও একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। এক জন বোলার যখন ব্যাটারদের চোখের উচ্চতার ওপর থেকে বলটা ছাড়ে, তখন সেরা ব্যাটারের পক্ষেও সেই বলের লেংথটা বুঝতে একটু সময় লাগে। একেবারে স্থির রাখার বদলে মাথাটা প্রথমে তুলে বলটা দেখতে হয় ব্যাটারকে। তাই যে কোনও ভাল লেগস্পিনার উইকেটের সঙ্গে ডট বলও (যে বলে রান হয় না) করতে পারে। যা ২০ ওভারের খেলায় একটা মহামূল্যবান বস্তু।
এ বার আসি ব্যাটারদের কথায়। ভারতীয় ব্যাটারদের শুরু থেকেই যাবতীয় জড়তা ঝেড়ে ফেলে আক্রমণে যেতে হবে। পাকিস্তান এবং নিউজ়িল্যান্ডের কাছে বড় হার ভারতীয় দলের নেট রানরেট অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। যে কারণে এখন বড় জয়ের দিকে নজর দিতেই হবে ভারতকে।
আফগানিস্তান বোলিং আক্রমণকে ভারতীয় ব্যাটাররা যে ভাবে ছিন্নভিন্ন করে দিল, তা দেখতে দারুণ লেগেছে। যখন একটা দল ১৮০ রানের উপরে করে দেয়, তখন বোলাররা অনেকটা নিশ্চিন্তে আক্রমণে যেতে পারে। তখন শিশিরে বল ভিজে গেলেও বোলাররা অতটা চিন্তিত হয় না। কারণ ওরা জানে, বলটা ঠিকমতো গ্রিপ করতে না পারলেও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে লাইন-লেংথ ঠিক রেখে ব্যাটারদের চাপে রাখতে পারবে। ভিজে বলটা অত সমস্যা করবে না তখন।
আফগানিস্তান ম্যাচের মতো স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধেও প্রথমে ব্যাট করা উচিত ভারতের। এবং একই রকম আগ্রাসনের সঙ্গে। আরও একটা বড় জয় যদি ভারত তুলে নিতে পারে, তা হলে রবিবারের আফগানিস্তান-নিউজ়িল্যান্ড ম্যাচে দুটো দলকেই চাপে রাখা যাবে।
ভারত সেমিফাইনালে যাবে কি না, তা জানা নেই। কিন্তু বাকি ম্যাচগুলোয় ভারতকে মরিয়া হয়ে ঝাঁপাতেই হবে। তা হলে অন্তত প্রথম দিকের দুটো ম্যাচে হারের হতাশা কিছুটা ভোলা যাবে। এই খেলায় আগে থেকে কিছুই বলা যায় না। কিন্তু প্রথম দুটো ম্যাচে ভারত যে ভাবে হেরেছে, তা হতাশ করেছে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। ওরা চায়, তাদের নায়করা যেন হারলেও লড়াই করে হারে। বিদায় নিলেও যেন সেরাটা দিয়ে যায় মাঠে।
বল এখন পুরোপুরি ভারতেরই কোর্টে। (টিসিএম)