দুর্ভেদ্য: এ ভাবেই জর্জকে পয়েন্ট এনে দিলেন লাল্টু। —নিজস্ব চিত্র।
মহমেডান ০ • জর্জ টেলিগ্রাফ ০
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচের কথা মনে পড়লে এখনও আঁতকে ওঠেন জর্জ টেলিগ্রাফের গোলকিপার লাল্টু মণ্ডল। তাঁর ভুলেই রেনবোর বিরুদ্ধে ০-৩ হেরেছিল দল। অথচ শুক্রবার সেই লাল্টুর হাতেই ঘরের মাঠে আটকে গেল মহমেডান।
শৈশবে অবশ্য ফুটবল নয়, ক্রিকেটই ছিল লাল্টুর প্রথম পছন্দ। স্বপ্ন দেখতেন উইকেটকিপার হওয়ার। বাবার পরামর্শে শেষ পর্যন্ত বেছে নেন ফুটবলকে। লাল্টুর বাবাও গোলকিপিং করতেন। কিন্তু সংসারের অভাব দূর করতে ফুটবল ছেড়ে রিকশা চালাতে বাধ্য হন তিনি। শুক্রবার মহমেডানের বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে ২৩ বছর বয়সি বাংলার প্রতিশ্রুতিমান গোলকিপার বলছিলেন, ‘‘রেনবোর বিরুদ্ধে হারের পরে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমাকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। বাড়তি পরিশ্রম করতাম অনুশীলনে। কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্যও মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছেন।’’ যোগ করলেন, ‘‘মোহনবাগান ম্যাচের আগে বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, গোল খাব না। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারিনি। আজ কথা রাখতে েপরে দারুণ
আনন্দ হচ্ছে।’’ মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভাল খেলেও ম্যাচ সেরা হতে পারেননি লাল্টু। সেই আক্ষেপ এ দিন মিটে গিয়েছে তাঁর।
মহমেডান কোচ রঘু নন্দী অবশ্য ড্রয়ের জন্য লাল্টুকে কৃতিত্ব দিতে নারাজ। তাঁর মতে স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতাতেই জয় হাতছাড়া হয়েছে। ম্যাচের পরে হতাশ রঘু বললেন, ‘‘লিগের প্রথম ম্যাচ থেকেই স্ট্রাইকার সমস্যায় ভুগছি। তা সত্ত্বেও এই ম্যাচে আমাদেরই আক্রমণের ঝাঁঝ বেশি ছিল। জিততে না পারাটা দুর্ভাগ্য।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘জর্জের গোলকিপার কেন ম্যাচের সেরা? আমরা গোল করতে পারিনি। ওর কোনও কৃতিত্ব নেই!’’
রঘুর যুক্তি অবশ্য মহমেডান সমর্থকেরা মানছেন না। বেশ কয়েকটা সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করলেন বিদেশি স্ট্রাইকার ওলারিচে এমেকা। মহমেডান মাঠে নৈশালোকে প্রথম ম্যাচ জিততে না পেরে মুখ কালো করেই বাড়ি ফিরলেন কয়েক হাজার দর্শক।
মহমেডান: প্রিয়ন্ত সিংহ, তন্ময় ঘোষ, লানসিন ত্যুরে, কামরান ফারুক, প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী (সুমিত দাস), সত্যম শর্মা (মহম্মদ আমিরুল), বাজি আর্মান্ড, রাকেশ কর্মকার (লাল্টু হেমব্রম), প্রসেনজিৎ পাল, দীপেন্দু দোয়ারি এবং এমেকা।
জর্জ টেলিগ্রাফ: লাল্টু মণ্ডল, নবি হোসেন খান, অসীম দে, ইচেজোনা, মোহন সরকার, চিন্তা চন্দ্রশেখর, নাকামুরা রিয়ো, শুভ কুমার (রাজীব সাউ), রাজীব ঘরুই সুব্রত বিশ্বাস (বিজয় মান্ডি) ও স্টিভন হ্যারি।