ছবি রয়টার্স।
চলতি মাসে লন্ডনে একটি অলিম্পিক্স যোগ্যতা অর্জন প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার পরে তুরস্কের এক বক্সার এবং কোচের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। যার পরে তুরস্কের বক্সিং সংস্থা এই ঘটনার জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) টাস্ক ফোর্সের দিকে আঙুল তুলেছে। ৪০টি দেশ থেকে বক্সাররা এই প্রতিযেগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। যা চলার কথা ছিল ১১ দিন। কিন্তু তিন দিন চলার পরেই ১৬ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গোটা বিশ্বের যখন সমস্ত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ বা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেই সময় কেন আইওসি এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিল, সেই প্রশ্ন তুলেছে তুরস্কের বক্সিং সংস্থা।
আইওসি অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বিবৃতি দিয়ে আইওসির পক্ষে জানানো হয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণের উৎস কোথায়, সেটা জানা সম্ভব নয়। ‘‘অংশ নেওয়া অনেক প্রতিযোগীই ইটালি, ইংল্যান্ড বা নিজের দেশে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। তার পরে ১৪ মার্চ প্রতিযোগিতায় নামেন। কয়েক দিন আগেই তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন,’’ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে আইওসি। গত বছর আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থাকে সাসপেন্ড করার পরে আইওসি-ই অলিম্পিক্স বক্সিংয়ের দায়িত্ব নিয়েছিল। যোগ্যতা অর্জন প্রতিযোগিতাগুলিও তারাই আয়োজন করছিল।
আইওসি-র আরও বক্তব্য, যে সময় এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছিল, ইংল্যান্ডের সরকারের তরফে তখনও কোনও বিধিনিষেধ জারি করা হয়নি। অনেক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাই ইংল্যান্ডে হচ্ছিল তখন। এর পরেই বক্সিং প্রতিযোগিতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সন্তুষ্ট বিন্দ্রা: টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কিছুটা দেরিই করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। এমনই মনে করেন অনেক ক্রীড়াবিদ থেকে শুরু করে বেশ কিছু দেশের জাতীয় সংস্থাগুলোও। তবে অলিম্পিক্সে ব্যক্তিগত ইভেন্টে ভারতের একমাত্র সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রা মনে করেন, ঠিক সময়েই ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইওসি। সময় নির্বাচনে কোনও ভুল হয়নি।
সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেজিং অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী শুটার বলেছেন, “আমি তো মনে করি, ঠিক সময়েই ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইওসি। অলিম্পিক্সের মতো এত বড়মাপের প্রতিযোগিতা বন্ধ বা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেও সহজ ছিল না। অলিম্পিক্স আয়োজনের ক্ষেত্রে একটা আয়োজক কমিটি থাকে। তার সঙ্গে সরকারের যোগ থাকে। রয়েছে বহুজাতিক সংস্থাগুলিরও উপস্থিতি। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ মোটেও সহজ হয় না। আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে বলে মনে করি না।” যোগ করেছেন, “আসলে অলিম্পিক্স হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই ভাল করেছে আইওসি। এখন সমস্ত খেলোয়াড় স্বস্তি পেয়েছেন।” তিনি নিজেও আইওসি-র অ্যাথলিটস কমিশনের সদস্য। বিন্দ্রা জানিয়েছেন, টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সব চেয়ে বেশি সরব ছিলেন ক্রীড়াবিদরাই। তিনি বলেছেন, “সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে আমরা প্রায় ২০০ ক্রীড়া প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। সকলেই চাইছিলেন, অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাক।’’