অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা না পারলেও নাগপুরের উইকেটে সাবলীল ব্যাটিং করলেন ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মা। ছবি: এএফপি।
অস্ট্রেলিয়া- প্রথম ইনিংসে ১৭৭/১০ (মার্নাশ লাবুশেন ৪৯, রবীন্দ্র জাডেজা ৪৭/৫)
ভারত- প্রথম ইনিংসে ৭৭/১ (রোহিত শর্মা ৫৬ অপরাজিত)
বোলারদের পরে এ বার দাপট দেখালেন ব্যাটাররা। বলা ভাল, ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। তাঁদের ব্যাটে প্রথম দিনের শেষে ভাল জায়গায় ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ইনিংসে ১৭৭ রানে অলআউট করে দেওয়ার পরে ভারতের রান প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ৭৭। দিনের শেষ দিকে ২০ রান করে আউট হন রাহুল। রোহিত ৫৬ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার থেকে ১০০ রান পিছিয়ে রয়েছে ভারত। কিন্তু ৯ উইকেট রয়েছে তাদের হাতে।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের দেখে মনে হচ্ছিল, এই পিচে ব্যাট করতে সমস্যায় পড়বে ভারতও। কিন্তু আদতে সেটা দেখা গেল না। সাবলীল ভাবে ব্যাট করলেন রোহিত ও রাহুল। বেশি আক্রমণাত্মক খেললেন রোহিত। অন্য দিকে বেশ কয়েক দিন পরে দলে ফিরে নিজের সময় নিলেন রাহুল। যত খেলা গড়াল, তত আত্মবিশ্বাসী দেখাল তাঁকে।
প্রথম বল থেকেই বড় শট খেলা শুরু করেন রোহিত। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রথম ওভারেই ১৩ রান করেন তিনি। সেই যে শুরু হল, রানের গতি কমল না। মাঝেমধ্যে দু’একটা বল ব্যাটের কাছ দিয়ে বার হলেও খুব বেশি সমস্যা হল না দুই ওপেনারের। ভারতের মতোই অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররাও তাড়াতাড়ি বল করতে আসেন। দুই স্পিনার নেথান লায়ন ও টড মারফি অনেক চেষ্টা করলেন। কিন্তু রোহিতকে আউট করতে পারলেন না। দিনের শেষ দিকে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন রোহিত। এই ইনিংস অনেকটা আত্মবিশ্বাস দেবে ভারত অধিনায়ককে। বড় রান করার সুযোগ ছিল রাহুলেরও। দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে মারফির বলে আউট হন তিনি।
প্রথম দিনের শুরুতে দাপট দেখান ভারতীয় পেসাররা। মাত্র ২ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনারকে তুলে নেন দুই পেসার মহম্মদ সিরাজ় ও মহম্মদ শামি। তার পরে জুটি বাঁধেন স্টিভ স্মিথ ও মার্নাশ লাবুশেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে অস্ট্রেলিয়াকে টানেন তাঁরা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত তাঁদের আউট করা যায়নি। কিন্তু বিরতির পরেই অস্ট্রেলিয়াকে জোড়া ধাক্কা দেয় ভারত। পর পর দু’বলে দু’উইকেট নেন রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁর স্পিনের ভেল্কিতে খেলায় ফেরে ভারত।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে প্রথমে আউট হন লাবুশেন। ইনিংসের শুরু থেকেই পায়ের ব্যবহার করছিলেন তিনি। উইকেট থেকে বেরিয়ে খেলছিলেন। সেখানেই লাবুশেনকে ফাঁদে ফেলেন জাডেজা। অফস্টাম্পে বাইরে কিছুটা মন্থর গতিতে করা বল মারতে গিয়ে মিস্ করেন লাবুশেন। বল ঘুরে চলে যায় উইকেটরক্ষক শ্রীকর ভরতের হাতে। তখন ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন লাবুশেন। আর ফিরতে পারলেন না তিনি। ৪৯ রানের মাথায় স্টাম্প আউট হলেন তিনি। পরের বলেই আবার সফল হন জাডেজা। এ বার তাঁর শিকার বাঁ হাতি ম্যাট রেনশ। বলের লাইনই ধরতে পারেননি রেনশ। বল তাঁর প্যাডে লাগলে আম্পায়ার আউট দেন। রেনশ রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারকে ধসিয়ে দেন জাডেজা। অশ্বিন অনেক আগে থেকে বল করলেও সে ভাবে সাফল্য পাচ্ছিলেন না। তাঁকে বরং অনেক সহজেই খেলে দিচ্ছিলেন অসি ব্যাটাররা। সেই সুযোগ এল শেষ দিকে। অশ্বিনের সোজা বল রিভার্স সুইপ করতে গেলেন অ্যালেক্স ক্যারে। বল ব্যাটে লেগে সোজা স্টাম্পে। তার দু’ওভার পরে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ফেরান অশ্বিন। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন কোহলি। টড মারফি ফিরে যান জাডেজার বলে।
শেষ দিকে পিটার হ্যান্ডসকম্ব কিছুটা চেষ্টা করলেও বড় রান করতে পারেননি তিনি। তাঁকে ৩১ রানের মাথায় আউট করার সঙ্গেই এই ইনিংসে ৫ উইকেট হয় জাডেজার। অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট নেন অশ্বিন।