ভারতের মহিলা লন বোল দল। ছবি পিটিআই
মঙ্গলবার লন বোলে ইতিহাস তৈরি করল ভারতের মহিলা দল। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথম বার ফাইনালে উঠেই সোনা জিতে নিল তারা। অখ্যাত এই খেলায় সোনা জেতার পরে অনেকেরই প্রশ্ন, কী এই খেলা? ভারতে এই খেলার প্রচলন আদৌ রয়েছে? কেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো ক্রিকেটারও এই খেলা ভালবাসেন?
লন বোল এমন একটি খেলা, যেখানে খুব বেশি শারীরিক দক্ষতার প্রয়োজন না হলেও, খেলোয়াড়ের নিখুঁত লক্ষ্য এবং অনুমান ক্ষমতার দরকার হয়। ১৯৩০ সালে কমনওয়েলথ গেমস শুরু হওয়ার সময় থেকেই এই খেলা চালু রয়েছে। ভারত অবশ্য এই খেলায় অংশ নিচ্ছে ২০১০ সাল থেকে। এই প্রতিযোগিতার আগে পর্যন্ত সেরা ফল ছিল চতুর্থ স্থান। ২০১০-এ মহিলাদের ট্রিপলস দল এবং ২০১৪-এ পুরুষদের ফোর্স দল এই স্থান অর্জন করেছিল। এ বার প্রত্যাশার চেয়েও ভাল ফল হয়েছে।
লন বোল চারটি বিভাগে খেলা হয় — সিঙ্গলস, পেয়ার্স, ট্রিপলস এবং ফোর্স। অর্থাৎ, এক জন, দু’জন, তিন জন এবং চার জন এই খেলা খেলতে পারেন। সবুজ গালিচায় পর পর ছ’টি সারণী বা রিঙ্ক দেওয়া থাকে। প্রতি বার এক-একটি রিঙ্কে খেলা হয়। খেলার শুরুতে হয় টস। যিনি জেতেন, তিনি ‘জ্যাক’, অর্থাৎ ছোট মাপের একটি বল রিঙ্কে গড়িয়ে দেন। অন্তত ২৩ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় ‘জ্যাক’-কে। তবেই খেলা শুরু করা যায়।
লন বোল। ছবি রয়টার্স
এর পর শুরু হয় বোলিং। সামনে একটি ম্যাট পেতে তার উপর দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়রা পর পর বল গড়িয়ে দিতে থাকেন অপর প্রান্তে থাকা ‘জ্যাক’-এর দিকে। লক্ষ্য একটাই, ‘জ্যাকে’ বল লাগানো। বল যদি ‘জ্যাকে’ লাগে, সব থেকে বেশি পয়েন্ট পাওয়া যাবে। না হলে যার গড়ানো বল ‘জ্যাক’-এর সবচেয়ে কাছে গিয়ে থামবে, সেই খেলোয়াড় সব থেকে বেশি পয়েন্ট পাবে। বল উল্টো দিকে নির্ধারিত সীমানার বাইরে চলে গেলে বাতিল হয়ে যাবে। কারওর বল ‘জ্যাক’-এ গিয়ে লাগলে যেখানে গিয়ে ‘জ্যাক’ থামবে, সেই সময় থেকে সেটিই ‘জ্যাকের’ ‘পজিশন’ হয়ে যাবে। তখন প্রতিযোগীদের লক্ষ্য থাকবে, সেই জায়গায় বল পাঠানো।
সিঙ্গলস ম্যাচে প্রতিটি প্রান্ত থেকে একজন খেলোয়াড় চারটি করে বল গড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পান। তার পরে দূরত্বের ভিত্তিতে পয়েন্ট নির্ধারিত হয়। যে খেলোয়াড় সবার আগে ২১ পয়েন্ট পাবেন তিনি বিজয়ী। পেয়ার্স, ট্রিপলস এবং ফোর্স বিভাগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক খেলোয়াড় একটি প্রান্ত থেকে দু’বার করে বল গড়ানোর সুযোগ পান। পেয়ার্স এবং ট্রিপলস ম্যাচে এ রকম মোট ১৮টি রাউন্ড হয়। ফোর্স-এর ক্ষেত্রে ১৫টি রাউন্ড হয়। সব শেষে যে দলের পয়েন্ট বেশি হবে তারাই জিতবে।