শর্তসাপেক্ষে চুক্তি সই বাবরদের। ফাইল ছবি।
কয়েক দিন অচলাবস্থা চলার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সই করলেন প্রথম সারির ক্রিকেটাররা। অধিনায়ক বাবর আজম, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মহম্মদ রিজওয়ানরা চুক্তির কিছু অংশ পরিবর্তনের দাবি জানান। বোর্ড কর্তাদের থেকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পাওয়ার পর তাঁরা চুক্তিপত্রে সই করলেন।
চুক্তিপত্র হাতে পাওয়ার পর প্রায় সপ্তাহ খানেক পিসিবি কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বাবররা। কিছু অংশ নিয়ে আপত্তি জানান তাঁরা। সেগুলি পরিবর্তন করার দাবি জানান পাকিস্তানের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। সূত্রের খবর, মূলত বিদেশে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলার ছাড়পত্র এবং আইসিসির প্রতিযোগিতায় খেলা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে আপত্তি তোলেন বাবররা।
বোর্ড কর্তারা তাঁদের দাবি মেনে নেন। তার পরেই নেদারল্যান্ডস সফরে যাওয়ার আগে পিসিবির চুক্তিতে শর্তসাপেক্ষে সই করেছেন বাবররা। ঠিক হয়েছে, এশিয়া কাপের পর জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা দেশে ফিরলে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। তখন ক্রিকেটারদের আপত্তির বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং সমাধানের পথ খোঁজা হবে।
২০২২-২৩ মরসুমের জন্য মোট ৩৩ জন ক্রিকেটারকে কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় আনার কথা জানিয়েছে পিসিবি। সাদা বলের ক্রিকেট এবং লাল বলের ক্রিকেটের জন্য আলাদা চুক্তি করা হচ্ছে বাবরদের সঙ্গে। লাহৌরে প্রস্তুতি শিবিরের শুরুতেই ক্রিকেটারদের হাতে চুক্তি সংক্রান্ত কাগজ তুলে দেন পাক ক্রিকেট কর্তারা। কিন্তু তখন কেউই সই করেননি। ক্রিকেটাররা সে সময় জানান, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পর চুক্তি সই করবেন।
অতীতে কেন্দ্রীয় চুক্তি নিয়ে পিসিবি কর্তাদের কখনও এমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। ক্রিকেটাররা সাধারণত চুক্তিপত্র হাতে পেলে তা সই করে দিতেন। এ বারও ১২-১৩ জন জুনিয়র ক্রিকেটার সঙ্গে সঙ্গে সই করে দেন। কিন্তু বেঁকে বসেন বাবর, শাহিন, রিজওয়ানদের মতো সিনিয়ররা। তাঁরা ছাড়াও আপত্তি জানান শাদাব খান, ফখর জামান, হাসান আলির মতো যাঁরা সাদা বল এবং লাল বল— দু’ধরনের চুক্তিতেই রয়েছেন সেই ক্রিকেটাররা।
তাঁদের আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা সমাধানে রাজি হন পাক ক্রিকেট কর্তারা। পিসিবির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংক্রান্ত ডিরেক্টর জাকির খান ক্রিকেটারদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন। পাক বোর্ডের সিইও ফয়জায় হাসনাইন এবং সিওও সলমন নাসিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
চুক্তি অনুযায়ী পাক ক্রিকেটাররা প্রতি টেস্ট ম্যাচের জন্য ৮,৩৮,৫৩০ পাকিস্তানি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন লক্ষ সাত হাজার টাকা), প্রতি এক দিনের ম্যাচের জন্য ৫,১৫,৬৯৬ পাকিস্তানি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা) এবং প্রতিটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য ৩,৭২,০৭৫ পাকিস্তানি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা) ম্যাচ ফি হিসাবে পাবেন। এ ছাড়াও লাল বলের ক্রিকেটের জন্য চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা প্রতি মাসে ১০,৫০,০০০ পাকিস্তানি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা) বেতন হিসাবে পাবেন। সাদা বলের জন্য চুক্তিবদ্ধরা প্রতি মাসে ৯,৫০,০০০ পাকিস্তানি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা) বেতন পাবেন।