অবিশ্বাস্য শাসন। ব্রাজিলের তিনমূর্ত্তি কুটিনহো-নেইমার-গ্যাব্রিয়েল। ছবি: রয়টার্স।
নেইমার-১ : মেসি-০।
আর্জেন্তিনার মিডিয়া শুক্রবারের ভোরের যে ম্যাচের ফুটবলীয় স্কোরলাইনকে বলছে ‘প্রলয়’!
এক ধাপ এগিয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইংয়ে শেষ চার ম্যাচে জয় না পাওয়া লিওনেল মেসিদের দেশজ-মিডিয়ার একটা অংশ। তারা আর্জেন্তিনা দলের বর্তমান পরিস্থিতিকে বলছে, ‘রাশিয়ান রুলেট’-এর সামনে পড়ার মতোই ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক! যার মানেটা হল, বন্দুক মাথায় ঠেকানোই আছে, যে কোনও সময় গুলি ছুটে মৃত্যু ঘটতে পারে আগামী বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের স্বপ্নের।
দুই বার্সা মহাতারকার ফিফা আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলির বাইরে প্রথম মুখোমুখি যুদ্ধ এই ম্যাচটাই ছিল। যে ম্যাচের পরে তীব্র হতাশ মেসি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে গেলে টিমে বড়সড় পরিবর্তন দরকার। বদল দরকার মানসিক দিক দিয়েও। কেউ মানসিক ভাবে ভাল জায়গায় না থাকলে পাগুলোও চলে না।’’ আর্জেন্তিনার রাজপুত্র সঙ্গে আরও যোগ করেছেন, ‘‘এ রকম রেজাল্ট হবে আমরা ভাবতে পারিনি। আরও খারাপ হতে পারত। আমরা তো জবাবই দিতে পারলাম না।’’
বিশ্বকাপের লাতিন আমেরিকান কোয়ালিফাইং রাউন্ড রবিন গ্রপের যা অবস্থা তাতে আর্জেন্তিনা এখন ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় ছয় নম্বরে ধুঁকছে। আগামী সপ্তাহে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে মেসিদের অক্সিজেন পাওয়ার লড়াই। সেটা ভাল করে এখন বুঝছেন বলেই মেসি বলেছেন, ‘‘এটা ঠিক আমরা হতাশ। তবে এখনও তো টিকে আছি। এখনকার পরিস্থিতি ভুলে গিয়ে কলম্বিয়া ম্যাচের কথা ভাবতে হবে। ওই ম্যাচ জিতলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।’’
চোট সারিয়ে তিন ম্যাচ পর জাতীয় দলে ফিরেও মেসি আর্জেন্তিনার হাল ফেরাতে পারলেন না। যার কারণ হিসেবে ব্রাজিল কোচ তিতে তাঁর গেমপ্ল্যানের সফল প্রয়োগকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন। তিতে বলেছেন, ‘‘আর্জেন্তিনার অর্ধে খেলাটা আমরা ইচ্ছে করেই বেশি করে বাঁ-দিকে রাখছিলাম। যাতে মেসি বল বেশি না পায়। ও সেই সময়টায় ডান দিকে খেলছিল। এবং যখন ও উইং বদলাতে বাধ্য হচ্ছিল আমাদের কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। কারণ ততক্ষণে বাঁ দিকে প্রচুর প্লেয়ারের ভিড় তৈরি হয়ে গিয়েছে।’’
নেইমারের দেশের জার্সিতে ৫০তম গোলে ব্রাজিল শুধু হেসেখেলে চিরশত্রুকে হারায়ইনি, বেলো হরাইজন্তে স্টেডিয়ামের সেই অভিশাপও যেন কাটাল। দু’বছর আগে নিজের দেশে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে সেই ১-৭ গোলে দুঃস্বপ্নের হারের। এ দিন ম্যাচের পর তাই হয়তো ব্রাজিলীয় সমর্থকদের একটা অংশকে আক্ষেপ করতে দেখা যায়, ‘ইস সেই ম্যাচটায় যদি নেইমার থাকত আমাদের ওই ভাবে হারতে হত না।’’
কী হলে কী হত বলা মুশকিল, তবে এটা ঘটনা নেইমার থাকলে ব্রাজিল কী করতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ সম্প্রতি প্রাক বিশ্বকাপে পাওয়া যাচ্ছে। আপাতত নেইমারের ব্রাজিল পাঁচে পাঁচটা জিতে পয়েন্ট (১১ ম্যাচে ২৪) টেবলের শীর্ষে।