কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: সংগৃহীত।
ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহাকে দলে নেওয়ার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ঝাঁপাতে দেখা যায়নি কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। খেলা ছাড়ার পর তাঁকে সহকারী কোচ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তারা। তবে ঋদ্ধি রাজি হননি। আগামী দিনে কোচ হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও এখনই আইপিএলে কোচিং করাতে রাজি নন তিনি। তেমনটাই জানালেন ঋদ্ধি। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন বাংলায় ফিরলেও এখনও অভিমান কমেনি।
গত বছর কলকাতা নাইট রাইডার্স আইপিএল জিতেছে। সেই দলের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। তাঁর সহকারী হওয়ার প্রস্তাব ছিল ঋদ্ধির কাছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্টস ক্লাবের অনুষ্ঠানে তিনি বললেন, “আমার কাছে প্রস্তাব এসেছিল কেকেআরের। ওরা আমাকে সহকারী কোচ করতে চেয়েছিল। কিন্তু খুব বেশি কথা এগোয়নি। আমি এখনই দায়িত্ব নিতে রাজি নই। তাই খুব বেশি কথা হয়নি। আমার কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা নেই। সেই অভিজ্ঞতা হোক তার পর ভাবব।”
কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রস্তাবে রাজি না হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হতে রাজি ঋদ্ধি। বাংলা থেকে এখনও প্রস্তাব পাননি। তবে অন্য রাজ্যের প্রস্তাব রয়েছে তাঁর কাছে। ঋদ্ধি বললেন, “এখনও বাংলার কোচ হওয়ার প্রস্তাব পাইনি। তবে আমি তৈরি। ১৭ বছর আইপিএল খেলেছি, ২৮ বছর ক্রিকেট খেলেছি। সেই অভিজ্ঞতা তো রয়েছে। বাংলা হোক বা অন্য কোনও রাজ্য, আমি রাজি। অন্য রাজ্যের কোচ হওয়ার প্রস্তাব আছে আমার কাছে। দু’-এক মাসের মধ্যে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। দেখা যাক কী হয়।”
(বাঁদিক থেকে) অভিষেক ডালমিয়া, শালিনী ডালমিয়া, ঋদ্ধিমান সাহা, আনভি সাহা এবং দেবারতি মিত্র (সাহা)। ছবি: সংগৃহীত।
সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে সেই প্রতিযোগিতা। যে প্রতিযোগিতায় উইকেটরক্ষক হিসাবে লোকেশ রাহুলকে এগিয়ে রাখছেন গৌতম গম্ভীর। তবে ঋদ্ধি মনে করছেন ঋষভ পন্থ উইকেটরক্ষক হিসাবে কিছুটা এগিয়ে থাকবেন। ঋদ্ধি বললেন, “আমার সঙ্গে পন্থের সম্পর্ক ভাল। রাহুলের চেয়ে আমি ওকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। তাই আমি চাইব পন্থ খেলুক। তবে দলে ভারসাম্য রাখার জন্য যেটা প্রয়োজন সেটাই করা উচিত।” ভারত পুরো শক্তির দল নিয়ে যেতে পারছে না বলেও মনে করছেন ঋদ্ধি। তিনি বললেন, “জসপ্রীত বুমরাহ না থাকায় ভারত পুরো শক্তি নিয়ে যেতে পারছে না।”
বাংলার হয়ে খেলেই অবসর নিয়েছেন ঋদ্ধিমান। দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট খেলা উইকেটরক্ষককে একটা সময় বাংলা ছাড়তে হয়েছিল। এক কর্তার কথায় অভিমানে বাংলা ছেড়ে ত্রিপুরায় চলে গিয়েছিলেন ঋদ্ধি। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়েও। ঋদ্ধি বললেন, “অভিমানে বাংলা ছেড়েছিলাম। অতীতকে টানতে চাই না। যা হয়ে গিয়েছে, তা হয়ে গিয়েছে। আমার সেই সময় মনে হয়েছিল যে এত দিন খেলার পর আমার সেটা শোনা উচিত ছিল না। সেই কারণে আমি বাংলা ছেড়েছিলাম। পরে ফিরেও এসেছি। ইডেন থেকেই আমার ক্রিকেট কেরিয়ার শুরু হয়েছিল। তাই এখানেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। আমার স্ত্রী রোমিও বলেছিল আমাকে বাংলায় ফিরতে। এখান থেকে অবসর নিতে। দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) বলেছিল। আরও অনেকেই বলেছিল। তাই বাংলায় ফিরেছিলাম।”
বৃহস্পতিবার ঋদ্ধিমানকে সংবর্ধনা জানাল কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্টস ক্লাব। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঋদ্ধির স্ত্রী এবং কন্যা। বাংলার ক্রিকেট সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি অভিষেক ডালমিয়াও সপরিবার উপস্থিত ছিলেন। ঋদ্ধি অবসর নিলেও আগামী দিনে তিনি মাঠেই থাকতে চান। বললেন, “আমার মাঠে থাকতেই ভাল লাগে। রোমি যদি আরও কয়েক বছর ঘর সামলে দেয় তা হলে আমি মাঠেই থাকতে চাই। আগামী প্রজন্মকে শেখাতে চাই।”