স্ত্রী বিনির সঙ্গে ম্যাক্সওয়েল। ছবি: টুইটার।
তিনি ভারতের জামাই। তাঁর স্ত্রী বিনি রামন চেন্নাইয়ের অনাবাসী চিকিৎসক। অস্ট্রেলিয়াতেই আলাপ, প্রণয়, বাগ্দান, বিয়ে। আইপিএলের আগে চেন্নাইয়েও ঘটা করে হয়েছে ভারতীয় রীতি মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান। সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দাবি, স্ত্রী ভারতকে যতটা না চেনেন, তিনি তার থেকে শ্বশুরবাড়ির দেশকে অনেক বেশি চেনেন।
অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতই তাঁর প্রিয় দেশ। আগেই বলেছিলেন অজি অলরাউন্ডার। কারণ অবশ্য তখন খোলসা করেননি। বিনির সঙ্গে সম্পর্কের কথা গোপন রেখেছিলেন। আইপিএল খেলতে প্রতি বছরই ভারতে আসেন। কাটিয়ে যান বেশ কিছু দিন। ভারতের একাধিক ক্রিকেটারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ভারতীয় পোশাক, খাবার সব কিছুই পছন্দ করেন ম্যাক্সওয়েল। ভারতের বিরুদ্ধেই তাঁর টেস্ট অভিষেক ২০১৩ সালে। তাই তাঁর আশা, আগামী বছর ভারতের বিরুদ্ধে আবার টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন।
পাঁচ বছর টেস্ট, তিন বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট না খেলা ম্যাক্সওয়েলকে হঠাৎ কেন টেস্ট খেলাবে অস্ট্রেলিয়া? কারণ নিজেই জানিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। মজা করে বলেছেন, ‘‘আমার ভারতীয় স্ত্রীর তিনগুণ বেশি সময় ভারতে থাকি। ভারতের আবহাওয়া আমার পরিচিত। ভারতীয়দের সঙ্গে সহজে মিশতে পারি। ভারতে প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। ওখানকার মাঠগুলো আমার চেনা। ভারত এমন একটা দেশ, যেখানে আমি দারুণ স্বচ্ছন্দ।’’ ভারতের খেলার অভিজ্ঞতাই তাঁকে আগামী টেস্ট সিরিজে মাঠে নামার সুযোগ করে দেবে বলে মনে করেন ম্যাক্সওয়েল। ৩৩ বছরের ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘সুযোগ পেলে স্বচ্ছন্দে খেলতে পারব বলেই মনে হয়। আমার সফল হওয়ারও ভাল সম্ভাবনা থাকবে।’’
তাঁকে আশাবাদী করেছে তিন বছর পর অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে ডাক পাওয়া।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট দলে ফিরলেও প্রথম একাদশে সুযোগ হয়নি। তা নিয়ে আগেই হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। অজি অলরাউন্ডার হাল ছাড়তে নারাজ। দেশের হয়ে আবার টেস্ট খেলাই লক্ষ্য ম্যাক্সওয়েলের।
১০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনে খেলেছেন মাত্র সাতটি টেস্ট। শেষ টেস্ট ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। দলে থাকলেও আর দেশের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি ম্যাক্সওয়েলের। কিছুটা হতাশা থেকেই ২০১৯ সালের পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলেননি তিনি। মনঃসংযোগ করেছিলেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। সম্প্রতি মত বদলেছেন ৩৩ বছরের অলরাউন্ডার। শেফিল্ড শিল্ডে খেলছেন ম্যাক্সওয়েল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘‘অনেক দিন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলিনি। বেশ উত্তেজিত লাগছে। ক্রীড়াসূচি ভাল করে দেখলাম। বিগ ব্যাশের আগে শেফিল্ড শিল্ডের দুটো ম্যাচ খেলতে পারব। আমি আশাবাদী। লাল বলের ক্রিকেট খেলার দক্ষতা আমার রয়েছে।’’
আবার পাঁচ দিনের ক্রিকেটে ফেরার কথা কেন ভাবলেন? ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কা সফরের দলে সুযোগ পাওয়ায় ভাবনা বদলেছে। এত দিন পর দলে ডাক পেলাম। এটাই আমাকে উজ্জীবিত করেছে। মাঠে নেমে টেস্ট ক্রিকেটের উত্তাপ নিতে চাই। লাল বলের ক্রিকেটে ঠিক কোন জায়গায় রয়েছি, যাচাই করতে চাই। ভীষণ ভাবে টেস্ট খেলতে চাইছি। আশা করছি অস্ট্রেলিয়ার পরের টেস্ট দলেও সুযোগ পাব।’’