দিলীপ বেঙ্গসরকর এবং কেএল রাহুল। —ফাইল চিত্র।
বিরাট কোহলিকে ওয়ান ডে দলের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরে রোহিত শর্মাকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়ক করা হয়। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য রোহিত ফিট হতে না পারায় ওয়ান ডে দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কে এল রাহুলকে। আইপিএলে যাঁর নেতৃত্বের রেকর্ড অত্যন্ত খারাপ। পঞ্জাব কিংসকে ট্রফি দেওয়া তো দূরের কথা, শেষ দু’বছরে ষষ্ঠ স্থানেই থেমে যেতে হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বেই দক্ষিণ আফ্রিকার অনভিজ্ঞ দলের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ়ে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফিরছে ভারত।
অধিনায়ক হিসেবে কে এল রাহুলের অভিজ্ঞতা খুব একটা নজর কাড়ার মতো নয়। তা হলে এমন একজন অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটা নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়ার পরে কী আশা করা যায়? প্রশ্ন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকরের। তিনি মনে করেন, দল ভাল হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটি থেকে সিরিজ় জিতে ফেরা সহজ নয়। এক বছর আগে তিনটি ফর্ম্যাটের একটিতেও যিনি জায়গা পাচ্ছিলেন না, রাতারাতি সেই রাহুলকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় কী ভাবে?
দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচক কমিটির প্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘কর্নেল’। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আনন্দবাজারকে সোমবার বেঙ্গসরকর বলছিলেন, ‘‘একটি দল গঠন করার সময় অনেক কিছু মাথায় রাখতে হয়।’’ যোগ করেন, ‘‘শেষ শ্রীলঙ্কা সফরে ভারত যে দল পাঠিয়েছিল, তার নেতা ছিল শিখর ধওয়ন। ভেবেছিলাম, ভবিষ্যতের কথা ভেবেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত।’’ এখানেই না থেমে বেঙ্গসরকর বলে চলেন, ‘‘রোহিত চোট পাওয়ার পরে মনে হয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাদা বলের ক্রিকেটে ধওয়নকেই হয়তো দায়িত্ব দেওয়া হবে। যে হেতু নেতা হিসেবে শ্রীলঙ্কা সফরে ওকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাহুলকে অধিনায়ক হতে দেখে অবাক হয়েছি।’’
রাহুলের যদিও কোনও দোষ দেখছেন না বেঙ্গসরকর। তিনি বলছিলেন, ‘‘কোনও একটি উদ্দেশ্য নিয়ে তো দল গড়তে হয়। যাকে অধিনায়ক হিসেবে ভবিষ্যতে দেখা হচ্ছে, জুনিয়র স্তর থেকেই তাকে তৈরি করতে হয়। বর্তমানে এমন কোনও ক্রিকেটার কি নজরে পড়ছে যাকে জুনিয়র স্তর থেকে অধিনায়ক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে?’’
বেঙ্গসরকর ক্ষুব্ধ ঋষভ পন্থের খেলার ধরনেও। তিনি মনে করেন, পন্থের উপরে কখনওই ভরসা করা যায় না। একটি হারা ম্যাচ যেমন জিতিয়ে দিতে পারেন, ঠিক তেমনই হাতের মুঠোর মধ্যে থাকা ম্যাচ বিপক্ষের হাতে তুলে দিয়ে আসতে পারেন। যা ব্যাখ্যা করেও বুঝিয়ে দিলেন। বেঙ্গসরকরের কথায়, ‘‘আশা করেছিলাম, শেষ ম্যাচে বিরাটের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে আরও ভাল জায়গায় পৌঁছে দেবে। ও যখন ব্যাট করতে নেমেছিল, ভারতের রান তখন দুই উইকেটে ১১৬। হাতে ২৭ ওভার। সেই পরিস্থিতিতে খুচরো রান নিলেই ম্যাচ আয়ত্তে চলে আসে। নিঃসন্দেহে ঋষভ আগ্রাসী ক্রিকেটার, কিন্তু প্রথম বলই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো ব্যাট চালাবে? শট নির্বাচনের বিষয়ে অনেক উন্নতি করতে হবে ওকে।’’ আরও বলছিলেন, ‘‘ভারতীয় দলে ঋষভের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও কিপার নেই। যাকে দেখে ওর মনে হতে পারে, আমি ভাল না খেললে অন্য একজন দলে চলে আসবে। তাই হয়তো পার পেয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে ওকে শট নির্বাচনের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। নিঃসন্দেহে ঋষভ ম্যাচউইনার। এই একটি গলদ কাটিয়ে উঠতে পারলে ভবিষ্যতের সম্পদ হয়ে উঠবে পন্থ।’’