রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
ক্রিকেট বিশ্বের প্রচলিত ধারনা, ভারতীয় ব্যাটারেরাই সব থেকে ভাল স্পিন বল খেলেন। এই ধরনা যে অমূলক নয়, তা বারে বারে প্রমাণও করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। বিশ্বের যে কোনও দল ভারতের বিরুদ্ধে স্পিনারদের খেলানোর ক্ষেত্রে সাবধানী থাকে। অথচ দেখা গিয়েছে অচেনা স্পিনারেরাই বিভিন্ন সময় সমস্যা ফেলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটারদের। পাঁচ জন স্পিনার নিজেদের অভিষেক ম্যাচেই সমস্যায় ফেলেছেন ভারতকে।
টম হার্টলি: হায়দরাবাদের ২২ গজে ইংল্যান্ডের অভিষেককারী স্পিনার হার্টলিকে সামলাতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটারেরা। একাই ৭ উইকেট নিয়ে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নামিয়েছিলেন এভারটনের ভক্ত। ভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্টের আগে হার্টলিকে চিনত না ক্রিকেট বিশ্ব। মাত্র ৪০টি প্রথম শ্রেণির উইকেটের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন হার্টলি। হায়দরাবাদের স্পিন সহায়ক উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর সাফল্য চাপ বাড়িয়েছে রাহুল দ্রাবিড়দের। এ বারই প্রথম নয়।
নাইমুর রহমান দুর্জয়: ২০০০ ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল নাইমুরের। সেই ম্যাচেই বাংলাদেশের প্রাক্তন অফস্পিনার ৬ উইকেট নিয়ে ভারতকে বিপদে ফেলেছিলেন। ৯ উইকেটে বাংলাদেশকে সেই ম্যাচে ভারত হারালেও নাইমুরের স্পিন সামলাতে সমস্যায় পড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নাইমুরই। তাঁর শিকার তালিকায় সৌরভ ছাড়াও ছিলেন শিবসুন্দর দাস, মুরলি কার্তিক, সচিন তেন্ডুলকর, সাবা করিম এবং অজিত আগরকর।
অজন্তা মেন্ডিস: অভিষেক টেস্টেই ভারতকে সমস্যায় ফেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার রহস্য স্পিনার। কলম্বোর ২২ গজে একাই ভারতের দু’ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মেন্ডিস। তিনি আউট করেছিলেন রাহুল দ্রাবিড় (দু’বার), ভিভিএস লক্ষ্মণ (দু’বার), অনিল কুম্বলে, জাহির খান (দু’বার) এবং হরভজন সিংহকে। সেই ম্যাচে ইনিংস এবং ২৩৯ রানে হেরেছিল কুম্বলের ভারত।
জেসন ক্রেজা: অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র দু’টেস্ট খেলা ক্রেজা অভিষেক টেস্টেই সমস্যায় ফেলেছিলেন ভারতকে। নাগপুরের ২২ গজে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ক্রেজা। দ্বিতীয় ইনিংসে আউট করেছিলেন ভারতের চার ব্যাটারকে। তাঁর স্পিন সামলাতে না পারলেও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল অবশ্য ২০০৮ সালের সেই টেস্ট ১৭২ রানে জিতেছিল। অসি অফস্পিনার আউট করেছিলেন বীরেন্দ্র সহবাগ, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ (দু’বার), সৌরভ (দু’বার), ধোনি (দু’বার), জাহির (দু’বার), অমিত মিশ্র, ইশান্ত শর্মাকে। দু’ইনিংস মিলিয়ে তিনি অবশ্য খরচ করেছিলেন ৩৫৮ রান।
টড মার্ফি: গত বছর অভিষেক টেস্টে ভারতীয় দলকে বিপদে ফেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিনার মার্ফি। নাগপুরে ১২৪ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর স্পিন সামলাতে না পেরে আউট হয়েছিলেন লোকেশ রাহুল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাডেজা, শ্রীকর ভরত এবং মহম্মদ শামি। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং বিপর্যয়ের সুবাদে ইনিংস এবং ১৩২ রানে জয় পেয়েছিল রোহিত শর্মার দল।