মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ভারতীয় দলের ব্যর্থতার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) দুষলেন রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচের অভিযোগ, বিসিসিআইয়ের অপেশাদারিত্বের খেসারত দিতে হয়েছে ভারতীয় দলকে।
মহম্মদ শামির ফিটনেস নিয়ে বিসিসিআইয়ের লুকোচুরিতে ক্ষুব্ধ শাস্ত্রী। তাঁর প্রথম প্রশ্ন, এত দিন সময় পেয়েও কেন শামিকে ফিট করে তোলা গেল না? তাঁর দ্বিতীয় প্রশ্ন, শামির ফিটনেস নিয়ে কেন স্পষ্ট করে কিছু বলা হল না? কেন গোটা অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়ই শামির খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করে রাখা হল? শাস্ত্রীর মতে, শামিকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। ভারতীয় দলের দায়িত্বে থাকলে ফিট না-হওয়া শামিকে নিয়েই অস্ট্রেলিয়ায় যেতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় শামির অভাব অনুভূত হয়েছে। এটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না। সত্যি বলতে, আমি বেশ অবাক হয়েছি। শামিকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে নানা খবর বেরোচ্ছিল। অথচ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রকাশ্যে কিছু জানাচ্ছিল না। জানি না জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে এত দিন ধরে কী করছে শামি? ঠিক কী হয়েছে ওর? কত দিন লাগবে ওর সুস্থ হতে? বোর্ড কিছুই ঠিকঠাক জানায়নি। শামির মতো বোলারকে আমি অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাতাম।’’
ফিট না-হওয়া শামিকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে গিয়ে কী করতেন? শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘শামিকে দলের সঙ্গে রাখতাম। দলের সঙ্গে থেকেই ফিট হয়ে উঠতে পারত। ভারতীয় দলের ফিজিয়োর অধীনে থাকত। দরকার পড়লে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ফিজিয়োদের দেখাতে পারতাম। বিশ্বের সেরা ফিজিয়োদের অনেকে অস্ট্রেলীয়। চোখের সামনে থাকত। তাতে পরিকল্পনা করতে অনেক সুবিধা হত।’’ শাস্ত্রী আরও বলেছেন, ‘‘সিরিজ়ের মাঝপথে অন্তত শামিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো যেত। সত্যি খুব অবাক হয়েছি। দলের সঙ্গে থাকলে হয়তো শেষ টেস্টটা খেলতে পারত। নীতীশ কুমার রেড্ডিকে দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হত না। এটা বোঝা উচিত, শামি পুরো ফিট না থাকলেও দিনে কয়েকটা ওভার বল করতে পারে। দলে তো আরও বোলার আছে। শামিকে বাড়তি চাপ না দিয়েও খেলানো যেত। ওর কয়েকটা ওভারই পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে।’’
সিরিজ় শুরু আগে শাস্ত্রীর আশঙ্কা ছিল ১-৩ ব্যবধানে হারতে পারে ভারত। ঠিক সেটাই হয়েছে। ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচের বক্তব্য, ‘‘রোহিত শর্মার দলকে পিছিয়ে রাখার একটাই কারণ ছিল। সেটা হল শামির অনুপস্থিতি। জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজের সঙ্গে শামি থাকলে আমরা অন্য রকম ফল দেখতাম। অস্ট্রেলিয়ার লড়াই এত সহজ হত না।’’
শাস্ত্রী মনে করেন, শামির মাঠে থাকাও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে পারত। তিনি বলেছেন, ‘‘শামির অভিজ্ঞতা সাহায্য করতে পারত দলের অন্য বোলারদের। মেলবোর্নের আগে পর্যন্ত ফল ১-১ ছিল। প্যাট কামিন্সও কিন্তু একা জেতাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াকে। স্টক বোল্যান্ডের মতো অভিজ্ঞ বোলারের সাহায্য পেয়েছে। বুমরাহের পাশে শামি থাকলে লড়াই আরও উপভোগ্য হত।’’