কপিল দেব। ছবি: টুইটার।
ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন হেনরিখ ক্লাসেন। সেই ঝড়ে উড়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার যাবতীয় প্রতিরোধ। ৮৩ বলে ১৭৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ক্লাসেন শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় জয় এনে দিলেন, তাই নয়। পাশাপাশি সতীর্থ ডেভিড মিলারকে নিয়ে করলেন একাধিক রেকর্ড। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে কপিল দেবের একটি রেকর্ড।
৮৩ বলের ইনিংসে ২৬ বার বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠিয়েছেন ক্লাসেন। ১৩টি করে চার এবং ছয় মেরেছেন তিনি। শুক্রবারের ম্যাচে পঞ্চম উইকেটে মিলারের সঙ্গে ২২২ রানের জুটি তৈরি করেন ক্লাসেন। তাঁদের ৯৪ বলের জুটিই দক্ষিণ আফ্রিকার জয় এক রকম নিশ্চিত করে দেয়। মিলারের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংস। তিনি ৬টি চার এবং ৫টি ছয় মেরেছেন। ক্লাসেন আউট হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শেষ বলে।
৩২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ৩ উইকেটে ১৫৭। সেখান থেকে ক্লাসেন-মিলার জুটির তাণ্ডবে আয়োজকেরা তোলে ৫ উইকেটে ৪১৬ রান। অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়ে লজ্জার নজির গড়েছেন। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছে ২৫২ রানে। এক রানের জন্য শতরান পাননি অ্যালেক্স ক্যারে। ৯টি চার এবং ৪টি ছয়ের সাহায্যে ৭৭ বলে ৯৯ রান করেন তিনি।
১) ক্লাসেন দলকে সিরিজ়ের চতুর্থ ম্যাচ জিতিয়ে সমতা ফেরানোর পাশাপাশি একাধিক নজির গড়েছেন। তাঁর ১৭৪ রানের ইনিংস এক দিনের ক্রিকেটে পাঁচ নম্বরে নামা ব্যাটারদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে কপিলের করা ১৭৫ রান এখনও সর্বোচ্চ। শেষ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার আউট না হলে ভেঙে যেতে পারত কপিলের রেকর্ড।
২) তবে ইনিংসের ২৫ ওভারের পর নামা কোনও ব্যাটারের এটাই সর্বোচ্চ রান। ক্লাসেনের ১৭৪ রানের আগে সর্বোচ্চ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডিভিলিয়ার্সের ১৬২ রানের ইনিংস। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে সেই ইনিংস খেলেছিলেন ডিভিলিয়ার্স।
৩) ক্লাসেন-মিলার জুটি ওভার প্রতি ১৪.৪৭ রান তুলেছে। এক দিনের ক্রিকেটে ২০০ বা তার বেশি রানের জুটি ক্ষেত্রে এটাই সব থেকে বেশি। এর আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের দখলে। জস বাটলার এবং অইন মর্গ্যান ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে ২০৪ রানের জুটিতে ওভার প্রতি ১০.০৩ রান তুলেছিলেন।
৪) শুক্রবারের ম্যাচে ক্লাসেন-মিলার জুটি শেষ ১০ ওভারে তুলেছে ১৭৩ রান। এটাও এক দিনের ক্রিকেট নতুন নজির। এই রেকর্ড এত দিন ছিল ইংল্যান্ডের দখলে। গত বছর নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে শেষ ১০ ওভারে ১৬৪ রান তুলে ছিলেন ইংরেজরা।
৫) ক্লাসেন ১৫০ রান করতে নিয়েছেন ৭৭ বল। যা এক দিনের ক্রিকেটে চতুর্থ দ্রুততম। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্বিতীয় দ্রুততম। ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে ডিভিলিয়ার্স ৬৪ বলে ১৫০ রান পূর্ণ করেছিলেন।
৬) ক্লাসেন-মিলারের ২২২ রানের জুটি পঞ্চম উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দ্বিশতরানের জুটি। এর নীচের কোনও উইকেটের জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কখনও ২০০ বা তার বেশি রান ওঠেনি।
৭) দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা মোট ২০টি ছক্কা মেরেছেন শুক্রবার। এক দিনের ক্রিকেটে যা দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালেও ভারতের বিরুদ্ধে ২০টি ছয় মেরেছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটারেরা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ছয় মারার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নজির। এই রেকর্ড রয়েছে ইংল্যান্ডের দখলে। ২০১৮ সালে ইংরেজরা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২১টি ছক্কা মেরেছিলেন।
৮) এক দিনের ক্রিকেটে এই নিয়ে সপ্তম বার ৪০০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্লাসেনরা ছাপিয়ে গেলেন ভারতকে। এক দিনের ক্রিকেটে ভারতের ৪০০ বা তার বেশি রানের ইনিংস রয়েছে ছ’টি।