সতীর্থ মেহেদি হাসান মিরাজের (বাঁ দিকে) সঙ্গে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: পিটিআই।
তবে কি খেলা শেষ হওয়ার আগেই হার মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ? চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট জিততে ভারতের দরকার আর ৬ উইকেট। বাংলাদেশের চাই এখনও ৩৫৭ রান। এখনও দু’দিনের খেলা বাকি। যা পরিস্থিতি তাতে ভারত এগিয়ে থাকলেও এখনও হারেনি বাংলাদেশ। যদিও এখন থেকেই দলের ব্যাটারদের দোষ দেওয়া শুরু করেছেন ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প। প্রথম ইনিংসে দলের ব্যাটারেরা যে ভাবে খেলেছেন তাতে হতাশ তিনি। এক বারও এই ম্যাচে ফেরার কোনও কথা শোনা যায়নি তাঁর মুখে।
তৃতীয় দিনের খেলার পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন হেম্প। সেখানে তিনি টেনে আনেন আগের দিনের প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় ১৪৪ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল ভারতের। সেখান থেকে ৩৩৯ রান করে তারা। পরে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মাত্র ১৪৯ রানে শেষ হয়ে যায়। সেখানেই তারা পিছিয়ে পড়ে। সেই কথাই তুলে ধরেছেন হেম্প। তিনি বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম দিন আমরা ভাল জায়গায় ছিলাম। সেখান থেকে ওদের খেলায় ফিরতে দিয়েছি। আমরা প্রথম ইনিংসে খুব খারাপ ব্যাট করেছি। কেউ ক্রিজ়ে সময় কাটাতে পারেনি। তাড়াহুড়ো করেছে। আমি মনে করি, আমার দলের ব্যাটারেরা যা খেলেছে তার থেকে ভাল খেলার ক্ষমতা রাখে। ওদের অন্তত আরও বেশি বল খেলতে পারত। সেখানেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি।”
প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে অনেক ভাল ব্যাট করছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার শুরুটা ভাল করেছেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অর্ধশতরান করে খেলছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁদের ব্যাটিং প্রথম ইনিংসের তুলনায় ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন হেম্প। তিনি বলেন, “প্রথম ইনিংসের থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা ভাল ব্যাট করেছি। ব্যাটারেরা ক্রিজ়ে অনেক বেশি সময় কাটিয়েছে। ভারতের বোলিং আক্রমণ বেশ ভাল। ওরা উইকেট লক্ষ্য করে বল করেছে। আমাদের বেশি হাত খোলার সুযোগ দেয়নি। কিন্তু ক্রিজ়ে পড়ে থাকলে রান আসবে। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা সেটা দেখিয়েছি। কিন্তু প্রথম ইনিংসে করতে পারিনি। তার জন্যই এই অবস্থা।”
তৃতীয় দিনের শেষে ক্রিজ়ে রয়েছেন শান্ত ও শাকিব আল হাসান। এখনও লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ নামেননি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দেখিয়েছে ২৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও ২৬২ রান করা যায়। তা হলে ভারতের বিরুদ্ধে সেটা কেন করতে পারবে না তারা? হেম্পের গলায় জয়ের আশা শোনা যায়নি। তিনি বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে রান করা চ্যালেঞ্জ। সেটা আমাদের শিখতে হবে। আমরা যখন এই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করতে বসব তখন কোথায় ভুল হয়েছে তা খতিয়ে দেখব। কী ভাবে সেই সমস্যা মেটানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তবেই আমরা ভাল করতে পারব।”
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাটারদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ফেলেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চতুর্থ দিন তাঁর বল খেলতে সমস্যা হবে বলে মনে করেন হেম্প। তিনি বলেন, “অশ্বিনের কিছু বল অতিরিক্ত বাউন্স হচ্ছে। সেই সব বল খেলা কঠিন। কিন্তু তার মধ্যেই আমাদের রান করতে হবে। পিচ এখনও ব্যাটিংয়ের জন্য ভাল। দেখা যাক কাল কী হয়।”
বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তাঁরা হয়তো ধরে নিয়েছেন এই টেস্টে আর ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই। সেই কারণেই ভবিষ্যতের কথা ভাবতে শুরু করেছেন। ভুল শোধরানোর কথা ভাবতে শুরু করেছেন। তবে কি এখন থেকেই হার মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ? হেম্পের কথা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।