মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার আইপিএল খেলা ক্রিকেটার। — প্রতীকী চিত্র
প্রতারণার অভিযোগ উঠল আইপিএলের এক প্রাক্তন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন মানুষ এবং সংস্থাকে ঘোল খাইয়ে বেশ কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের ওই ক্রিকেটারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ধৃত ওই ক্রিকেটারের নাম নাগরাজু বুদুমুরু। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের একটি নামী ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের দোকানের কর্মীকে ফোন করেন তিনি। বলেন, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন্মোহন রেড্ডির ব্যক্তিগত সহকারী। উঠতি এক ক্রিকেটারকে স্পনসর করার জন্য ওই দোকানকে অর্থ সাহায্য করার কথা বলেন তিনি। সেই ক্রিকেটারের নাম রিকি ভুঁই। নাগরাজু নির্দেশ দেন, ১২ লক্ষ টাকা স্পনসরশিপ দিতে হবে। সেই মতো টাকা দিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু বোর্ডের তরফে কোনও উত্তর না পেয়ে সন্দেহ হয় সেই সংস্থার। তার পরেই থানায় অভিযোগ জানানো হয়।
মুম্বইয়ের ডিসিপি (সাইবার-ক্রাইম) বলসিংহ রাজপুত বলেছেন, “দোকানের তরফে অভিযোগ পেয়ে আমরা খুঁজতে খুঁজতে নাগরাজুর সন্ধান পাই। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার ইয়াভারিপেত্তায় নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।”
পুলিশের দাবি, বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নাগরাজু। ক্রিকেটজীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেই জীবনযাত্রা থেকে বেরোতে পারেননি। তার পরেই প্রতারণার কাজ শুরু করেন। পুলিশের দাবি, ২০১৮-র পরে আর ক্রিকেট দলে সুযোগ পাননি তিনি। বিলাসবহুল জীবনযাপন বজায় রাখতে বিভিন্ন ফন্দি এঁটে লোকঠকানো শুরু করেন। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার করতেন। দাবি করতেন, তিনি জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির সঙ্গে যুক্ত।
নাগরাজু এমবিএ করেছেন। ২০১৪-২০১৬ পর্যন্ত রঞ্জি ট্রফিতে অন্ধ্রের হয়ে খেলেছেন। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের সদস্যও ছিলেন। এর আগে ২০২১ সালেও তাঁকে এক বার গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে বার অন্ধ্রপ্রদেশের মন্ত্রী কেটি রামা রাওয়ের ব্যক্তিগত সচিব সেজে ন’টি কর্পোরেট সংস্থার থেকে ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ৬০টি সংস্থাকে প্রতারিত করে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নাগরাজুর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৩০টি এফআইআর রয়েছে।
অপরাধ স্বীকার করেছেন নাগরাজু। তাঁর দাবি, প্রতিশোধ নিতেই এই কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশের একটি রাজনৈতিক নেতাকে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েও ফেরত পাননি। তার পরেই ক্রিকেটজীবন শেষ হয়ে যায়। এর পরেই প্রতারণার খেলায় মেতে ওঠেন তিনি। বিভিন্ন সংস্থার এমডি-কে ফোন করে তিনি প্রতারণা করতেন।