ধাক্কা: ভেনেজ়ুয়েলাকেও হারানো গেল না। সালভাদরে ব্যর্থ ফির্মিনো-জেসুস-কুতিনহোরা। বুধবার। এপি
সৌজন্য ভিডিয়ো প্রযুক্তি (ভিএআর)। কোপা আমেরিকায় বুধবার ব্রাজিলের তিনটি ‘গোল’ বাতিল হয়ে গেল। তাই ভেনেজ়ুয়েলার মতো দলের সঙ্গেও গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়তে হল পেলের দেশকে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে বিপক্ষ গোলে বল ঢুকিয়েছিলেন রবের্তো ফির্মিনো। রেফারি তা ভিডিয়ো দেখে বাতিল করেন আগেই ফাউল হয়েছে জানিয়ে। তার আগে গ্যাব্রিয়েল জেসুস গোল করলেও রেফারি পরে ভিডিয়ো দেখে আবিষ্কার করেন, গোলের সময় ফির্মিনো অফসাইডে ছিলেন। অবশেষ ফিলিপে কুতিনহো গোল করায় যখন মাঠে রীতিমতো উৎসব শুরু হয়েছে, তখন সবাইকে বিস্মিত করে সেটাও বাতিল করে দেন রেফারি। এবং আবার সেই ভিডিয়ো দেখেই।
এ বারের কোপার আয়োজক দেশ নেমারহীন ব্রাজিল প্রথম ম্যাচে বলিভিয়ার বিরুদ্ধে ৩-০ জিতেছিল। গ্রুপ টেবলে কুতিনহোরাই এখন শীর্ষে। দুই ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪। তবে বুধবার বলিভিয়াকে ৩-১ হারানো পেরুর পয়েন্টও চার। শনিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের খেলা পেরুর সঙ্গেই। এই ম্যাচ ড্র হলে দু’দলই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবে। ভেনেজ়ুয়েলার পয়েন্ট ২। এক পয়েন্টও পায়নি বলিভিয়া।
কোপার প্রথম ম্যাচে দারুণ শুরু করলেও বুধবার সালভাদরে ব্রাজিল কিন্তু প্রচুর সুযোগ নষ্ট করে। না হলে এই ম্যাচ থেকে তাদের পুরো পয়েন্ট না পাওয়ার কোনও কারণ নেই। সহজ সুযোগ নষ্ট করেন দাভিদ নেরেস ও ফির্মিনো। এক বার রিচার্লিসনের শট অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচান ভেনেজ়ুয়েলার গোলরক্ষক উইলকার ফারিনেজ়। রিচার্লিসনকে অবশ্য ব্রাজিলের কোচ তিতে প্রথমার্ধের পরে তুলে নেন। তাঁর জায়গায় নামান ম্যাঞ্চেস্টার সিটির জেসুসকে। এই পরিবর্তনে ব্রাজিলের আক্রমণ ধারালো হলেও, যার জন্য অপেক্ষা সেই গোলটাই হয়নি। উল্টে একবার ভেনেজ়ুয়েলারই সালোমন রন্ডন অবিশ্বাস্য সুযোগ নষ্ট করে বসেন।
বুধবার ব্রাজিলের খেলা দেখতে মাঠে ছিলেন প্রায় চল্লিশ হাজার দর্শক। খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই তারা কুতিনহো, ফির্মিনোদের লক্ষ করে বিদ্রুপ করতে শুরু করেন। এ বার ব্রাজিলের খেলা দেখতে এখানে খুব বেশি ভিড় হচ্ছে না। উদ্বোধনী ম্যাচে প্রায় দশ হাজার দর্শকাসন খালি ছিল। বুধবারও ছবিটা প্রায় একই রকম দেখা গিয়েছে। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়া ব্রাজিল দলের অভিজ্ঞ ফুটবলার থিয়াগো সিলভা বলেছেন, ‘‘ভেনেজ়ুয়েলা প্রথম থেকেই প্রায় দশ জন মিলে রক্ষণ সামলেছে। এই রকম পরিস্থিতিতে গোল পাওয়া মুখের কথা নয়। আমরাও তাই দ্রুত পাস খেলার জন্য মাঝেমধ্যে তাড়াহুড়ো করে ফেলছিলাম। একটা সময় দলের আত্মবিশ্বাসেও খামতি দেখা যায়। সেটা হয়েছিল বারবার চেষ্টার পরেও গোল না পেয়ে। তা ছাড়া গোল করতে না পারলে মনে হবেই যে সব কিছুই একটা দল ভুল করছে। যেটা আদৌ ঠিক নয়।’’ থিয়াগো সিলভা সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে তো ওরা আক্রমণই করেনি। নিজেদের জায়গা থেকে বেরোচ্ছিলই না। তার পরেও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অল্পের জন্য আমরা গোল পাইনি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, ব্রাজিল খারাপ খেলেছে। তাই এখনই এতটা সমালোচনা আমাদের প্রাপ্য নয়।’’ ম্যাচ ড্র হলেও বিরাট কিছু হতাশ নন ব্রাজিলের কোচ তিতেও। তাঁর কথা, ‘‘নেমারকে ছাড়াই কোপা জিতে দেখিয়ে দিতে চাই।’’
উল্লাস: ইটালির বিরুদ্ধেও গোল। অনন্য নজির গড়ে ব্রাজিলের মার্তা (ডান দিকে)। মেয়েদের বিশ্বকাপে। রয়টার্স
মার্তার রেকর্ড: মেয়েদের ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিল ১-০ গোলে ইতালিকে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে অনন্য নজির গড়লেন মার্তা। বুধবারের গোল ধরে ব্রাজিলের জার্সিতে ১৭টা গোল হয়ে গেল তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হলেন। অনন্য নজির গড়ে মার্তা বলেছেন, ‘‘রেকর্ডটা আমার একার নয়। দলের সকলের।’’ ৩৩ বছর বয়সি এই ফুটবলারের আরও মন্তব্য, ‘‘সবসময়ই ভরা স্টেডিয়ামে খেলতে ভালবাসি। এ দিন সেটাই ছিল। এত দর্শকের সামনে এ রকম একটা রেকর্ড করতে পেরেছি ভেবে দারুণ লাগছে।’’