অতিথি: বর্ধমানে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ব্রায়ান লারা। —নিজস্ব চিত্র
চার বছর আগে ইডেনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তাঁর দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্রিকেটার ব্রায়ান লারা মনে করছেন, ন’মাস পরে অস্ট্রেলিয়ায় এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সব চেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের।
শনিবার বর্ধমান শহরের মালির মাঠে এক ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন লারা। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব চেয়ে সমীহ করার মতো দল হল ভারত। খেতাব জয়ের সব চেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ওদেরই। কারণ এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ হল ভারত।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘তবে ফেভারিট হলেই চলবে না। কারণ এই মুহূর্তে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব জানে, ভারতীয় ক্রিকেট দল কতটা শক্তিশালী। সে কারণেই সব ক্রিকেটারেরই নজর থাকে ভারতের উপরে। সকলেই ভারতের বিরুদ্ধে ভাল খেলে নজর কাড়তে চায়।’’ লারা আরও বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, নকআউট পর্যায়ে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল বা ফাইনালে একটা সেশনেই খেলার মোড় ঘুরে যেতে পারে। এই ম্যাচগুলোতে বিশেষ দিনে যে দল ভাল খেলে, তারাই জেতে। এই ব্যাপারটাও ভারতীয় দলকে মাথায় রাখতে হবে। গত বছর ইংল্যান্ডে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে ওদের।’’
একই সঙ্গে এ দিন লারা জানিয়ে দেন, ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি এই মুহূর্তে ক্রিকেট বিশ্বের এক ব্যতিক্রমী ক্রিকেটার। লারার কথায়, ‘‘বর্তমান সময়ে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের খেলা আমার ভাল লাগে। তার মধ্যে রয়েছে স্টিভ স্মিথ, জো রুট, বেন স্টোকস। ইদানীং কে এল রাহুলের খেলাও ভাল লাগছে।’’ এর পরেই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের রাজপুত্র যোগ করেন, ‘‘কিন্তু এদের সকলকেই ছাপিয়ে গিয়েছে বিরাট। ও অন্য মানের ক্রিকেটার। বিশেষ ভাবে লক্ষণীয় ওর ধারাবাহিকতা ও ফিটনেস। ব্যাট হাতে এবং মাঠে যে ভাবে দলকে নেতৃত্ব দেয় কোহালি, সেটাও চোখ টানে। সেই কারণেই ও ব্যতিক্রমী খেলোয়াড়।’’
ইডেনে কোনও দিন টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়নি ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর এই ক্রিকেটারের। যে প্রসঙ্গে তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘‘অসুস্থ থাকায় ইডেনে টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়নি। কিন্তু জীবন এ রকমই। অনেক কিছুই অপূর্ণ থেকে যায়। কোনও দিন ইডেনে প্রাক্তনদের কোনও প্রদর্শনী ম্যাচে নেমে পড়তেও পারি।’’ এর পরেই হিরো কাপ ফাইনালের নাম না উল্লেখ করে লারা বলেন, ‘‘তবে ইডেনে দিন-রাতের ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছি। সেই ম্যাচে আবার সচিন তেন্ডুলকরের বলে আউটও হয়েছিলাম।’’
প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারের কাছে সম্প্রতি আইসিসি প্রস্তাবিত চার দিনের টেস্ট সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। যে প্রসঙ্গে লারা উত্তর দেন, ‘‘আইসিসি হয়তো সময় ও অর্থের সাশ্রয় করতে এই প্রস্তাব রেখেছে। কিন্তু আমার মতে, পাঁচ দিনের টেস্ট ক্রিকেটের আকর্ষণই আলাদা। অ্যাশেজ সিরিজে তো সব ম্যাচের নিষ্পত্তি পাঁচ দিনে হয়েছে। এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এসেছে। সুতরাং ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সব দেশকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’’