স্ত্রী অলকানন্দার সঙ্গে প্রাক্তন ক্রিকেটার অভীক চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
শেষ যে বার ইডেনে এসেছিলেন, সে দিন ছিল অনুশীলন ম্যাচ। সেই অনুশীলন সেরে বার হওয়ার পর জীবনটাই বদলে গিয়েছিল অভীক চৌধুরীর। আর কখনও ক্রিকেট খেলতে পারেননি। গাড়ি দুর্ঘটনায় হাঁটার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছেন অভীক। সেই ক্রিকেটারকেই বৃহস্পতিবার বাংলার অনুশীলনে নিয়ে এলেন কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
রঞ্জির তৃতীয় ম্যাচের আগে দলের ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য অভীককে ডেকেছিলেন লক্ষ্মী। ১৪ বছর আগে ইডেন থেকে হেঁটে বার হওয়া অভীক এ দিন এলেন হুইলচেয়ারে। সঙ্গে নিয়ে এলেন একরাশ লড়াইয়ের জোর। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভীক বললেন, “সেই দিনের পর এই প্রথম ইডেনে গেলাম। পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। লক্ষ্মীদা ডেকেছিল বাংলার ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। ভাল লাগল এত দিন পর বাংলার অনুশীলনে গিয়ে। সব কিছু আগের মতোই আছে।”
বাংলার অনুশীলনে অনুষ্টুপ মজুমদার, লক্ষ্মীরতন শুক্লদের সঙ্গে অভীক চৌধুরী। ছবি: সিএবি।
অভীককে পেয়ে খুশি লক্ষ্মীও। শুক্রবার থেকে শুরু রঞ্জির তৃতীয় ম্যাচ। ছত্তীসগঢ়ের বিরুদ্ধে নামার আগে অভীকের লড়াইয়ের কথা শুনল বাংলা। লক্ষ্মীর নেতৃত্বেই অভিষেক হয়েছিল অভীকের। তাঁর মধ্যে সম্ভাবনা ছিল বাংলার হয়ে দীর্ঘ দিন খেলার। কিন্তু একটা দুর্ঘটনা সব কিছু পাল্টে দেয়। অভীক খেলতে না পারলেও এখন তিনি কোচ। দুর্ঘটনার পর আবার ক্রিকেটে ফিরেছেন। লক্ষ্মী বললেন, “অভীককে আসতে বলেছিলাম, দল যাতে ওর লড়াই থেকে অনুপ্রেরণা পায়। তবে ও আমাদের সঙ্গে সব সময় আছে।” মনোজ তিওয়ারি বললেন, “অনুশীলনে অভীককে পাওয়াটা দারুণ অনুভূতি। আশা করি তরুণদের উপর ওর কথার প্রভাব পড়বে।”
১৮ অক্টোবর, ২০০৯। প্রাক্তন বান্ধবী এবং তাঁর বোনেদের নিয়ে বাইপাসের উপর গাড়ি চালাচ্ছিলেন অভীক। সকালেই ইডেনে বাংলার অনুশীলন ম্যাচ খেলেছিলেন। পরের দিন বাংলার হয়ে খেলতে ধানবাদ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব বদলে দিয়েছিল একটি দুর্ঘটনা। রুবি মোড়ের কাছে সেই দিন দুপুরে ডিভাইডারে ধাক্কা মারেন অভীক। সেই দিনের কথা অভীকের পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি আবার ক্রিকেটে ফিরেছেন। বালিগঞ্জের প্রথম শ্রেণির একটি ক্লাবের কোচ তিনি। অভীক বললেন, “লক্ষ্মীদা, অনুষ্টুপ, মনোজদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়। ঈশান পোড়েল তো একই অফিসে চাকরি করে। বাকিদের সঙ্গেও কথা হল। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়াও করলাম আমরা। দারুণ একটা সময় কাটালাম।”