kane williamson

Kane Williamson: সমরবীরের মন্ত্র, ‘ভারতীয়’ স্পিনে ভরসা কেনদের

কেন এ রকম বলছেন? অকল্যান্ড থেকে পকন্যালের মন্তব্য, ‘‘অজাজ়ের নিয়ন্ত্রণটা অসাধারণ।

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৯:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারতের সঙ্গে লড়াইয়ে স্পিন-শক্তির উপরেই যে সিরিজ়ের ফল নির্ভর করছে, তা মোটামুটি ধরেই নিয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। যে কারণে তারা তিন স্পিনারে খেলার কথাও ভাবছে। আর এই স্পিন দ্বৈরথে অজিঙ্ক রাহানেদের চিন্তায় ফেলতে পারেন দুই ‘ভারতীয়’। পরিষ্কার করে বললে, দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঁ-হাতি স্পিনার। অজাজ় পটেল এবং রাচিন রবীন্দ্র।

Advertisement

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিল নিউজ়িল্যান্ড। যে দলের কোচ ছিলেন গ্লেন পকন্যাল। যিনি আবার ডেভন কনওয়ের ব্যক্তিগত কোচও। সেই সফরে রাচিন এবং অজাজ়কে খুব কাছ থেকে দেখেছেন পকন্যাল। আর সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি মনে করেন, স্পিন সহায়ক উইকেট পেলে ভারতীয় ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলে দিতে পারেন এই দুই স্পিনার। বিশেষ করে অজাজ়।

কেন এ রকম বলছেন? অকল্যান্ড থেকে পকন্যালের মন্তব্য, ‘‘অজাজ়ের নিয়ন্ত্রণটা অসাধারণ। একটা স্পটে নিয়ম করে বল ফেলতে পারে। আর যদি উইকেটে কোনও ক্ষত পায়, তা হলে তো কথাই নেই। সেই জায়গায় বল ফেলে ও ঘুরিয়ে যাবে।’’ যোগ করেন, ‘‘ধরুন, চতুর্থ বা পঞ্চম দিনে যদি উইকেটে ক্ষত তৈরি হয় আর ওই সময় নিউজ়িল্যান্ড বল করার সুযোগ পায়, তা হলে অজাজ় বড় সমস্যা তৈরি করবে। লেগ-মিডলে ফেলে ডান-হাতি ব্যাটারদের ক্ষেত্রে বলটা ও বাইরে নিয়ে যাবে। সেটা সামলানো কিন্তু সহজ হবে না।’’

Advertisement

আর এক বাঁ-হাতি স্পিনার রাচিনের প্রশংসাও করছেন পকন্যাল। কোচ এ-ও জানাচ্ছেন, রাচিন দলে এলে নিউজ়িল্যান্ডের ব্যাটিং গভীরতাও বাড়বে। পকন্যালের কথায়, ‘‘রাচিন কিন্তু ভাল ব্যাটও করে। ও খেললে সাত নম্বরে নামবে। এতে ব্যাটিং গভীরতা বাড়বে। পাশাপাশি নিউজ়িল্যান্ড পাঁচ বোলারে আক্রমণ সামলাতে পারবে। রাচিনের বাঁ-হাতি স্পিন কিন্তু অনেককেই সমস্যায় ফেলে দেবে। মার খেলেও ও ঘাবড়ায় না।’’

পকন্যাল মনে করছেন, বাংলাদেশের ওই সফর তাঁদের নানা ভাবে প্রস্তুত করে দিয়েছে উপমহাদেশে খেলার জন্য। যেমন মন্থর, ঘূর্ণি পিচে স্পিন আক্রমণ সামলানোর শিক্ষা। ওই সফরে দলে থাকা বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার এ বার ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট দলে আছেন। জোড়া স্পিনারের কথা আগেই বলা হয়েছে। তালিকায় আরও আছেন টম লাথাম, টম ব্লান্ডেল, হেনরি নিকোলস। এই তিন জনই ভারতের বিরুদ্ধে নিউজ়িল্যান্ড ব্যাটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পকন্যালের মতে, ভারতীয় পরিবেশ এবং ঘূর্ণি পিচে খেলার জন্য বাংলাদেশ সফর এই ব্যাটারদের তৈরি করে দিয়েছে। সঙ্গে আছে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটার থিলান সমরবীরের পরামর্শও। পকন্যাল জানাচ্ছেন, ওই বাংলাদেশ সফরে সমরবীর দলের ব্যাটিং কোচ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন। যেখানে স্পিনের বিরুদ্ধে নিউজ়িল্যান্ড ব্যাটারদের তৈরি করে দেওয়াটাই ছিল সমরবীরের লক্ষ্য।

ব্যাটারদের কী পরামর্শ দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটার? জানা যাচ্ছে, তিনটে ব্যাপারের উপরে জোর দিতে বলেছিলেন সমরবীর। এক, স্পিনারদের গ্রিপ দেখে বুঝে নিতে হবে, কী ধরনের বল আসছে। পিচে পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না। দুই, শট খেলার সময় শরীরের অবস্থান ঠিক কী রকম থাকবে। তিন, মাঠের কোন জায়গা দিয়ে শট খেলা অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকির। সমরবীরের সঙ্গে কাজ করা পকন্যাল বলছিলেন, ‘‘আমাদের নজরই ছিল স্পিনের বিরুদ্ধে ব্যাটারদের তৈরি করে দেওয়া। এর পরে সমরবীর আলাদা করে সব ব্যাটারদের ক্লাস নিয়েছিল। যাতে ওরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে স্পিনারদের মোকাবিলা করতে পারে।’’

পকন্যাল আশাবাদী টম লাথামকে নিয়ে। তিনি বলছেন, ‘‘লাথাম বিশেষ জোর দিয়েছিল স্পিন বোলিং খেলার ব্যাপারে। ও টেস্টে ইনিংস তৈরি করতে পারে। আশা করছি, কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস গড়বে লাথাম।’’

ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছেন নিউজ়িল্যান্ডের দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্পিনারও। রাচিনের পরিবার একটা সময় বেঙ্গালুরুতে থাকত, অজাজ়ের জন্মই মুম্বইয়ে। রাচিনের নামকরণের নেপথ্যে রয়েছে এক ক্রিকেট প্রেমের কাহিনি। বাবা এতটাই ক্রিকেটপ্রেমী ছিলেন যে, ছেলের নাম রেখেছিলেন দুই কিংবদন্তির নামে। রাহুল দ্রাবিড় এবং সচিন তেন্ডুলকর। রাচিন যদিও দিন কয়েক আগে এক ভিডিয়ো কনফারেন্সে বলছিলেন, নিজের নামের উৎপত্তি নিয়ে তিনি বিশেষ আলোচনা করতে চান না। অন্য দিকে, অজাজ় এক ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আমরা জানি, ভারতের পিচ থেকে স্পিনাররা সাহায্য পায়। এস জি বলে বল করতেও আমি তৈরি। আমার কোনও সমস্যা হবে না। দেখা যাক কী হয়।’’ বৃহস্পতিবার থেকে কানপুরে সমরবীরের মন্ত্র আর ‘ভারতীয়’ স্পিনকে হাতিয়ার করেই নামতে চলেছেন উইলিয়ামসনরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement