সমর্থন: শনিবার ইডেনের গ্যালারিতে হামিদ জ়িয়া। —নিজস্ব চিত্র।
মাঠে এসে বিশ্বকাপ দেখা শুরু করেছিলেন ১৯৮৭ সালে। এই নিয়ে আট নম্বর বিশ্বকাপ দেখে ফেললেন সারা বিশ্ব ঘুরে। শুধুমাত্র দেখা হয়নি ১৯৯২-এর পাক-বিজয়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইমরান খানের হাতে উঠেছিল সে বারের বিশ্বকাপ। সেই বছর স্নাতক পর্বে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন হামিদ জ়িয়া। বাবার অনুমতি পাননি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার।
টিভিতে বসেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ মিটিয়েছিলেন হামিদ। তার পরের বার থেকে একটিও বিশ্বকাপ বাড়িতে বসে দেখেননি। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর দেশ উঠেছিল ফাইনালে। ওয়াসিম আক্রম, শোয়েব আখতারের পাকিস্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন কাপ-জয়ের। সে বার তাঁর স্বপ্নভঙ্গ করেছিলেন স্টিভ ওয়-এর অস্ট্রেলিয়া। আনন্দবাজারকে হামিদ বলছিলেন, ‘‘ইমরান খানের সবচেয়ে বড় ভক্ত ছিলাম এক কালে। অথচ ওঁর হাতে যে বার বিশ্বকাপ উঠল, সে বার বাড়িতেই থাকতে হল আমাকে। পরীক্ষার জন্য বাবা ছাড়লেন না।’’ যোগ করেন, ‘‘তার পর থেকে এত বার বিশ্বকাপ দেখলাম, কিন্তু আমার দেশকে এখনও পর্যন্ত কাপ তুলতে দেখলাম না।’’
২০১১ সালে মোহালিতে ভারত-পাক সেমিফাইনালের সেই ম্যাচ স্মরণীয় হয়ে রয়েছে হামিদের স্মৃতিতে। তিনি বলছিলেন, ‘‘তখনও ইংল্যান্ডের নাগরিক হইনি। আট্টারি বর্ডার পার করে ভারতে এসেছিলাম। সেই সময় দু’দেশের সম্পর্কে এতটা চিড় ধরেনি। সেই ম্যাচে মোহালির যে রকম পরিবেশ ছিল, তা আর কোনও মাঠে দেখিনি। লাহোর থেকে খুব একটা দূরে তো নয় মোহালি। ভারতের ৭০ শতাংশ সমর্থক থাকলে, পাকিস্তানেরও ৩০ শতাংশ সমর্থক এসেছিলেন।’’
বর্তমানে হামিদের প্রিয় ক্রিকেটারের নাম রোহিত শর্মা। বলছিলেন, ‘‘ওর মতো প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান দেখিনি। রোহিতকে দেখে মনে হয় এটাই ওর স্বাভাবিক ক্রিকেট। বাড়তি কিছু করতে হয় না ওকে।’’
কলকাতা সত্যি মিলিয়ে দিতে জানে। গ্যালারিতে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল না যে, ভারত এই ম্যাচ খেলছে না। চিরুপ্রতিদ্বন্দ্বী ও বন্ধুত্বের মধ্যে যে সরু লাইন তৈরি হয়, তা সহজেই উপড়ে ফেলতে জানে প্রাণের এই শহর।