পরীক্ষা: নতুন পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকছেন ঈশান। ফাইল চিত্র
করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে ক্রিকেটে কী কী পরিবর্তন দেখা যাবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের তরুণ পেস বিভাগ নিশ্চিত, থুতু দিয়ে বল পালিশ করার ক্ষেত্রে হয়তো পরিবর্তন আসতে চলেছে।
নবদীপ সাইনি, দীপক চাহার, ঈশান পোড়েলরা তাই থুতুর ব্যবহার ত্যাগ করতে প্রস্তুত। দীপক নিজের বাড়িতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বল পালিশ করাও ছেড়ে দিচ্ছেন ধীরে ধীরে। সমস্যা হলেও দ্রুত তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বলে থুতু ও ঘাম লাগিয়ে চকচকে করার চেষ্টাও করছেন না। ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের উঠতি পেসারের কথায়, ‘‘চোট সারিয়ে উঠেছি। বাড়িতেই নেটে বল করা শুরু করেছি। বাড়িতে ছোট জায়গার মধ্যেই হাত ঘোরাচ্ছি। কিন্তু বলে কোনও ভাবে থুতু অথবা ঘাম ব্যবহার করছি না।’’
কিন্তু কেন? আইসিসি তো এখনও নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করেনি। দীপকের উত্তর, ‘‘পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে ধরে নেওয়া যায়, বলে থুতু লাগানোর নিয়মে নিষেধাজ্ঞা আসতে চলেছে। নিয়ম পরিবর্তনের পরে সমস্যায় পড়ার চেয়ে এখন থেকে অভ্যাস করা ভাল।’’
আরও পড়ুন: সচিনকে সৌরভ: ৪০০০ রান বাড়ত
দীপকের অস্ত্র সুইং। যদি বল পালিশ করতে না পারেন, তা হলে সুইং পাবেন কী করে? কৃত্রিম কোনও পদার্থ ব্যবহার করে বল পালিশ করার নিয়মকে মান্যতা দিতে পারে আইসিসি। ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার এক বল প্রস্তুতকারক সংস্থা মোম গলিয়ে পালিশ করার কৃত্রিম পদার্থ তৈরি করার চেষ্টা করছে। আইসিসি অনুমতি দেয় কি না দেখার।
নবদীপ সাইনিও বুঝতে পেরেছেন, থুতু থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কতটা বেশি। তাঁর কথায়, ‘‘বল পালিশ করতে থুতু অথবা ঘামই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পরে ক্রিকেট যখন আবার শুরু হবে, তখন আতঙ্ক থেকেই যাবে। সেই পরিস্থিতির জন্য এখন থেকেই সবাইকে প্রস্তুত হতে হবে। আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রিকেটারেরাও সেই অভ্যাস তৈরি করবেন। জুনিয়র স্তরের ক্রিকেটারদেরও সে ভাবেই এগোতে হবে।’’ নবদীপ আরও বলেন, ‘‘আমি নিজেও এখন থেকেই বলে থুতু ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছি। বাড়ির ছাদে যখন অনুশীলন করি, চেষ্টা করি কোনও ভাবেই যেন বলে থুতু অথবা ঘাম না লাগে।’’ কিন্তু নবদীপ আশা করেন, পেসারদের কথা ভেবেই কোনও না কোনও উপায় বার করবে আইসিসি। বলছিলেন, ‘‘ক্রিকেট থেকে যদি সুইং চলে যায়, তা হলে জোরে বোলারদের অস্তিত্ব থাকবে না। আশা করি, আইসিসি এমন কোনও নিয়ম তৈরি করবে, যা পেসারদের অবশ্যই সাহায্য করবে।’’
আরও পড়ুন: কোহালি ক্রিকেটের ফেডেরার, মত এবির
বাংলার পেসার ঈশান পোড়েল বাড়িতে অনুশীলন করতে পারছেন না। তবে ক্রিকেট নিয়ে ভাবনাচিন্তা থামেনি। তিনিও থুতু বা ঘাম লাগিয়ে বল পালিশ করার প্রক্রিয়া ত্যাগ করার দিকে। বলছেন, ‘‘জানি না কী নিয়ম আসতে চলেছে। কিন্তু সব পরিস্থিতির জন্যই তৈরি থাকব। শুরুতে মনে হয়েছিল, লকডাউনে এত দিন গৃহবন্দি থাকতে পারব না। এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। থুতুর ব্যবহার কমাতেও বেশি দিন সময় লাগবে না।’’