সফল: যুব এশিয়া কাপে ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হর্নুর। ছবি টুইটার।
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। পাঁচ ইনিংসে ২৫১ রান করেছেন। একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি রয়েছে নামের পাশে। তিনি— হর্নুর সিংহ।
জালন্ধরে এক ক্রিকেটীয় পরিবারে জন্ম তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনারের। হর্নুরের ঠাকুরদা সর্দার রাজিন্দর সিংহ পঞ্জাবের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলেছেন। বাবা বরিন্দর সিংহ অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরে খেলেছেন রাজ্যের হয়ে। কাকা হরমিন্দর সিংহ পঞ্জাবের সহকারী কোচ ছিলেন বেশ কয়েক বছর। সেই পরিবার থেকেই উঠে এসেছেন হর্নুর। যার জন্মের পরেই বাবা ঠিক করেন, ছেলেকে ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন। তাঁর বড় ছেলে জসনুরও ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু মাঝপথে ছেড়ে দেন। তাই হর্নুরকেই ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বরিন্দর। ছেলের উন্নতির জন্য একটি বোলিং মেশিনও কিনেছেন। তার সামনেই পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করতেন হর্নুর। অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরে খেললেও তিনি অনুশীলন করেন মনদীপ সিংহদের সঙ্গে। রঞ্জি ট্রফি পর্যায়ের বোলিংয়ের মোকাবিলা করেন অনূর্ধ্ব-১৬ স্তর থেকে। তাই অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরে সফল হতে তাঁকে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয়নি।
হর্নুরের কাকাই তাঁর ছোটবেলার কোচ। তিনি বলছিলেন, ‘‘প্রত্যেক দিন চার ঘণ্টা ব্যাট করে হর্নুর। সকালে অনুশীলন করে আর্দ্রতা ও সুইংয়ের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার জন্য। বিকেলে নেটে ব্যাট করে স্পিন বোলিং ও রিভার্স সুইংয়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। ওর ক্রিকেটার হওয়ার নেপথ্যে পরিবারের প্রত্যেকের অবদান আছে।’’
হর্নুরের বাবা বরিন্দর বলছিলেন, ‘‘ও প্রথম খেলা শেখে আমার বাবার (রাজিন্দর) কাছে। মাত্র আট বছর বয়সে ক্রিকেটে হাতেখড়ি। ছোট থেকেই ভাল কভার ড্রাইভ ও পুল করতে পারত। তখনই ধরে নিয়েছিলাম, ও ওপেনার হতে পারে।’’
হর্নুরের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে নিজের অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করার অনুমতি দেন হরভজন সিংহ। চণ্ডীগড়ের হয়ে হর্নুর খেললেও জালন্ধরেই তাঁর বাড়ি। সেখানে যত দিন থাকেন, হরভজনের অ্যাকাডেমির দরজা তাঁর জন্য খোলা থাকে। বরিন্দর বলছিলেন, ‘‘ভাজ্জি সব সময় চায় জালন্ধর থেকে ভাল ক্রিকেটার উঠে আসুক। হরভজন ওর অ্যাকাডেমিতে বিনামূল্যে অনুশীলন করার অনুমতি দিয়েছে হর্নুরকে।’’
এশিয়া কাপে ভাল পারফর্ম করলেও বরিন্দর চান আসন্ন বিশ্বকাপে যেন তাঁর ছেলে দেশকে ট্রফি এনে দিতে পারেন। বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপের মহড়া এই এশিয়া কাপ। আসল খেলা কিন্তু বিশ্বকাপ। প্রত্যেকের নজর থাকে সেই প্রতিযোগিতায়। বিশ্বকাপে ভাল খেললে বুঝব, ও সত্যি চাপ সামলাতে শিখে গিয়েছে।’’