Asia Cup 2023

২১ কোটি টাকার দায় নিয়ে ঝগড়া পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার, এশিয়া কাপের বাড়তি খরচ নিয়ে চাপানউতোর

গত বছর এশিয়া কাপের মূল আয়োজক ছিল পাকিস্তান। ভারত সে দেশে খেলতে যেতে রাজি না হওয়ায়, অধিকাংশ ম্যাচ হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। তাতে অনেকটাই বৃদ্ধি পায় প্রতিযোগিতা আয়োজনের খরচ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:১৬
Share:

এশিয়া কাপের ট্রফি। —ফাইল চিত্র।

গত বছর এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের পাকিস্তানে খেলতে যেতে দিতে রাজি হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের আপত্তির কারণে প্রতিযোগিতা হয়েছিল হাইব্রিড মডেলে। অধিকাংশ ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দু’দেশ মিলিয়ে প্রতিযোগিতা হওয়ায় আয়োজনের খরচ বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই। সেই বাড়তি খরচের দায় ভার নিতে রাজি নয় কোনও দেশেরই ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসসি) সমাধান চেয়ে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি জয় শাহের দ্বারস্থ।

Advertisement

দু’দেশ মিলিয়ে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে গিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো বেশি খরচ হয়েছিল। এই খরচের একংশের দায় ভার নিতে রাজি নয় কোনও দেশই। বিমান, হোটেল, মাঠ, স্থানীয় পরিবহন ভাড়া-সহ কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ হয়েছিল। গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত এসিসির কাউন্সিল মিটিংয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, অতিরিক্ত এই ব্যয় তাঁরা বহন করতে পারবেন না। কারণ, সরকারি ভাবে তাঁরা এশিয়া কাপের আয়োজক ছিলেন না।

পিসিবির তৎকালীন চেয়ারম্যান জ়াকা আশরফ প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচ লাহোর থেকে মুলতানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সে কারণেও বাড়তি কিছু খরচ হয়েছিল। তবু পাকিস্তানের কর্তারা বাড়তি খরচের দায়িত্ব নিতে নারাজ। পিসিবির যুক্তি, তাঁরা পুরো প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে রাজি ছিলেন। শ্রীলঙ্কায় ম্যাচ সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এসিসি। তাঁদের কোনও বক্তব্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এসিসির জন্যই প্রতিযোগিতা আয়োজনের খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তাই এই বাড়তি খরচ তারা বহন করবেন না। পাক কর্তারা খরচ বৃদ্ধির দায় সরাসরি চাপিয়ে দিয়েছেন এসিসির উপর।

Advertisement

পাকিস্তানের এই যুক্তি আবার মানতে রাজি হননি এসিসি সভাপতি। সূত্রের খবর, বালির বৈঠকে জয় বলেছেন, এসিসি বোর্ড পুরো প্রতিযোগিতাই শ্রীলঙ্কায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু পিসিবি জোর করে চারটি ম্যাচ আয়োজন করেছিল। এসিসির এক কর্তা বলেছেন, ‘‘পিসিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খাওয়ার শা এবং সিইও সলমন নাসির বাড়তি খরচ নিয়ে কথা বলছিলেন, সে সময় এসিসি সভাপতি এবং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তাদের অবস্থান এক দিকে ছিল।’’ পাক কর্তাদের কথা শোনার পর জয় বলেছেন, পাকিস্তান আয়োজনের দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হয়নি। আয়োজক হিসাবে তারা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট পরিকাঠামো এবং অন্য সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করেছিল। তাই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে খরচ মিটিয়ে দেওয়া উচিত পাকিস্তানের। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সভাপতি শামি সিলভা অভিযোগ করেন, হোটেল এবং চার্টার্ড বিমানের খরচ পিসিবি তাঁদের দেয়নি। তাঁর অভিযোগ শুনে জয় বলেছেন, ‘‘আপনারা এ ব্যাপারে সরাসরি পিসিবির সঙ্গে কথা বলুন।’’ সূত্রের খবর, এর পরেও বাড়তি খরচের বোঝা কারা বহন করবে তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। যদিও পিসিবি সিইও নাসির বলেছেন, ‘‘হোটেল এবং বিমানের কয়েকটি বিল আমরা খতিয়ে দেখছি। দ্রুত সেগুলির টাকা দিয়ে দেওয়া হবে শ্রীলঙ্কাকে।’’ চার্টাড বিমানের খরচ পাকিস্তান দেবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে। তাদের যুক্তি, যে সংস্থার মাধ্যমে চার্টার্ড বিমান ভাড়া করা হয়েছিল, সেটি অনুমোদিত নয়।

এসিসি সূত্রে খবর পিসিবি এখনও পর্যন্ত ২ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা) দিয়েছে এসসিকে। আরও ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৭ কোটি ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা) দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। পিসিবির দাবি, প্রতিযোগিতাটি এসিসির। তাই অতিরিক্ত খরচ তাদেরই বহন করতে হবে। হোস্টিং ফি বাবদ এসিসির কাছে প্রায় ২১ কোটি টাকা দাবি করেছেন পাক কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement