ক্লাব দুষছে বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-কে। সিএবি দুষছে ক্লাবকে। —ফাইল চিত্র
দোষারোপের পালা বাংলার ক্রিকেটে। ক্লাব দুষছে বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-কে। সিএবি দুষছে ক্লাবকে। আর সব কিছুর মধ্যে ক্রিকেট জীবন শেষ হয়ে যেতে চলেছে বাংলার ক্রিকেটারের।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মঙ্গলবার সিএবি-র প্রথম ডিভিশনে ভবানীপুর বনাম কালীঘাট ম্যাচে বল করেন ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক, জটিলতা।
ঋত্বিকের উপর ক্রুদ্ধ সিএবি। সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন যে, তিনি ঋত্বিককে ডেকে পাঠাবেন। জানতে চাইবেন কেন ও বল করল। সব জেনেশুনে ঋত্বিকের বল করা উচিত হয়নি বলেই মনে করছেন স্নেহাশিস। ঋত্বিকের ক্লাব ভবানীপুর যদিও বলছে যে, তারা জানতই না যে ঋত্বিক বল করতে পারবেন না।
আনন্দবাজার অনলাইনকে সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস বললেন, “বোর্ড মেল করে আমাদের জানিয়েছিল যে ঋত্বিক বল করতে পারবে না। সেই কারণে রঞ্জি দলে রাখা হয়নি ওকে। ঋত্বিক নিজে সেটা ভাল করে জানে। ক্লাবের হয়ে সেই কারণে এত দিন বল করেনি ও। হঠাৎ মঙ্গলবার ও কেন বল করল জানি না। আমি ওর কাছে জানতে চাইব কেন বল করল ও। যদি ঋত্বিক বলে যে ও জানত না, আমি সমস্ত কাগজ দেখাব।”
কিন্তু সিএবির তরফে কি ভবানীপুরকে জানানো হয়েছিল যে ঋত্বিককে বল করানো যাবে না? ভবানীপুর ক্লাবের কোচ আব্দুল মোনায়েম আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “না, সিএবির তরফে আমাদের কোনও কিছু জানানো হয়নি। তবে মঙ্গলবার রাতে আমার সঙ্গে স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে। ঋত্বিককে বল করাতে বারণ করা হয়েছে। আজকে আর বল করছে না ও।” স্নেহাশিস বললেন, “এটা ঠিক যে, আমাদের তরফে ভবানীপুর ক্লাবকে আলাদা করে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু ক্রিকেটার নিজে তো জানে যে তার বল করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তার পরেও সে বল করল কেন? ময়দানে সকলেই জানে ঋত্বিক এবং অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটার যুধাজিত গুহের বল করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভবানীপুর সেটা জানে না? যুধাজিত তো বল করে না ক্লাব ক্রিকেটে খেলার সময়।”
মঙ্গলবার ভবানীপুরের হয়ে ৬ ওভার বল করেছিলেন ঋত্বিক। ১৪ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। কোচ মুনায়েম আফসোস করে বললেন, “স্পিনিং ট্র্যাকে খেলা হচ্ছে। ঋত্বিক বল করলে আমরা অনেক আগেই কালীঘাটকে অলআউট করে দিতাম।” ২০২২ সালের আইপিএলের নিলামে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ঋত্বিককে কিনেছিল পঞ্জাব কিংস। এ বছর যদিও তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে তারা।
৩০ বছরের ঋত্বিক প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৬ ম্যাচে ৬৯৮ রান করেছেন। নিয়েছেন ১০ উইকেট। সাদা বলের ক্রিকেটে ঋত্বিককে নিয়ে যথেষ্ট আশা দেখে বাংলা। লিস্ট এ ক্রিকেটে ২৫ ম্যাচে ৩৫৪ রান রয়েছে তাঁর। নিয়েছেন ১৬ উইকেট। দলের ভারসাম্য রাখার জন্য ঋত্বিকের মতো অলরাউন্ডারকে চাইত বাংলা। যদিও শাহবাজ় আহমেদ দলে থাকায় অনেক সময়ই প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া হত না ঋত্বিকের। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বল করে নিজের বিপদ ডেকে আনলেন তিনি। সিএবি প্রশ্ন করলে, উত্তর দেওয়ার জন্যও তৈরি থাকতে হতে পারে ঋত্বিককে।
ঋত্বিকের বল করার ভঙ্গি নিয়মবিরুদ্ধ বলে জানিয়েছে বিসিসিআই। বল করার সময় ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কনুই ভাঙা যায়। তার বেশি ভাঙলে সেই বল অবৈধ। বাংলার স্পিন অলরাউন্ডার ঋত্বিকের কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি ভাঙে। সেই কারণে রঞ্জি ট্রফির দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।