মহম্মদ শামি। — ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপ শুরু হতে আর তিন মাসও বাকি নেই। তার আগেই বিপদে পড়তে পারেন মহম্মদ শামি। তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা-সহ একাধিক অভিযোগ করেছিলেন স্ত্রী হাসিন জাহান। সেই সমস্যা আগামী এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে ফেলার জন্যে শহরের আলিপুর সেশন কোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদি তার মধ্যে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব না হয়, তা হলে স্থগিতাদেশের ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে আলিপুর সেশন কোর্ট গ্রেফতারির বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ তুলে নিতে পারে এবং শামি বিশ্বকাপের আগেই গ্রেফতার হতে পারেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ। সেই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি পিভি নরসীমা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১৮-র ৮ মার্চ যাদবপুর থানায় প্রথম শামির বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় অভিযোগ করেন হাসিন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি ওঠে আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে। তিনি ২০১৯-এর ২৯ অগস্ট শামিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
শামি পাল্টা আবেদন করেন নিম্ন আদালতের বিচারকের কাছে। তিনি ২০১৯-এর ২ নভেম্বর পর্যন্ত শামির গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ দেন। তার পর চার বছরে সেই মামলা প্রায় কিছুই এগোয়নি। কোনও শুনানিও হয়নি। দ্রুততার সঙ্গে যাতে মামলাটি এগোনো হয়, সে বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন হাসিন। কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে হাসিনকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
হাসিন এর পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানেই বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তাদের এই নির্দেশের এক মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে হবে আলিপুর সেশন কোর্টকে। তা সম্ভব না হলে স্থগিতাদেশ সংশোধন করতে হবে বা তুলে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, শামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ করেছেন হাসিন। তাঁর দাবি, শামি পণ দেওয়ার জন্যে জোরাজুরি করতেন। অভিযোগ, একাধিক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। ভারতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক সফরে যাওয়ার সময় হোটেলের ঘরেই যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতেন বলেও অভিযোগ। সেই যৌনকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্যে নাকি একটি আলাদা মোবাইলও ব্যবহার করতেন। সেই মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে লালবাজার। হাসিনের আরও দাবি, শামি কখনওই নিজে আদালতে হাজির হননি এবং মামলায় জামিনও চাননি। এই মামলার ভিত্তিতেই কলকাতার একটি আদালত গত জানুয়ারি মাসে শামিকে নির্দেশ দেয়, প্রতি মাসে হাসিনকে ৫০ হাজার টাকা করে খোরপোশ দিতে হবে।