আরও এক বার সিএবি প্রেসিডেন্ট। বার্ষিক সভা শেষে জগমোহন ডালমিয়া। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
আগামী বছর ইডেনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং আইপিএল নাইন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে আচমকাই মৃদু জট তৈরি হয়ে গেল সোমবার। ঊনত্রিশ বছর পর শহরে যে কাপ ফাইনাল হচ্ছেই, তার একশো শতাংশ গ্যারান্টি দেওয়া যাচ্ছে না।
কারণ— আগামী বছর কাছাকাছি সময়ে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা।
সোমবার সিএবির বার্ষিক সাধারণ সভা ছিল। নির্বাচনী উত্তাপ না থাকায় মোটামুটি নিরামিষই থেকে যায় এ দিনের বৈঠক। যতটুকু যা আগ্রহ ছিল, সবই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালকে ঘিরে।
আগামী বছর ৩ এপ্রিল কলকাতায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন ধার্য করেছে আইসিসি। কিন্তু সেখানে যে একটা প্রশ্নচিহ্ন আছে, এত দিন টের পাওয়া যায়নি। বৈঠকে ব্যাপারটা প্রথম তোলেন তৃণমূল সাংসদ তথা মহমেডান স্পোর্টিংয়ের প্রতিনিধি সুলতান আহমেদ। বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য জগমোহন ডালমিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলে দেন যে, কলকাতায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল হবে খুবই ভাল খবর। কিন্তু ওই সময় রাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনাও আছে। নির্বাচনের মধ্যে বিশ্বকাপ ফাইনাল পড়ে গেলে তা করা মুশকিল হবে। অতএব, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলা দরকার।
এমনিতে ফাইনাল ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আরও দু’টো ম্যাচ আনতে চেষ্টা করছে সিএবি। কিন্তু পরে দেখা যায়, আইপিএলের ম্যাচও পড়ে যাবে ওই সময়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও আইপিএলের গোটা সাতেক ম্যাচ মার্চ থেকে মে-র মধ্যে হবে ইডেনে। এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী লন্ডনে। ঠিক হয়েছে তিনি ফিরলেই ব্যাপারটা নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর কাছে। যাতে নির্বাচন কমিশন দিন ঠিক করার আগে তাদের এই ম্যাচ সংক্রান্ত ব্যাপারস্যাপার জানিয়ে রাখা যায়।
এর বাইরে বৈঠক সংক্রান্ত বলার মতো ব্যাপার দু’টো। এক, রেকমেন্ডেশন-সহ বার্ষিক অ্যাকাউন্টস পাশ হয়ে যাওয়া। যে অ্যাকাউন্টস নিয়ে সাম্প্রতিকে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। অনেক সদস্য অবশ্য এ দিনও বৈঠক শেষে বুঝতে পারলেন না এমন রেকমেন্ডেশন সহ অ্যাকাউন্টস আদৌ পাশ করানো যায় কি না। যিনি সবার আগে সিএবি-র বার্ষিক হিসাব নিয়ে প্রতিবাদ করায় ঝড় উঠেছিল, সেই ফিনান্স কমিটি সদস্য হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন এই খবর শুনে বলেন, ‘‘এমন কিছু আবার হয় নাকি? এক বার অ্যাকাউন্টস পাশ হয়ে গেলে আর তাতে হাতই লাগানো যায় না।’’ দিল্লিতে সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ায় তিনি নিজে অবশ্য এ দিন সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি।
শোনা গেল, সিএবি নিজেদের সাড়ে তিন কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অঙ্ককে নামিয়ে আনতে পুরনো অর্থ উদ্ধারের রাস্তায় যাচ্ছে। বাইশ বছর আগের হিরো কাপ সংক্রান্ত এক মামলায় প্রায় এক কোটি টাকা প্রাপ্য সিএবির। যা বলা হচ্ছে, গচ্ছিত আছে হাইকোর্টের কাছে। সেটা আদায়ের চেষ্টা করা হবে। দ্বিতীয় উল্লেখ্য ব্যাপারটা হল, বঙ্গ ক্রিকেটারদের কারও কারও বিস্ময়। তাঁদের বক্তব্য, বার্ষিক সভায় আলোচ্য সূচির বাইরে গিয়ে বাংলা ক্রিকেটের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হল। শুধু রঞ্জি ট্রফি শুরুর দু’মাস আগেও কেন কোচ-অধিনায়ক নির্বাচন ধোঁয়াশায় ঢেকে, তা নিয়ে একটাও কথা হল না।