Ashes 2023

টেস্টের ইতিহাসে নতুন নজির, অ্যাশেজে বাজ়বল ক্রিকেটে নিজেদের রেকর্ড-ই ভাঙল ইংল্যান্ড

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে নতুন নজির গড়লেন ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটার। তাঁরা ভাঙলেন নিজেদের দুই সতীর্থের সাত বছর আগের রেকর্ড।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ১৯:৩০
Share:

জ্যাক ক্রলি। ছবি: আইসিসি।

ব্রেন্ডন ম্যাকালামের প্রশিক্ষণে বেন স্টোকসেরা বদলে দিচ্ছেন টেস্ট ক্রিকেট সম্পর্কে ধারনা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— সব ক্ষেত্রেই আগ্রাসী মেজাজে দেখা যাচ্ছে ইংরেজদের। তাঁদের ক্রিকেট খেলার নতুন ধরণের সুবাদে হচ্ছে নানা রেকর্ড। অ্যাশেজ সিরিজ়ের চতুর্থ টেস্টে একটি কীর্তি গড়লেন ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটার।

Advertisement

ইংল্যান্ডের বাজ়বল (ইংল্যান্ডের কোচ ম্যাকালাম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাচ্ছেন দলকে। যেহেতু তাঁর ডাকনাম ‘বাজ়’, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটকে বাজ়বল বলা হচ্ছে।) ক্রিকেট নজর কেড়েছে ক্রিকেট বিশ্বের। সেই ক্রিকেটের হাত ধরে টেস্টে দ্রুততম ২০০ বা তার বেশি রানের জুটির নজির তৈরি করলেন জ্যাক ক্রলি এবং জো রুট। অ্যাশেজ সিরিজ়ের চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটারের জুটিতে উঠল ১৭৮ বলে ২০৬ রান। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে ওভার প্রতি ৬.৯৪ রান করে তুলেছেন তাঁরা। প্রায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজে রান তুলেছেন ক্রলি এবং রুট। দুই সতীর্থের বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছে ক্রলি-রুট জুটি। এর আগের নজির ছিল ইংল্যান্ডেরই জনি বেয়ারস্টো এবং বেন স্টোকসের দখলে। তাঁরা ২০১৬ সালে কেপ টাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩৪৬ বলে ৩৯৯ রান করেছিলেন। ওভার প্রতি তাঁরা রান তুলেছিলেন ৬.৯১।

এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট এবং ম্যাথু হেডেন। ২০০৩ সালে পার্থে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তাঁদের জুটিতে উঠেছিল ২০৩ বলে ২৩৩ রান। তাঁরা ওভার প্রতি ৬.৮৮ রান করে তুলেছিলেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের ক্রলি এবং বেন ডাকেটের একটি জুটি। ২০২২ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাওয়ালপিন্ডিতে তাঁরা ২১৪ বলে ২৩৩ রান করেছিলেন। ওভার প্রতি ৬.৫৩ রান করে তাঁরা সেই ম্যাচে তুলেছিলেন। তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার এবং জো বার্নসের জুটি। ২০১৫ সালে ব্রিসবেনে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২২৬ বলে ২৩৭ রান করেছিলেন। ওভার প্রতি ৬.২৯ রান তুলেছিলেন তাঁরা। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডিভিলিয়ার্স এবং গ্রেম স্মিথের জুটি। ২০০৫ সালে কেপটাউনে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২০৯ রানে ২১৭ রান তুলেছিলেন তাঁরা। ওভার প্রতি ৬.২২ রান উঠেছিল তাঁদের জুটিতে।

Advertisement

ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ৩১৭ রানের জবাবে দ্রুত বড় রান তোলার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামেন স্টোকসেরা। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে নতুন রেকর্ড গড়েছেন ক্রলি এবং রুট।

অ্যাশেজ সিরিজ় মানে শুধু ক্রিকেট নয়। এই সিরিজ়ের সঙ্গে জড়িত দু’দেশের মর্যাদার প্রশ্ন। জড়িয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। যা কিছুটা ব্যাঙ্গাত্মক। খানিকটা শোকেরও। ১৮৮২ সালে ওভালে আয়োজিত টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম হেরেছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেড স্পফোর্থের অনবদ্য বোলিংয়ের কাছে হারতে হয়েছিল ইংরেজদের। চতুর্থ ইনিংসে ৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। স্পফোর্থ ৪৪ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। ০-১ ব্যবধানে সিরিজ় হেরে গিয়েছিল। পরের দিন ইংল্যান্ডের সংবাদ পত্র ‘দ্য স্পোর্টিং টাইমস্‌’ তাদের প্রতিবেদনে ক্রিকেট দলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। লেখা হয়েছিল, ইংরেজ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রাখল ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংরেজ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে দেওয়া হয়েছে। এর পরের বছর সিরিজ় পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় যায় ইংল্যান্ড। সংবাদমাধ্যমের ব্যঙ্গ মনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আইভো ব্লাই বলেছিলেন, তাঁরা অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছেন।

সে সময় কয়েকজন অস্ট্রেলীয় মহিলা ব্লাইকে আগের সিরিজ়ে পরাজয় নিয়ে পাল্টা ব্যঙ্গ করে ছাই ভর্তি একটি পাত্র দিয়েছিলেন। যাতে ছিল উইকেটের উপরে থাকা বেলের ছাই। তার পর থেকে দু’দেশের টেস্ট সিরিজ় ‘অ্যাশেজ’ বলে পরিচিত হয়। ব্লাই অবশ্য ছাইয়ের সেই আধারটি ব্যক্তিগত উপহার হিসাবে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। বিজয়ী দলকে ট্রফি হিসাবে তা দেওয়া হত না তখন। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী লর্ডসে এমসিসি জাদুঘরে সেই পাত্রটি দান করে দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement