মঙ্গলবারই শহরে পা রাখলেন কোহলি। ছবি: উত্পল সরকার
অনুষ্কা শর্মা আসছেন, না আসছেন না?
আজ তো এলেন না। বিরাট কোহলিকে একাই দেখা গেল।
আরে, সুরেশ রায়না কোথায় যাচ্ছেন? ইডেন নাকি?
নাহ্, কালীঘাট। সঙ্গী উমেশ যাদব।
বরুণ অ্যারন তো টিমেই নেই। তবু তিনি ইডেনে কেন?
কেন আবার, সামনে অস্ট্রেলিয়া সফর। তাই ফিটনেস টেস্ট চলছে।
সারা দিন ধরে শহরে ভারতীয় টিমের সংসারের ছবি।
ভারতীয় ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি আবার শুধু জয় না, আরও বেশি কিছু চান। মঙ্গলবার দুপুরে শহরে পা রাখার পর ঘনিষ্ঠমহলে শোনা গেল বলে ফেলেছেন যে, ইডেনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাঁর করা সেঞ্চুরির কথা এখনও ভালই মনে আছে। এ বার তাঁর আরও একটা চাই ইডেন থেকে, এ বার ক্যাপ্টেন হিসেবে। এয়ারপোর্ট থেকে আসতে আসতে ঘনিষ্ঠ একজনকে বিরাট নাকি বলে ফেলেন, “আপনারা প্রার্থনা করুন না। একটা সেঞ্চুরি পেলে...।”
রাতের দিকে টিম হোটেলে বেশ স্বস্তিতেই পাওয়া গিয়েছে রায়না-অশ্বিনদের। লবিতে নেমে এসে একযোগে আড্ডা দিয়েছেন। ভারতীয় টিমের ম্যানেজার আর এন বাবা আবার বলে গেলেন, প্লে-স্টেশন, আইপডেও ডুব দিয়েছেন কোনও কোনও ক্রিকেটার। ম্যাচ নিয়ে টেনশন থাকার কথাও নয়, পাওয়াও যায়নি। ক্যাপ্টেন কোহলিও ফুরফুরে। তিনি নাকি নিজের সেরা পাঁচ মাঠের মধ্যে নাগপুর, মুম্বই, কোটলা, হায়দরাবাদের সঙ্গে ইডেনকেও রেখেছেন। হায়দরাবাদ থেকে আবার তো একটা হাফ সেঞ্চুরি নিয়েই শহরে ঢুকলেন বিরাট।
এ বার কি দশ হাজারও আসবে রেকর্ডের মাইলস্টোন-সহ?
মঙ্গলবার দুর্গাপুরে এক ম্যানেজমেন্ট কলেজের সেমিনারে অংশ নিয়ে এই প্রশ্নের উত্তরে টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী বলেন দিলেন যে, তিনি অন্তত না আসার কোনও কারণ দেখছেন না। “মাত্র ২৬ বছর বয়স বিরাটের। খুব ভাল ওয়ার্ক এথিক্স। শেষ ছ’মাসে ব্যাপক পরিশ্রম করছে। ইংল্যান্ডে ভাল করতে পারেনি বলে ও দারুণ খেটেছে।” ভারতের এই ওয়ান ডে দলটার দুর্বলতা নিয়ে শাস্ত্রী বলেছেন, “ইয়ং সাইড। তবে অভিজ্ঞতা দরকার। সে জন্য আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফর কাজে লাগবে। বিশ্বকাপ জিততে শুধু ভাল ক্রিকেট নয়, ভাল ফিটনেস লেভেলও দরকার।”
দুর্গাপুরের এই সেমিনারে যাঁর নেতৃত্বের খুব প্রশংসা করলেন শাস্ত্রী, সেই সৌরভ গঙ্গাপাধ্যায়ের শহরে এসে নাকি তাঁর খোঁজও করেছেন কোহলি। জিজ্ঞেস করেছেন, ম্যাচের দিন ‘দাদা’ থাকবেন কি না।
দুর্গাপুরে এক বেসরকারি কলেজে ভক্তদের সই বিলোলেন রবি শাস্ত্রী। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
বিরাট-উত্সাহের আরও একটা মুখ পাওয়া গিয়েছে। সেটা ক্রিকেট নয়, ফুটবল। বিরাট যেমন ভারতীয় টিমের বর্তমান অধিনায়ক, তেমন এফসি গোয়ার কর্ণধারও। যুবভারতী নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন বিরাট। জেনেছেন, ওখানে দর্শকাসন কত?
সোমবার রাতে কয়েক জন এসেছিলেন। মঙ্গলবার শহরে একে একে ঢুকে পড়লেন ভারতীয় দলের বাকি ক্রিকেটাররাও। দুপুরে বিরাট, রাতে রোহিত শর্মা। ভারতীয় টিম এ দিন প্র্যাকটিসে আসেনি। শ্রীলঙ্কা সেখানে আবার পাঁচ ঘণ্টা খাটাখাটনি করে গেল। টিমটার অবস্থা একেই সুবিধের নয়, তার উপর কুমার সঙ্গকারা সহ কয়েক জন দেশে ফিরে গিয়েছেন। তারকা বলতে পড়ে শুধু মাহেলা জয়বর্ধনে, তিলকরত্নে দিলশান এবং সদ্য দেশ থেকে উড়ে আসা অজন্তা মেন্ডিস। কেকেআরে খেলার সময় ইডেন কি না যাঁর আবার ঘরের মাঠও ছিল।
অজন্তা দেখা গেল, ইডেন উইকেট নিয়ে বেশ আশাবাদে ভুগছেন। মনে করছেন, শেষ দু’টো ম্যাচে জিতে সম্মান নিয়ে ফিরতে পারবে শ্রীলঙ্কা। তিনিও উইকেট পাবেন। বললেন, “ইডেনের উইকেটে স্পিন ধরে। তাই মনে হয়, আমাদের স্পিনাররা এই ম্যাচে ভাল কিছু করতে পারব। সিরিজ হেরে গেলেও আমরা এখনও জয়ে ফেরার আশা ছাড়িনি।”কিন্তু ইডেন কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায় শোনা গেল, ঘাসের উইকেট রাখছেন। তাই অজন্তার কতটা সুবিধে হবে, সন্দেহ। ঠিক তেমনই সন্দেহ, গ্যালারি কতটা ভরবে, তা নিয়ে। ইডেন সংস্কারের পর স্কুল-কোচিং সেন্টারগুলোর মধ্যে টিকিট অকাতরে বিলোনো বন্ধ করেছিল সিএবি। টিকিট দেওয়া হত, কিন্তু মেপে।
বৃহস্পতিবারের ম্যাচে সেখানে দেওয়া হচ্ছে ডেকে-ডেকে, পরিচয়পত্র দেখালেই মিলবে!