প্যাট কামিন্স। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ঢাকে কাঠি পড়ে গেল কলকাতায়। রবিবার দীপাবলির রাতে কলকাতায় পৌঁছে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া দল।
রবিবার বিকেলে কলকাতায় পা রাখেন কুইন্টন ডি’ককরা। সন্ধে ৭টার বিমানে আসেন প্যাট কামিন্সরা। এ দিন হোটেলে ফিরেই দীপাবলি উদ্যাপন করলেন কেশব মহারাজরা। সামান্য কিছু আতসবাজির ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। তা জ্বালিয়েই আলোর উৎসবে মেতে ওঠেন সকলে। শনিবার ইংল্যান্ড-পাকিস্তান ম্যাচ কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি দু’দলের শেষ চারের যাত্রায়। ইডেন তাদের স্বাগত জানাতে চলেছে ১৬ নভেম্বর। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে।
অনলাইনে ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে শেষ চারের ম্যাচের টিকিট। শুরু হয়ে গিয়েছে কালোবাজারিও। আপাতত বাজারে ৯০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। যা দু’দিনের মধ্যে বাড়তে পারে। কারণ, সেমিফাইনালে ভারতের ম্যাচ না পড়লেও ইডেন ভর্তি হওয়ার অনুমান করছেন অনেকেই। পাক-ইংল্যান্ড নিয়মরক্ষার ম্যাচেই ৩৮ হাজার দর্শক হয়েছিল ইডেনে। ফলে সেমিফাইনালে যে মাঠ ভরবে, সেটাই স্বাভাবিক। বিশ্বের দুই অন্যতম শক্তিশালী দলের লড়াই দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন শহরের ক্রিকেটপ্রেমীরা। যদিও সমস্যা একটাই। ১৬ নভেম্বর বৃষ্টির পূর্ভাবাস রয়েছে। ১৭ নভেম্বর রয়েছে রিজ়ার্ভ ডে। সে দিনও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে যায়, সে ক্ষেত্রে লিগ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা সরাসরি চলে যাবে ফাইনালে। বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা যদিও চাইবেন না, এ রকম কিছু ঘটুক।
শুরুর দিকের কয়েকটি ম্যাচ হারের পর থেকে টানা জিতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। প্যাট কামিন্সের দলকে থামানো যাচ্ছে না। শেষ চারের ম্যাচের আগে ছন্দে ফিরে এসেছেন মিচেল মার্শ। ১৩২ বলে ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়াকে সহজ জয় উপহার দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নামার আগে যদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারতে হত, তা হলে আত্মবিশ্বাস ধাক্কা খেত কামিন্সের দলের। যা হতে দেননি মার্শ।
বাংলাদেশকে হারিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শেষ চারের ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করেন কামিন্স। তিনি বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনালের জন্য আমরা খুবই উত্তেজিত। বিশ্বকাপের শুরু থেকে দেখলে, টানা ন’টা ম্যাচ খেলা কিন্তু কোনও দলের পক্ষেই সহজ নয়। শেষ চারে পৌঁছতে আমাদের প্রত্যেকটি ম্যাচেই লড়াই করতে হয়েছে। শুরুর দিকে কয়েকটি ম্যাচ হারের পরে অনেকেই আমাদের শেষ চারের অঙ্কে রাখেননি। কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সমালোচকদের ভুল প্রমাণিত করে আজ আমরা সেমিফাইনালে। আগামী ম্যাচ নিয়ে আমরা খুবই উত্তেজিত। আশা করি, কলকাতা আমাদের আরও ভালবাসা দেবে।’’
সেমিফাইনালের আগে শতরান পেয়ে আত্মবিশ্বাসী মার্শ। বলছিলেন, ‘‘বল হাতে অনেক রান দিয়ে ফেলেছিলাম। বলতে গেলে ব্যাট করার সময় নেগেটিভ-এ রান ছিল আমার। তাই চেষ্টা করেছি বড় রান করার।’’ যোগ করেন, ‘‘সেমিফাইনালের আগে সেঞ্চুরি পেয়ে ভাল লাগছে। আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যে কোনও ম্যাচে সেঞ্চুরি করাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বকাপে তো ভাল লাগবেই।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যদি ইডেনে রান তাড়া করতে যায় অস্ট্রেলিয়া, তা হলে বিপদে পড়তে পারেন কামিন্সরা। কারণ, শেষ দু’ম্যাচেই দেখা গিয়েছে নৈশালোকে পিচ মন্থর হয়ে যাচ্ছে। বল বেশি ঘুরছে। ব্যাটে থমকে আসছে বল। ১৬ নভেম্বর ইডেন ভরে ওঠার সুযোগ থাকছে। কামিন্স, ডি’ককদের দ্বৈরথে কে এগিয়ে যাবে? কারা টিকিট কাটবে আমদাবাদের?