দাবা অলিম্পিয়াডের আকর্ষণের কেন্দ্রে সিডার। ছবি: টুইটার।
আট বছরেই ৬৪ খোপে অনায়াস পদক্ষেপ। সেই বিচরণই তাকে পৌঁছে দিয়েছে দাবা অলিম্পিয়াডের আকর্ষণের কেন্দ্রে।
রান্ডা সিডার। দাবা অলিম্পিয়াডের কনিষ্ঠতম প্রতিযোগী। বোর্ডে চাল দেওয়ার আগেই বেহাল দশা প্যালেস্তাইনের এক রত্তির। খেলতে এলেই অসংখ্য নিজস্বীর আবদার মেটাতে হচ্ছে তাকে। তার ভক্তের তালিকায় বিভিন্ন দেশের দাবাড়ুরা যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন দাবাপ্রেমীরাও। এই উন্মাদনা অবশ্য তার মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে না। বরং বেশ উপভোগ করছে সিডার। দাবা অলিম্পিয়াডের কনিষ্ঠতম প্রতিযোগী বলেছে, ‘‘হ্যাঁ, আমি বেশ উপভোগ করছি। দারুণ লাগছে।’’
এই বয়সের আর পাঁচটা মেয়ে যা যা করে, সে সবে তেমন আগ্রহ নেই সিডারের। পড়াশোনা আর দাবা নিয়েই দিন কাটে তার। অলিম্পিয়াডে খেলতে এসে একটু সমস্যায় পড়েছে সে। চেয়ারে বসে টেবিলে রাখা বোর্ড ভাল করে দেখতে পাচ্ছে না খুদে দাবাড়ু। তাই হাঁটু মুড়ে বসতে হচ্ছে। সেভাবেই প্রথম ম্যাচে ৩৯ চালে কিস্তিমাত করেছে আফ্রিকার কোমোরোসের ফাহিমা আলি মোহাম্মেদকে।
প্যালেস্তাইনের জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স হয়েছে আট বছরের সিডার। সেই সুবাদে জায়গা পেয়েছে জাতীয় দলে। দুরন্ত মেয়েকে শান্ত করতে পাঁচ বছর বয়সে দাবায় ভর্তি করে দেন সিডারের বাবা। সিডার বলেছে, ‘‘প্রথম থেকেই খেলাটা আমার ভাল লেগে যায়।’’
দলের সকলেই সিডারের থেকে বয়সে অনেক বড়। বিদেশে তাঁরাই আগলে রাখছেন। প্যালেস্তাইন দলের অন্যতম সদস্য ইমান সাওয়ান বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতা যত এগোবে, প্রতিপক্ষ তত কঠিন হবে। আশা করি তাতে সিডারের সমস্যা হবে না।’’
অলিম্পিয়াডের আসরে সিডারকে দেখে উচ্ছ্বসিত মহিলাদের দাবায় বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর হাঙ্গেরির জুদিত পোলগার। তিনি নেটমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমি আগ্রহ নিয়ে সিডারের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। দাবার বিশ্বমঞ্চে ওকে স্বাগত। আশা করছি ওর সঙ্গে খেলার সুযোগ পাব।’ পোলগারই আদর্শ সিডারের। সে-ও চায় রাজা-মন্ত্রী-হাতি-ঘোড়া নিয়ে পোলগারের রণনীতির মোকাবিলা করতে।
ইজরায়েলের সঙ্গে বিবাদের জন্য ঘুরপথে ভারতে আসতে হয়েছে প্যালেস্তাইনের দাবাড়ুদের। ইমান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমে যাই জর্ডন। সেখান থেকে বাহরিন হয়ে চেন্নাই এসেছি। আমাদের দেশে বেশি প্রতিযোগিতা হয় না। অলিম্পিয়াডে ভাল ফল করতে পারলে প্যালেস্তাইনেও দাবা নিয়ে উৎসাহ তৈরি হবে। আগামী দিনে হয়তো আরও সিডার পাব আমরা।’’