আইপিএল-ই কোহলী, রোহিতদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী। ফাইল ছবি
নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পরেই ভারতীয় দলের বোলার যশপ্রীত বুমরা দায়ী করেছিলেন আইপিএল-কে। জানিয়েছিলেন, আইপিএল-সহ টানা জৈব দুর্গে থেকে ক্রিকেট খেলার ধকল তাঁদের উপরে পড়েছে। অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই তাঁর দাবিকে সমর্থন করেছেন।
পরিসংখ্যান বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, এই প্রথম নয়, এর আগে বার বার আইপিএল-এর কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। ২০০৭-এ যে বার ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখনও আইপিএল শুরুই হয়নি। কিন্তু ২০০৯ থেকেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। এর আগেও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েছে ভারত। তার পিছনে পরোক্ষে আইপিএল-এর হাত ছিল। তখন কেউ সে কথা স্বীকার না করলেও ধীরে ধীরে ভারতীয় ক্রিকেটাররা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, এ বার নিয়ে অন্তত চারটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আইপিএল হয়েছে এবং সেখানে ভারতের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে।
২০০৯: লোকসভা নির্বাচনের কারণে দ্বিতীয় মরসুমের আইপিএল পুরোটাই হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২৪ মে পর্যন্ত আইপিএল খেলার পর বিশ্বকাপ শুরু হয় ৫ জুন থেকে। দু’মাস দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিকেট খেলে এবং যাতায়াতের কারণে ক্রিকেটাররা এমনিতেই ক্লান্ত ছিলেন। ফলত, সুপার এইটের তিনটি ম্যাচেই হেরে যায় ভারত। তৎকালীন কোচ গ্যারি কার্স্টেন সরাসরি আইপিএল-কে দায়ী করেছিলেন।
২০১০: সে বারও অবস্থা একই হয়েছিল। ১২ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএল চলেছিল। জয়ী হয় চেন্নাই সুপার কিংস। এরপরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিশ্বকাপ খেলতে যায় ভারত। কিন্তু সুপার এইটের দু’টি ম্যাচে হারে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিবেশের সঙ্গে মানাতে পারেনি ভারত। প্রাথমিক পর্বে গ্রুপের দু’টি ম্যাচেই জিতলেও সুপার এইটে গ্রুপের প্রতিটি ম্যাচেই হারে তারা। গ্রুপে সবার নীচে শেষ করে।
২০১২: প্রথম দু’বছরের মতো এ বার সরাসরি আইপিএল-কে ব্যর্থতার পিছনে দোষ দেওয়া যাবে না। কারণ আইপিএল শেষ হওয়ার দু’মাস পরে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। কিন্তু আইপিএল-এ যে পরিমাণ প্রচেষ্টা দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা, সেটা দেখা যায়নি বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে। এই প্রতিযোগিতা থেকে ভারতের বিদায় হয় কিছুটা ভাগ্যের কারণেই। সুপার এইটে দু’টি ম্যাচে জিতলেও নেট রান রেটে বিদায় নেয় ভারত।
২০২১: এ বারের মতো খারাপ অবস্থা আগে খুব একটা আসেনি। প্রথম বার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে হারতে হয়েছে ভারতকে। তারপরে নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের কাছে হেরে প্রতিযোগিতা থেকেই ছিটকে গিয়েছে ভারত। তুলনায় অনেক সহজ গ্রুপে থাকলেও আইপিএল খেলে ধ্বস্ত ক্রিকেটাররা নিজের সেরাটা এখানে দিতে পারেননি। তা-ও অর্ধেক আইপিএল খেলতে হয়েছে আমিরশাহিতে এসে। কারণ, প্রথম ভাগ তাঁরা খেলেছিলেন ভারতেই।