ইউরো পিছিয়ে গেল এক বছর, স্থগিত কোপা
Football

রোনাল্ডো থেকে মেসি, করোনার ধাক্কা ফুটবলের দুই গোলার্ধে

অতিমারির জেরে ইউরোপের প্রায় সব দেশেই ঘরোয়া লিগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগের সব ম্যাচও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০৪:২৮
Share:

বাতিল: এ বছর হচ্ছে না ইউরো কাপ। নিয়নে শুনশান উয়েফার দফতর। —ছবি এএফপি

করোনাভাইরাস অতিমারির জেরে ইউরো ২০২০ এক বছর পিছিয়ে গেল। এই খবর প্রথমে জানিয়েছিল নরওয়ে ফুটবল সংস্থা, তাদের সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টুইটারে। পরে এই খবরের সত্যতা প্রতিষ্ঠিত হয় উয়েফার সরকারি ঘোষণায়। নতুন সূচি অনুযায়ী ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে সব চেয়ে বড় এই ফুটবল টুর্নামেন্ট হবে ২০২১-এর ১১ জুন থেকে ১১ জুলাই।

Advertisement

মঙ্গলবারই উয়েফা তার সদস্য দেশগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে করে। ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা অবশ্য ঠিক সভার পরেই সরকারি ভাবে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। অপেক্ষাটা ছিল উয়েফার কার্যকরী সমিতির সভায় বিষয়টির চূড়ান্ত অনুমোদনের। এবং তা অনুমোদিত হতেই উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার সেফারিন সরকারি ভাবে টুর্নামেন্ট এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

অতিমারির জেরে ইউরোপের প্রায় সব দেশেই ঘরোয়া লিগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগের সব ম্যাচও। এই দু’টি টুর্নামেন্টেই শেষ ষোলো পর্যায়ের খেলা চলছিল। এখন ইউরো এক বছর পিছিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সব দেশই তাদের ঘরোয়া লিগ শেষ করার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগ শেষ হওয়ারও একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।

Advertisement

ইউরোর ইতিহাসে এই প্রথম টুর্নামেন্ট এক বছর পিছিয়ে গেল। তাই এই টুর্নামেন্টকে ইউরো ২০২০ আর বলা যাচ্ছে না। এখন বলতে হবে, ইউরো ২০২১। অবশ্য ২৪ দেশকে নিয়ে ইউরোপের এই ফুটবল টুর্নামেন্টই শুধু নয়, ১ লক্ষ ৮০ হাজার সংক্রমিত মানুষের কথা মাথায় রেখে আরও অনেক টুর্নামেন্টই বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবারই ইউরোর মতোই এক বছর পিছিয়ে গেল কোপা আমেরিকাও। যে ঘোষণা করেছে লাতিন আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)। এই বছরের ১২ জুন থেকে ১২ জুলাই লিয়োনেল মেসি, নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রদের নিয়ে এই টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিল। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী টুর্নামেন্ট হতে পারে পরের বছর (২০২১) ঠিক একই সময়ে।

কোপা আমেরিকাও পিছিেয় দেওয়া হল। —ফাইল চিত্র

ইউরো পিছিয়ে যাওয়ার খবরটা নিজেদের টুইটারে প্রথম ফাঁস করে নরওয়ের ফুটবল সংস্থা। পরে অবশ্য কাযর্করী সমিতির অনুমোদন পেয়ে সরকারি ভাবে তা ঘোষণা করা হয়। উয়েফার প্রেসিডেন্ট সেফারিন বলেন, ‘‘ইউরোপীয় ফুটবলটা আমরাই পরিচালনা করি। বহু মানুষের রুটিরুজি এর সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু মারণ-ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ এই মুহূর্তে আমাদের সবার সব চেয়ে বড় শত্রু। এমন একটা সময় ফুটবল-সমাজকে তাদের দায়িত্ববোধ দেখাতে হবে। নিজেদের একতাবদ্ধ থাকাটাও জরুরি। সেই সঙ্গে এই অতিমারির বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের পাশে থাকাও দরকার।’’

নিজের দীর্ঘ বিবৃতিতে সেফারিন যোগ করেছেন, ‘‘ফুটবলের ভক্ত, এই খেলাটার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য কর্মী এবং ফুটবলারদের স্বাস্থ্যই আমাদের কাছে সবার আগে। ইউরো শেষ করার জন্য উয়েফা বেশ কিছু বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলেছিল। আমাদের সংস্থার সদস্যদের প্রতিক্রিয়া জেনে গর্বই হচ্ছে। সত্যি সত্যিই একযোগে সিদ্ধান্ত নেওয়া গিয়েছে। আমাদের ঐক্যমত্য নিয়ে কোনও প্রশ্নই থাকতে পারে না। প্রত্যেকেই স্বীকার করেছে সেরা ফল পাওয়ার জন্য খেলা সংক্রান্ত স্বার্থ বিসর্জন দিতেই হবে।’’

এখানেই থামেননি উয়েফা প্রেসিডেন্ট। আরও বলেছেন, ‘‘এমনিতে আমার মনে হয় সব চেয়ে বড় স্বার্থত্যাগটা উয়েফাই করেছে। ইউরো ২০২০-কে এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হল। এর জন্য বিশাল আর্থিক ক্ষতি মেনে নিয়েই। তবে নতুন সূচিতে টুর্নামেন্ট করার জন্য ৫৫ দেশের যাবতীয় ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রাথমিক স্তরে ও মেয়েদের ফুটবলে উন্নতি যাতে কোনও ভাবেই ব্যাহত না হয়, তা-ও দেখা হবে।’’

উয়েফা এ-ও জানিয়েছে যে, তাদের লক্ষ্য সব দেশের ঘরোয়া লিগ শেষ করা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরে। সব কিছুই নির্ভর করবে এই মাসের শেষে পরিস্থিতি কেমন থাকে, তার উপরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement