নায়ক: ম্যাচ এবং সিরিজ সেরা হলেন যশপ্রীত বুমরা, মনে রাখার মতো বল করে গেল যুজবেন্দ্র চহাল। ছবি:পিটিআই
তিরুঅনন্তপুরমে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে দু’দলের দুই অধিনায়ক যখন টস করতে গেল তখন ঘড়ির কাঁটায় সোয়া ন’টা। তার আগেই জেনে গিয়েছিলাম ম্যাচটা কুড়ি ওভারের না হয়ে আরও ছোট হচ্ছে।
তখন মনে হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভারত নিজের দখলে রাখতে পারবে কি না। কারণ, এই ধরনের পরিস্থিতিতে ম্যাচ যত ছোট হয়, ততই বিপজ্জনক টিম হয়ে ওঠে নিউজিল্যান্ড। অতীতে বার বার তা দেখা গিয়েছে। ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সময় ঠিক সেটাই হচ্ছিল।
নিউজিল্যান্ড টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠানোয় ভেবেছিলাম, আট ওভারে রোহিত-বিরাটরা পিটিয়ে আশি-নব্বই রান তুলে কিউয়িদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। কিন্তু ভারত সেখানে নির্ধারিত আট ওভারে ইনিংস শেষ করল ৬৭-৫। অর্থাৎ নিউজিল্যান্ডকে জিততে গেলে করতে হতো ৬৮। মানে ওভার প্রতি আট-এর কিছু বেশি। এই ধরনের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কিছুই ব্যাপার নয়।
এই জায়গা থেকেও ভারত ছয় রানে ম্যাচটা জিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ জিতল তার জন্য প্রধান কৃতিত্ব দু’জনের। যুজবেন্দ্র চহাল ও জশপ্রীত বুমরা। চহাল দু’ওভারে দিল মাত্র আট রান। আর বুমরা দুই ওভারে আঁটসাঁট বোলিং করে নয় রান দেওয়ার সঙ্গে দু’উইকেটও তুলে নিল। যার মধ্যে রয়েছে কলিন মুনরো (৭) এবং হেনরি নিকোলস (২)-এর উইকেট। দু’জনকেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভয়ঙ্কর হতে দেয়নিও। ম্যাচের সেরাও বুমরাই। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বার বার নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করে যাচ্ছে ছেলেটা। তা সে একদিনের আন্তর্জাতিক হোক বা টি-টোয়েন্টি। এ দিনও কিন্তু ফের ও দেখিয়ে দিল কেন ডেথ ওভারে ও এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার।
এদের সঙ্গে বুদ্ধি করে বোলিং পরিবর্তনটাও করল ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালিও। বাড়িতে বন্ধুদের সঙ্গে বসে খেলা দেখছিলাম। সপ্তম ওভারে যখন বুমরা বল করে চলে গেল, তখন আমার অনেক বন্ধুই বলছিল শেষ ওভারে কুলদীপ যাদব আসবে। কিন্তু সবাইকে ধাঁধায় ফেলে বিরাট শেষ ওভার করতে দিল হার্দিক পাণ্ড্যকে। শেষ ওভারে উইকেট টু উইকেট বল করে হার্দিক কাজের কাজটা করে দিয়ে গিয়েছে।
এই ম্যাচে উইকেট না পেলেও মনে রাখার মতো বল করে গেল যুজবেন্দ্র চহাল। মাঝারি রানের পুঁজি নিয়ে লড়তে নেমে কিউয়িদের ডান হাতি ব্যাটসম্যানদের ও অফস্টাম্পের উপর লেগস্পিন করছিল। আর বাঁ হাতিদের অফ স্টাম্পের উপর গুগলি। ফলে কিউয়িরা ওকে জোরে মারতে পারেনি একদমই।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে টি২০ সিরিজ জয় ভারতের
তবে এ দিন জিতলেও বিরাটের দলের ব্যাটিং এ দিন আমাকে খুশি করেনি। ম্যাচটা যখন আট ওভারের তখন চার নম্বরে ধোনি বা হার্দিক পাণ্ড্য নয় কে? কেন শ্রেয়স আইয়ার-কে ওই জায়গায় নামানো হল তার উত্তর হয়তো রবি শাস্ত্রী বা বিরাট কোহালি দিতে পারবে। আজ ধোনিকে চার নম্বরে নামানো হলে ও বেশি বল খেলার সুযোগ পেত। রান বাড়তে পারতো ভারতের।
নিউজিল্যান্ডের তরফে বলার মতো ব্যাপার ওদের ট্রেন্ট বোল্টের বোলিং। আর মণীশ পাণ্ডের ক্যাচ নেওয়ার সময় অ্যাথলেটিসিজম দেখিয়ে মিচেল স্যান্টনার-এর ডাইভ দিয়ে বলটা কলিন দে গ্র্যান্ডহোমের হাতে তুলে দেওয়া। তবে আট ওভারের ম্যাচ মানে অনেকটা লটারির মতো। এখানে যে কেউ যখন তখন জিততে পারে।
এর পরে ১৬ ডিসেম্বর ফের ইডেনে ভারতের ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। সে দিন আমার জন্মদিনও। সেখানে প্রাপ্তি হবে আমার প্রিয় সাদা জামা-প্যান্ট আর লাল বলের টেস্ট ম্যাচে ফিরতে পারা। তার জন্য প্রহর গুণতে শুরু করেছি।