আশায়: কেকেআরের হয়েই ফিরতে চান লকি। —ফাইল চিত্র।
আইপিএলে শেষ তিন বছর তিনি খেলছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে। আগামী বছরে নিলাম। কিন্তু তাঁর মন এখনও পড়ে আছে কেকেআর শিবিরে। চোটের জন্য দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়েও তিনি ব্যর্থ। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সিরিজ় ও আসন্ন পাকিস্তান সফরই এখন পাখির চোখ লকি ফার্গুসনের। মঙ্গলবার আনন্দবাজারের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেট থেকে আসন্ন আইপিএল নিয়ে খোলামেলা প্রতিক্রিয়া দিলেন বিধ্বংসী নিউজ়িল্যান্ড পেসার।
প্রশ্ন: আসন্ন পাক সিরিজ় নিয়ে কতটা উত্তেজিত?
লকি ফার্গুসন: অবশ্যই মুখিয়ে রয়েছি। আগে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজ় রয়েছে। একটি করে সিরিজ় নিয়ে ভাবতে চাই। তবে পাক সফর নিয়ে আমি খুব উত্তেজিত। ওরা খুব ভাল ক্রিকেট খেলছে। শেষ বার বিশেষ পরিস্থিতিতে আমাদের দেশে ফিরে আসতে হয়েছিল। আমার বিশ্বাস, পাকিস্তান সমর্থকদের সামনে ক্রিকেট উপভোগ করব।
প্রশ্ন: আপনার জীবনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
লকি: আইপিএলে আমার দ্বিতীয় মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সে সুযোগ পাই। প্রথম বার ইডেনের সমর্থকদের সামনে খেলে মুগ্ধ হয়েছিলাম। কলকাতার মানুষ ক্রিকেট ভালবাসেন। ইডেনে বল হাতে যদিও বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারিনি। ব্যাট হাতে পরিসংখ্যান ভাল। ইডেনের পিচ অনেকটা অকল্যান্ডের ইডেন পার্কের মতো। ব্যাটারদের স্বর্গ। প্রথম মরসুমে সে রকম কিছু করে দেখাতে না পারলেও কেকেআর আমার উপরে ভরসা রেখেছে। শাহরুখ খানের দলেই টি-টোয়েন্টি বোলার হিসেবে বিশেষ উন্নতি করেছি।
প্রশ্ন: সামনেই নিলাম। কোন দলে যেতে চান? বিশেষ কোনও পছন্দ কি রয়েছে?
লকি: নিলাম নিয়ে আমি খুবই চিন্তায় রয়েছি। মনে-প্রাণে চাই কেকেআর শিবিরে ফিরে আসতে। প্রত্যেকের সঙ্গে এত ভাল সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। বেঙ্কি মাইসোর আমার বড় দাদার মতো। তা ছাড়া বাজ় (ম্যাকালাম)-এর প্রশিক্ষণে খেলার সুযোগ পাওয়াও বড় প্রাপ্তি। আমাদের দেশের কিংবদন্তির সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করার সুযোগ সবাই পায় না। কিন্তু নিলামে কে আমার জন্য ঝাঁপাবে, জানি না। যে দলেই সুযোগ পাই না কেন, নিজের সবটা দিয়ে দলকে জেতানোর
চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: নেটে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনদের বল করেই কি শেষের ওভারে এতটা বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন?
লকি: রাসেল ও নারাইন আমার বল খেলতে চায় না। ওরা বলে নেটে তোমার বল খেলে লাভ নেই। তবে হ্যাঁ, প্র্যাক্টিস ম্যাচে ওদের বল করলে বোঝা যায় কোন জায়গায় রয়েছি। ওরা তো মাঠের যে কোনও প্রান্তে বল পাঠিয়ে দিতে পারে। মাঝে-মধ্যে তাই নিজেকে যাচাই করে নিতে হয়।
প্রশ্ন: আসন্ন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ়ে কাদের এগিয়ে রাখবেন? ভারতীয় পেস বিভাগকেই বা কত নম্বর দেবেন?
লকি: ভারতীয় ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে পেস বিভাগ। স্পিনাররাই সে দেশের সম্পদ। কিন্তু এতটা কঠিন পরিবেশেও যে বিধ্বংসী পেস বিভাগ তৈরি হতে পারে, কেউ ভাবতেই পারেন না। বর্তমানে ভারতীয় পেস বিভাগ সবচেয়ে বিধ্বংসী। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে ওরা যে ভাবে খেলেছে, তাতেই বোঝা যায় ওদের পেস বোলিং আক্রমণ বিভাগের গভীরতা কতটা। কেউ চোট পেলে পরিবর্ত সব সময় তৈরি। আমি মনে করি, ভারতীয় পেস বিভাগের উন্নতির নেপথ্যে আইপিএলের বড় অবদান আছে। তরুণ ক্রিকেটারেরা আমাদের কাছে এসে পরামর্শ চায়। নেট বোলাররাও সব সময় উন্নতি করার চেষ্টা করে। দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশে ভারতীয় পেস বিভাগ নিঃসন্দেহে ভাল করবে।
প্রশ্ন: মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে খেলেছেন। কেন উইলিয়ামসন আপনারই দলের নেতা। কার মাথা বেশি ঠান্ডা?
লকি: উইলিয়ামসনকে অবশ্যই এগিয়ে রাখব। কখনওই রাগতে দেখি না। তার পরেই আসবে ধোনি। রাইজ়িং পুণে সুপারজায়ান্টসের দিনগুলো খুব মনে পড়ে। অইন মর্গ্যানের মাথাও খুব ঠান্ডা। যখনই কোনও বোলার বেশি রান দিয়ে ফেলে, ও কিন্তু রেগে যায় না। তাকে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করে। নতুন কিছু চেষ্টা করার পরামর্শ দেয়।
প্রশ্ন: ১ জানুয়ারি থেকে নিউজ়িল্যান্ড-বাংলাদেশ সিরিজ় সম্প্রচারিত হবে অ্যামাজ়ন প্রাইমে। কী রকম অনুভূতি হচ্ছে?
লকি: এত দিন যেখানে ওয়েব সিরিজ় দেখতাম, সেখানে আমাদের ম্যাচ দেখানো হবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ খারাপ দল নয়। যে কোনও দলকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
প্রশ্ন: কোন ওয়েব সিরিজ় সবচেয়ে প্রিয়?
লকি: গ্র্যান্ড ট্যুর। আমি বরাবরই গাড়ির ভক্ত। এই ওয়েব সিরিজ়ে দারুণ সব গাড়ি দেখা যায়।