পূজারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট খেলার জন্য। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
কাউণ্টি ক্রিকেট ক্লাব ইয়র্কশায়ারে ‘বর্ণবিদ্বেষের শিকার’ তালিকায় এ বার নাম এল চেতেশ্বর পূজারারও। ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার আজিম রাফিকের অভিযোগ, তাঁর এবং আরও অনেকের মতো পূজারাকেও বর্ণবিদ্বেষ সহ্য করতে হয়েছিল এই কাউন্টি ক্লাবে খেলতে গিয়ে। সেপ্টেম্বর মাসে এই রফিকই অভিযোগ করেছিলেন, ক্লাবে থাকাকালীন আত্মহত্যা করার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে ক্লাবের মধ্যেও।
বর্ণবিদ্বেষ এবং উগ্র আঞ্চলিকতার অভিযোগ বার বার উঠেছে এই ক্লাবের বিরুদ্ধে। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ার ক্লাবে ইংল্যান্ডের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কারোর খেলার অনুমতি ছিল না। প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সচিন তেন্ডুলকর মাত্র ১৯ বছর বয়সে ওই ক্লাবের হয়ে খেলতে যান। রাফিকের অভিযোগ সামনে আসায় বোঝা যাচ্ছে, নিয়ম বদল হলেও সেখানকার মানসিকতা এখনও পুরোপুরি বদলায়নি।
কিছু দিন আগে এক সংবাদ মাধ্যমকে রাফিক বলেন, “জাতের জন্য চোখের সামনে লোকজনকে অপদস্থ হতে দেখেছি। ইয়র্কশায়ারে থাকার সময় মনে হয়েছিল আত্মহত্যা করি।” রাফিকের অভিযোগকে সমর্থন করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টিনো বেস্ট এবং পাকিস্তানের রানা নাভেদ-উল-হাসান। প্রাক্তন ২ ইয়র্কশায়ার কর্মী তাজ বাট এবং টনি বাউরিও ক্লাবের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ এনেছেন এবং ‘তথ্যপ্রমাণ’ও জমা দিয়েছেন। এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাট বলেন, “এশীয় ক্রিকেটারদের ওঁরা ট্যাক্সি-চালক, রেস্তরাঁ-কর্মীদের নামে ডাকেন। পূজারাকে ‘স্টিভ’ বলে ডাকতেন ওঁর নাম উচ্চারণ করতে পারতেন না বলে।” ইয়র্কশায়ার ক্রিকেট ফাউন্ডেশনের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার পদে যোগ দিয়েছিলেন বাট। কিন্তু ৬ সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: সিডনিতে কি দলে শ্রেয়স? দেখে নিন টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাউরি ছিলেন ইয়র্কশায়ার ক্লাবের সাংস্কৃতিক বিভাগের কর্তা। তিনি বলেন, “তরুণ খেলোয়াড়রা সহজে উন্নতি করতে পারেন না এখানে। যাঁরা করতে পেরেছেন তাঁদের কাছে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ খুব সুখকর ছিল না।”
আরও পড়ুন: ‘নটরাজনের উত্থানে দলে জায়গা পাওয়া কঠিন হবে শামির’
রাফিকের অভিযোগের পর এই বিষয় নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকে ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করবেন তাঁরা। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাফিক। বলেন, “আমি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম তা যে বধিরদের কানে পৌঁছেছে এটাই অনেক। আমি বৈষম্য, বর্ণবিদ্বেষ সম্পর্কে অভিযোগ করেছি কিন্তু কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। পরিবর্তনের আনতে হলে শুনতে হবে, কিন্তু এঁরা শুধু শুনেই গিয়েছেন।”