হতাশা, অভিমানে পাঁচ বছর আগে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন শামি। ফাইল ছবি
ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বোলার তিনি। মোক্ষম মুহূর্তে উইকেট তুলে নিতে জুড়ি নেই। সেই মহম্মদ শামিই হতাশা, অভিমানে পাঁচ বছর আগে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জোরে বোলারকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ক্রিকেটে ফেরত আনেন প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সে কথা উল্লেখ করেছেন দলের প্রাক্তন বোলিং কোচ ভরত অরুণ।
তিনি বলেছেন, “২০১৮-তে ইংল্যান্ড সফরের আগে সবার ফিটনেস পরীক্ষা হয় এবং শামি ব্যর্থ হয়। ভারতীয় দলে জায়গা হারিয়ে ফেলে। তার পর আমাকে ফোন করে কথা বলতে চায়। আমি ঘরে ডেকে নিই। সেই সময় পারিবারিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই ফিটনেসে তার প্রভাব পড়ে। মানসিক ভাবেও বিধ্বস্ত ছিল। আমাকে বলে, ‘আমি খুব রেগে আছি। ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিতে চাই।’ শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।”
শামি সে বার ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। জানতেন যে ফিটনেস পরীক্ষায় সফল না হলে দলে ঠাঁই মিলবে না। তাই-ই হয়। শামির বদলে সুযোগ পান নবদীপ সাইনি। সে কারণেই তিনি খেলা ছাড়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন। অরুণ তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন কোচ শাস্ত্রীর কাছে নিয়ে যান। শাস্ত্রী ভাল করে বোঝান শামিকে।
অরুণ বলেছেন, “শামিকে নিয়ে শাস্ত্রীর ঘরে যাই এবং বলি, ‘শামি তোমাকে কিছু বলতে চায়।’ শাস্ত্রী জিজ্ঞাসা করেছিল কী কথা আছে। শামি ওকেও বলে, ‘আমি ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চাই।’ এর পর দু’জনে বোঝাই যে ক্রিকেট ছেড়ে দিলে ও করবে কী? বল করাই তো জানে শুধু।”
শাস্ত্রী তৎক্ষণাৎ শামিকে নির্দেশ দেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গিয়ে নিজের ফিটনেসের ব্যাপারে মনোযোগ দিতে। এক মাস নিজেকে নিংড়ে দিতে। শাস্ত্রীর পরিকল্পনা কাজে লেগেছিল। কম সময়েই আবার দলে ফেরার উপযুক্ত হয়ে ওঠেন শামি। তাঁকে পাঠানোর আগে শাস্ত্রী বলেছিলেন, “তোমার ওই রাগটাই জীবনের সবচেয়ে ভাল কাজ। ফিটনেস খুব খারাপ। নিজের মধ্যে যে রাগ রয়েছে, শরীরের উপরে তার শোধ তুলে নাও। আমরা তোমায় এনসিএ-তে পাঠাচ্ছি। সেখানে চার সপ্তাহ থাকো। বাড়ি যাবে না।”
ফিট শামি এর পর শাস্ত্রীকে বলেছিলেন, “স্যর, নিজেকে যোদ্ধার মতো মনে হচ্ছে। যত খুশি আমাকে দিয়ে দৌড় করান।”