বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মারা যান পেলে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই মারা যান মোদীর মা। —ফাইল চিত্র
পেলে মারা যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রয়াত হীরাবেন। তাঁদের একে অপরের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু মৃত্যুতে মিলে গেলেন তাঁরা। এক দিকে পেলের শতায়ু মা সেলেস্টি হারালেন তাঁর ছেলেকে, অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদী হারালেন তাঁর শতায়ু মাকে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মারা যান পেলে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই মারা যান হীরাবেন। একজন ছিলেন সাও পাওলোর হাসপাতালে, অন্য জন আমদাবাদের। দুই শহরের মধ্যে তফাত ১৩,৮৪৮ কিলোমিটার। মায়ের মৃত্যুর খবর শুনেই আমদাবাদ যাচ্ছেন মোদী। অন্য দিকে সাও পাওলোতে ছেলেকে দেখার জন্য পেলের মাকে অপেক্ষা করতে হবে সোমবার পর্যন্ত। তার পরেও তিনি ছেলেকে দেখতে পারবেন কি না তা বলা সম্ভব নয়। পেলের মা সেলেস্টি শয্যাশায়ী। তাঁর পক্ষে উঠে কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণে সোমবার পেলের মরদেহ তাঁর মায়ের বাড়ির সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যদিও সেলেস্টির মানসিক সমস্যাও রয়েছে। বোধ শক্তি হারিয়েছেন তিনি। পেলের মৃত্যুর খবর পেলেও তিনি তা বুঝতে পারবেন কি না তা স্পষ্ট নয়।
মৃত্যুর সময় পেলের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তাঁর মায়ের বয়স ১০০ পেরিয়ে গিয়েছে। শারীরিক এবং মানসিক ভাবে তিনি সুস্থ নন। সেলেস্টি যে দিন তাঁর ছেলেকে হারালেন, সে দিনই মাকে হারালেন ৭২ বছরের মোদী। তাঁর মায়ের বয়স ১০০ বছর। শতায়ু হীরাবেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলায় আসার কর্মসূচি বাতিল করতে চলেছেন মোদী। তিনি আমদাবাদে মায়ের কাছে যাবেন। মাকে শেষ বার দেখতে পাবেন তিনি। পেলের মা হয়তো ছেলেকে শেষ বার দেখার সুযোগ না-ও পেতে পারেন।
২০২১ সাল থেকে অন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত পেলে। কাতার বিশ্বকাপের সময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৯ নভেম্বর তাঁকে সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২২ ডিসেম্বর ক্যানসারের প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যায়। ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে বাড়ি ফেরা হয়নি। বড়দিনে এ বছর হাসপাতালেই কাটিয়েছিলেন পেলে। বিছানায় অসুস্থ বাবাকে জড়িয়ে ধরে ছবি গণমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তাঁর কন্যা কেলি। গত শনিবার হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলে এডিসনও। গত কয়েক দিন ধরে পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে তাঁর পাশেই ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ডাক্তাররা সুস্থ করে তুলতে পারলেন না ফুটবল সম্রাটকে। চিরনিদ্রার দেশে চলে গেলেন পেলে।
গত মঙ্গলবার আচমকা শরীর খারাপ হওয়ায় হীরাবেনকে আমদাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি ঠিক কী কারণে অসুস্থ ছিলেন তা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়নি। যে দিন তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল সে দিনও হাসপাতালে গিয়ে মাকে দেখে আসেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হীরাবেন।