সতর্ক: সংক্রমণ রুখতে গৃহবন্দির আবেদন সুনীলের। ফাইল চিত্র
ভারতের ফুটবল দলের অধিনায়ক তিনি। কিন্তু বাড়তে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সুনীল ছেত্রী যে, এই মুহূর্তে ফুটবল নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না। বেঙ্গালুরুর বাড়িতে সাত দিন ধরে সস্ত্রীক স্বেচ্ছাবন্দি তিনি। সংক্রমণ রুখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ফিফা মিলিত ভাবে যে ২৮ জন প্রাক্তন ও বর্তমান ফুটবলারকে নিয়ে প্রচার অভিযানে নামতে চলেছে, তাতে লিয়োনেল মেসির সঙ্গে রয়েছেন তিনিও। উদ্বেগের আবহেই আনন্দবাজারকে ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন জাতীয় দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
ভাবনায় নেই ফুটবল: এই মুহূর্তে ফুটবলের কথা ভাবতে পারছি না। এখন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সাবধানে থাকা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে ভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, সব কিছু স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে বলেই আমার ধারণা। আগে সব কিছু স্বাভাবিক হোক, তার পরে ফুটবল নিয়ে ভাবব।
গৃহবন্দি থাকুন: সাত দিন হয়ে গেল, আমি ও সোনম বাড়ির বাইরে পা রাখিনি। সকলের কাছে আমার প্রার্থনা, চেষ্টা করুন বাড়ির বাইরে না বেরোতে। এড়িয়ে চলুন সামাজিক মেলামেশা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি ভক্তদেরও অনুরোধ করেছি বাড়ির বাইরে না বেরোতে। ওঁদের বলেছি করোনাভাইরাসকে রোখার সব চেয়ে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে নিজেদের গৃহবন্দি করে রাখা। হয়তো অনেকের পক্ষেই তা সম্ভব নয়। যেমন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশকর্মী, সেনাবাহিনী ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যাঁরা আছেন, তাঁদের সবার পক্ষে বাড়িতে থাকা সম্ভব নয় তা আমি জানি। বাকিরা চেষ্টা করুন বাড়ির বাইরে না বেরোতে। যাঁরা বাধ্য হচ্ছেন বাইরে বেরোতে, তাঁদের প্রতি আমার অনুরোধ— ভিড় এড়িয়ে চলুন। একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। ভাল করে বার বার করে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে একদম ভুলবেন না। এই মুহূর্তে আমার বাবা-মা দিল্লিতে রয়েছেন। ওঁদেরও বলে দিয়েছি বাড়িতে থাকতে। পরিচিত সকলকেই ফোন করে একই অনুরোধ করছি।
খাবার যেন নষ্ট না হয়: এখন আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সব কিছু নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে একেবারেই খাবার-দাবার নষ্ট করা চলবে না। যতটুক প্রয়োজন, ঠিক ততটাই রান্না করুন। সতর্ক থাকুন যাতে সামান্যতম খাবারও নষ্ট না হয়। কত দিন এ ভাবে আমাদের থাকতে হবে কেউ জানি না, তাই দেখেশুনে পদক্ষেপ করতে হবে।
নতুন মরসুমের প্রস্তুতি: আমার হ্যামস্ট্রিংয়ে সামান্য চোট রয়েছে। তা-ই বিশ্রাম দরকার। তবে ফিট থাকার জন্য হাল্কা ট্রেনিং করছি। যেমন পুশ-আপ, সিট-আপ। এ ছাড়া পেটের পেশির শক্তি বাড়ানোর নানা অনুশীলনও চলছে। তবে পরের মরসুম নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তিত নই। হাতে অনেক সময় রয়েছে। ধীরে-সুস্থে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে হবে।
আত্মসমালোচনা: ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, আরও ভাল কিছু করতে পারতাম। প্রচুর গোল নষ্ট না করলে হয়তো ফল আরও ভাল হতো। নিজের খেলা বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, যে গোলগুলো আমি নষ্ট করেছি, তা অনায়াসে করতে পারতাম। অবশ্য ফুটবলে এ রকম হয়। সকলের সব মরসুম সমান যায় না। সাফল্য ও ব্যর্থতা থাকবেই। কিন্তু পরিস্থিতি যাই হোক, চেষ্টা করতে হবে সব সময় নিজের সেরাটা দিতে। আমাকে আরও সময় দিতে হবে ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নেওয়ার জন্য।