প্রত্যয়ী: মাঠে নেমে একশো শতাংশ দিয়ে তৈরি শাদাবরা। ফাইল চিত্র
এক দিকে মাঠে চলছে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের দ্বৈরথ। অন্য দিকে, দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করছেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় পাক অলরাউন্ডার শাদাব খান বলেছেন, তিনি এশিয়া কাপ জিতে দেশের বন্যা বিধ্বস্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান।
আজ, রবিবার এশিয়া কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান। তার আগে পাক বোর্ডের ওয়েবসাইটে এই লেগস্পিনার-অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হারার পরেও তাদের দল ভেঙে পড়েনি। এতেই পাক দলের মানসিকতাটা বোঝা গিয়েছিল। শাদাবের কথায়, ‘‘অভূতপূর্ব এই দুর্যোগের কারণে দেশের এক তৃতীয়াংশ এখন জলের তলায়। আমরা এখন দেশে নেই। দূর থেকে দেশের মানুষের যন্ত্রণা দেখা আরও কষ্টকর। আমরা এই এশিয়া কাপটা জিতে দেশের বন্যা বিধ্বস্ত মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনতে চাই।’’
শাদাব আরও বলেন, ‘‘ভারতের কাছে আমরা গ্রুপের প্রথম ম্যাচটা হেরে যাই। কিন্তু তার পরেও আমাদের বিশ্বাস ছিল, ঠিক ফিরে আসতে পারব। আমরা ফিরেও এসেছিলাম।’’ যোগ করেন, ‘‘হংকংয়ের বিরুদ্ধে মহম্মদ রিজ়ওয়ান দারুণ ব্যাটিং করে। বোলাররাও অসাধারণ খেলেছিল। এর পরে ভারতের বিরুদ্ধে সুপার ফোরে জয় আসে মহম্মদ নওয়াজ়ের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের দৌলতে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আমি হয়তো ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছিলাম, কিন্তু শেষ ওভারে নাসিম শাহের ওই দু’টো ছয় কে ভুলবে!’’
তবে শাদাব মনে করিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানকে তখনই একটা চ্যাম্পিয়ন দল বলা যাবে, যদি তারা ট্রফি জিততে পারে। পাকিস্তানের সহ-অধিনায়কের সাফ কথা, ‘‘আমরা খুবই ভাল একটা দল। কিন্তু তখনই চ্যাম্পিয়ন দল বলা যাবে, যদি এই এশিয়া কাপ এবং তার পরে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ় জিততে পারি।’’ চ্যাম্পিয়ন দল হতে গেলে কী পথে চলতে হবে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন শাদাব। বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন দলরা কিন্তু যে কোনও পরিস্থিতি চাপ সামলাতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ম্যাচ ঘোরাতে পারে। আর রবিবারের ফাইনালে আমরা সেটাই করে দেখাতে চাই।’’
পাকিস্তান কোচ সাকলিন মুস্তাকের মুখেও শোনা গিয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের সংজ্ঞা কী হওয়া উচিত। প্রাক্তন পাক অফস্পিনার বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে টসের কথা মাথায় রাখলে চলবে না।’’ এশিয়া কাপে দেখা গিয়েছে, যে দল টস জিতেছে, তারাই প্রায় সব ক্ষেত্রে ম্যাচ জিতেছে। পরে ব্যাটিং করে বিপক্ষের তোলা রান টপকে যাচ্ছে। যে কারণে বলা হচ্ছে, টস যার ম্যাচ তার।
কিন্তু সাকলিন এই প্রবাদ মানতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘যদি চ্যাম্পিয়ন হতে চাও, তা হলে টসের কথা ভুলে যাও। টস নিয়ে আলোচনা করারই দরকার নেই। তোমাকে প্রথম ইনিংসেও ভাল খেলতে হবে, দ্বিতীয় ইনিংসেও। আমরা টস নিয়ে কথা বলি না, ভাবিও না।’’
আগের রাতে শ্রীলঙ্কার কাছে পাঁচ উইকেটে হারার পরেও সাকলিন মনে করেন, ফাইনালে ভাল কিছু করার ক্ষমতা রাখেন তাঁরা। নিজেদের দল নিয়ে সাকলিন বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের বদল দেখে বাইরে থেকে হয়তো অনেকে ভাববে, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। আমরা যে দলই নামাই, ম্যাচ জেতার জন্যই নামাই। এই পর্যায়ে পরীক্ষা করা যায় না। আমরা পাকিস্তানের সম্মান নিয়ে খেলতে পারি না।’’