রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং যশপ্রীত বুমরা। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দলের একাধিক ক্রিকেটারের চোটের কথা জানা গিয়েছে। অনুশীলনে কখনও বিরাট কোহলি, কখনও লোকেশ রাহুল চোট পেয়েছেন। শুভমন গিলেরও চোট। এমন অবস্থায় প্রথম একাদশ বেছে নেওয়া বেশ কঠিন কাজ গৌতম গম্ভীরদের কাছে। রিজ়ার্ভ দল থেকে কাউকে নিতে হবে মূল দলে? কেমন হতে পারে ভারতের প্রথম একাদশ?
যশস্বী জয়সওয়াল: ওপেনার হিসাবে যশস্বীর জায়গা পাকা। রোহিত শর্মা না থাকায় তিনিই দলের প্রধান ওপেনার। বাঁহাতি যশস্বীর উপর ভরসা করে থাকবে দল। তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনভিজ্ঞ ওপেনার কত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারবেন, সে দিকেও নজর থাকবে সমর্থকদের।
লোকেশ রাহুল: রোহিত না থাকায় অনেকেই মনে করেছিলেন অভিমন্যু ঈশ্বরণের অভিষেক হবে। কিন্তু তড়িঘড়ি রাহুলকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁকে ওপেন করতে নামিয়ে দেওয়ায় অবাক হন অনেকেই। রাহুল এক সময় রোহিতের সঙ্গে টেস্টে ওপেন করেছেন। কিন্তু পরে তাঁকে মিডল অর্ডারে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই রাহুলকে আবার ওপেনার হিসাবে সুযোগ দিতে চাইছে দল। অনভিজ্ঞ দুই ওপেনারকে না খেলিয়ে অভিজ্ঞ রাহুলের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছে দল।
শুভমন গিল: তাঁর আঙুলে চোট রয়েছে। যদিও দল মনে করছে তিনি খেলতে পারবেন। বুধবার বোলিং কোচ মর্নি মর্কেল তেমনটাই জানিয়েছেন। যদি তিনি খেলতে পারেন তা হলে তিন নম্বরে তাঁর জায়গা পাকা। সেটা না হলে রিজ়ার্ভে থাকা দেবদত্ত পাড়িক্কলকে মূল দলে নেওয়া হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিন নম্বরে খেলতে অভ্যস্ত তিনি। দেশের জার্সিতেও সেই দায়িত্ব পেতে পারেন পাড়িক্কল।
বিরাট কোহলি: অনুশীলনে চোট পেয়েছিলেন বলে জানা গেলেও সুস্থ আছেন বিরাট। অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁর ব্যাট থেকে রান চাইছেন সমর্থকেরা। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বেশ কিছু বড় ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ বারেও শতরানের অপেক্ষায় সকলে। তবে বিরাটের সাম্প্রতিক ফর্ম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনও ম্যাচেই রান পাচ্ছেন না তিনি।
ঋষভ পন্থ: প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁকে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতীয় পেসারেরা বুঝিয়ে দিয়েছেন পন্থের শর্ট বলের বিরুদ্ধে দুর্বলতা রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে সেই দুর্বলতা চিন্তার কারণ হতে পারে। তবে দলে পন্থ থাকা মানে পাল্টা আক্রমণের সুযোগও থাকা।
ধ্রুব জুরেল: উইকেটরক্ষক হিসাবে পন্থ থাকলেও খেলতে পারেন জুরেল। ভারত এ দলের হয়ে একমাত্র তিনিই রান পেয়েছিলেন। ফলে ভারতীয় দলের হয়েও খেলতে দেখা যেতে পারে তাঁকে। সরফরাজ় খান শেষ কয়েকটি ম্যাচে রান পাননি। সেই জায়গায় জুরেলকে খেলানো হতে পারে।
নীতীশ কুমার রেড্ডি: অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পেসার অলরাউন্ডার খুব জরুরি। হার্দিক পাণ্ড্যকে এখন আর টেস্টের জন্য ভাবা হয় না। জায়গা হয়নি শার্দূল ঠাকুরেরও। বরং আইপিএলে ভাল খেলা অলরাউন্ডার নীতীশকে পছন্দ কোচ গম্ভীরের। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক হতে পারে তাঁর। তিনি দলে থাকলে লোয়ার অর্ডারে এক জন বাড়তি ব্যাটার পাওয়া যাবে, সেই সঙ্গে চতুর্থ পেসারের দায়িত্বও সামলাতে পারবেন।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন: এক জন স্পিনার খেলাতে পারে ভারত। সেই জায়গা নিতে পারেন অশ্বিন। অস্ট্রেলিয়া দলে বেশ কিছু বাঁহাতি ব্যাটার রয়েছেন। সেই কারণে অশ্বিনকে দলে রাখতে পারে ভারত। যদিও নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাল খেলা ওয়াশিংটন সুন্দরও দলে রয়েছে। তবে অভিজ্ঞ অশ্বিনকে বসিয়ে রাখার মতো বড় সিদ্ধান্ত হয়তো ভারত নেবে না।
আকাশ দীপ: বাংলার পেসার নিয়মিত উইকেট নিচ্ছেন। ফর্মে রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁকে হয়তো বসানো হবে না। যদিও শোনা যাচ্ছে হর্ষিত রানার অভিষেক হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বসতে হতে পারে আকাশকে। কিন্তু ঘরের মাঠে ভাল খেলা আকাশকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসাবে ভারত?
যশপ্রীত বুমরা: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে অধিনায়ক বুমরা। তিনিই টস করবেন। রোহিত বোর্ডের কাছে ছুটি নিয়েছেন। তাঁর দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের কারণে দেশেই রয়েছেন তিনি। তাই শুধু ভারতের পেস আক্রমণ নয়, দলকেও নেতৃত্ব দিতে হবে বুমরাকে।
মহম্মদ সিরাজ: আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুটাই হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। আবার সেই দেশে সিরাজ। ৩১টি টেস্ট খেলা সেই পেসার এখন দলের অন্যতম অভিজ্ঞ সদস্য। গতি এবং বাউন্সের সাহায্যে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের জব্দ করতে সিরাজের উপরে ভরসা রাখতেই পারে ভারত।