হেডিংলেতে ইংল্যান্ডকে জেতানোর পথে হ্যারি ব্রুক। ছবি: রয়টার্স
তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন তখনও জেতার জন্য ১৫৮ রান দরকার ইংল্যান্ডের। একে একে দলের প্রধান ব্যাটার জো রুট, অধিনায়ক বেন স্টোকস ও তার পর জনি বেয়ারস্টোকে আউট হতে দেখেন তিনি। কিন্তু তার পরেও ঘাবড়াননি। পাল্টা আক্রমণের পথে যান হ্যারি ব্রুক। তিনি যখন আউট হয়ে ফিরছেন তত ক্ষণে খেলা প্রায় জিতে গিয়েছে ইংল্যান্ড। হেডিংলেতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক ব্রুক। সেই ব্রুক, যিনি আইপিএলে ব্যর্থ ক্রিকেটারদের দলে জায়গা পেয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের জিততে দ্বিতীয় ইনিংসে দরকার ছিল ২৫১ রান। ভাল শুরু করেও আউট হয়ে যান দলের দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। রান পাননি মইন আলি। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই আক্রমণের পথে যান ব্রুক। শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের বিরুদ্ধে হাত খুলে খেলা শুরু করেন। অফস্টাম্পের বাইরের বলে দর্শনীয় কভার ড্রাইভ মারেন। প্রথমে রুট ও তার পর স্টোকসের সঙ্গে জুটি গড়েন ব্রুক। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে-পরে তিনটি উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ফিরে যান রুট, স্টোকস ও বেয়ারস্টো। সেই সময় যদি
ব্রুকও আউট হয়ে যেতেন তা হলে খেলা ইংল্যান্ডের হাত থেকে বেরিয়ে যেত। সেটা হতে দিলেন না তিনি। এক দিন ধরে থাকলেন। আবার উইকেট কামড়ে পড়েও থাকলেন না। বল দেখে শট খেললেন। ক্রিস ওকসের উপর ভরসা দেখালেন। অর্ধশতরানের পরে হাত আরও খুলে খেলা শুরু করেন ব্রুক। দেখে মনে হচ্ছিল, দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়বেন। কিন্তু সেটা পারেননি। ৭৫ রানের মাথায় বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন। তাতে অবশ্য ইংল্যান্ডের জিততে সমস্যা হয়নি। তাঁর দেখানো পথেই আক্রমণাত্মক খেলে দলকে জেতান ওকস ও মার্ক উড।
গত আইপিএলের নিলামে ১৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় ব্রুককে কিনেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে শতরানও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওই এক ইনিংসের বাইরে আর রান পাননি ব্রুক। শেষ দিকের কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে প্রথম একাদশে রাখেনি দল। হায়দরাবাদের হয়ে ১১টি ম্যাচ খেলে ১৯০ রান করেন ব্রুক। মাত্র ২১.১১ গড়ে রান করেন তিনি। হায়দরাবাদের ব্যর্থতার দায় খানিকটা ব্রুকেরও। সেই ব্রুকই আবার ইংল্যান্ডের ভরসার জায়গা হয়ে উঠলেন। সিরিজ়ে টিকে থাকতে হলে হেডিংলেতে জিততেই হত স্টোকসদের। সেই জয় এল আইপিএলের ব্যর্থ ব্রুকের ব্যাটেই।