IPL 2025

কোহলির অপ্রাপ্তিই বেঙ্গালুরুর শক্তি, ১৭ বছরের গ্লানি ঢাকতে পারবে আঠারোর স্পর্ধা?

কখনও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন না হয়েও ব্র্যান্ড হিসাবে বেঙ্গালুরু পাল্লা দিতে পারে মুম্বই বা চেন্নাইয়ের সঙ্গে। আরসিবির সব আছে। টাকা, গ্ল্যামার, জনপ্রিয়তা, তারকা। নেই শুধু ট্রফি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫৯
Share:
picture of virat kohli

বিরাট কোহলি। ছবি: এক্স (টুইটার)।

তিন বার ফাইনালে উঠেও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)। রাহুল দ্রাবিড়, কেভিন পিটারসেন, অনিল কুম্বলে, ড্যানিয়েল ভেট্টরি, বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডুপ্লেসির মতো ক্রিকেটারেরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবু টানা ১৭ বছর ট্রফিহীন বেঙ্গালুরু।

Advertisement

আইপিএলের অন্যতম কেতাদুরস্ত দল আরসিবি। বিজয় মাল্যের হাতে তৈরি এই দল প্রথম থেকেই একটু অন্য রকম। বেঙ্গালুরু সব সময় চেষ্টা করেছে ক্রিকেটের বড় নামদের নিয়ে দল সাজাতে। দলের মতোই আকর্ষণীয় জার্সি। তেমনই ঝাঁ-চকচকে মাঠের বাইরের ব্যাপারস্যাপারও। তবু চায়ের কাপ আর ঠোঁটের দূরত্ব ঘোচেনি। আইপিএলের একমাত্র দল যারা কখনও চ্যাম্পিয়ন না হয়েও ব্র্যান্ড হিসাবে পাল্লা দিতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বা চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে। আরসিবির সব আছে। আর্থিক সামর্থ্য, গ্ল্যামার, জনপ্রিয়তা, দেশের সব প্রান্তে অসংখ্য সমর্থক। নেই শুধু ট্রফি।

গত এক দশক ধরে দলটার সব কিছুর ভরকেন্দ্র কোহলি। তিনিই দলটার মুখ। তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত হয় সমর্থকদের আশা, আকাঙ্ক্ষা। আইপিএলের প্রথম বছর ২০০৮ সাল থেকে বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলছেন কোহলি। ভারতীয় এবং বিশ্বক্রিকেটের মহারথী হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বেঙ্গালুরুরও প্রধান চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছেন তিনি। কোহলি কখনও দল ছাড়ার কথা ভাবেননি। আরসিবি কর্তৃপক্ষও কখনও তাঁকে ছাড়া দল গড়ার কথা ভাবেননি। সমর্থকদের মতো তাঁদেরও কোহলির উপর অগাধ আস্থা, ভরসা, নির্ভরতা। আইপিএলের এ বার ১৮ বছর। কোহলির জার্সি নম্বরও ১৮। ক্রিকেটপ্রমীদের একাংশ নম্বরের এই মিলে আরসিবির ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন। এত বছরের ব্যর্থতার পরও তাঁদের বিশ্বাস কোহলিই ট্রফি দেবেন। পারলে তিনিই পারবেন। রজত পাটিদার অধিনায়ক ঠিকই। তবু কোহলিই ভরসা।

Advertisement

এ বার আইপিএলে বেঙ্গালুরুর প্রথম প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স। শনিবার ইডেন গার্ডেন্সের তিন বারের চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে বেঙ্গালুরু। কেকেআরের প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক এখন বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং কোচ। মধ্যপ্রদেশের কোচ থাকার সময় পাটিদারকে নিজের হাতে তৈরি করেছেন কেকেআর কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। এই দুই সমীকরণ বেঙ্গালুরুর পক্ষে যেতে পারে। আবার বিপক্ষেও যেতে পারে। বিশেষ করে অধিনায়ক পাটিদারের দুর্বলতা হাতের তালুর মতো চেনেন কেকেআর কোচ। ইডেনের ২২ গজ ব্যাটিং সহায়ক হবে সন্দেহ নেই। তাতেও নিশ্চিত থাকার উপায় নেই। কেকেআরে সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, বরুণ চক্রবর্তী, হর্ষিত রানাদের কাছে পরিচিত ইডেনের পিচ। এই পিচে তাঁদের সাফল্য কম নয়। কেকেআরের বোলিং আক্রমণকে ভোঁতা করার সেরা অস্ত্র রয়েছে বেঙ্গালুরুর হাতে। সেই অস্ত্রের নামও কোহলি। বিশ্বের সব পিচে, সব বোলারের বিরুদ্ধে সফল তিনি।

মহম্মদ সিরাজ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের মতো ক্রিকেটারদের এ বার রাখেনি বেঙ্গালুরু। তারা দলে নিয়েছেন ফিল সল্ট, জস হেজ়লউড, লিয়াম লিভিংস্টোন, জ্যাকব বেথেল, ভুবনেশ্বর কুমার, ক্রুণাল পাণ্ড্যের মতো ক্রিকেটারকে। ভারসাম্য যুক্ত দল তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের হাতে রয়েছে কেকেআরের প্রাক্তন রহস্য স্পিনার সুযশ শর্মাও। কেকেআরকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তৈরি তারা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে দু’দলের মধ্যে। ব্যাট-বলের তীব্র লড়াই দেখতে পারে ইডেনের গ্যালারি। তবু ২২ জনের (ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ধরে ২৪) লড়াইয়ে আসল পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন কোহলিই।

কোহলি এক দিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছেন, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছেন। এখনও জেতা হয়নি আইপিএল ট্রফি। তাঁর ক্রিকেটজীবনের এই অপ্রাপ্তিই ঘুচিয়ে দিতে পারে বেঙ্গালুরুর চায়ের কাপ আর ঠোঁটের দূরত্ব। আইপিএলের ১৮তম মরসুম আর এক ১৮র স্পর্ধা দেখতে দেখতে পারে। মুছে যেতে পারে গত ১৭ বছরের ২২ গজের গ্লানি। পূর্ণ হতে পারে আরসিবির গ্ল্যামারের ঝুলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement