ছবি এএফপি।
মারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জেরে সন্ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। তার জেরেই এ বার টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছোনোর দাবি তুলছে গোটা বিশ্ব। একই সুর শোনা গিয়েছে ভারতের বর্ষীয়ান টেবল টেনিস খেলোয়াড় শরথ কমলের গলায়ও।
আন্তজাতিক অলিম্পিক্স কমিটির প্রেসিডেন্ট থোমাস বাখ ধীরে চলো নীতি নিয়ে গত সপ্তাহেই বলেছেন, অলিম্পিক্স এখনও চার মাস পরে। ফলে এত দ্রুত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না অলিম্পিক্স নিয়ে।
এ দিন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির উপর চাপ বাড়িয়ে ব্রাজিলের অলিম্পিক কমিটি জানিয়ে দিয়েছে, এ বছর টোকিয়ো অলিম্পিক্স বাতিল করা হোক। পরিবর্তে অলিম্পিক্স পিছিয়ে আয়োজন করা হোক আগামী বছর একই সময়ে। শনিবার ব্রাজিলের অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট পওলো ওয়ান্ডার্লে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘একজন প্রাক্তন জুডোকা ও কোচ হিসেবে আমি জানি, সব অ্যাথলিটই তাঁর সেরা সময়ে অলিম্পিক্সে যেতে চান। কিন্তু এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের যা পরিস্থিতি তাতে অলিম্পিকস পিছিয়ে দেওয়া যেতেই পারে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘অতীতে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বা মস্কো অলিম্পিক্সের সময়েও ধাক্কা এসেছে অলিম্পিক্সে। কিন্তু তা কী ভাবে সামলাতে হবে তা জানে আইওসি।’’
একই দাবি তুলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটি। তাদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা ম্যাক্স সিগেল এ দিন বলেছেন, ‘‘জানি অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব জটিল ও কঠিন।’’ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়া হোক। এতে অ্যাথলিটেরা যেমন প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবে, তেমনই শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তাও পাবে।’’ মার্কিন অলিম্পিক কমিটিকে টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার একই আর্জি জানিয়েছে সে দেশের সাঁতার ও অলিম্পিক্স সংস্থাও।
ভারতের টেবল টেনিস খেলোয়াড় শরথ কমল এর আগে তিনটি অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছেন। গত সপ্তাহেই ওমানে আইটিটিএফ প্রতিযোগিতায় জিতে ভারতে ফিরেছেন এই টেবল টেনিস খেলোয়াড়। কিন্তু সেখান থেকে ভারতে ফেরার পরে ঘরেই স্বেচ্ছাবন্দি হয়ে রয়েছেন তিনি।
এ দিন টোকিয়ো অলিম্পিক্স প্রসঙ্গে শরথ কমল বলেন, ‘‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি চাই অলিম্পিক্স যথা সময়ে হোক। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই চাই টোকিয়ো অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়া হোক। এই ভাইরাস কোনও এক দেশে সীমাবদ্ধ নয়। গোটা বিশ্ব জুড়েই তার মারণলীলা চলছে। প্রথমে চিন, তার পরে ইটালি ও ইরান আর এখন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি গোটা এশিয়া মহাদেশ-সহ গোটা বিশ্বেই। আমার মনে হয়, নির্ধারিত সময় অর্থাৎ, জুলাই-অগস্ট মাসে অলিম্পিক্স টোকিয়োতে অনুষ্ঠিত হলে তা পৃথিবীর পক্ষে নিরাপদ নয়।’’ যোগ করেন, ‘‘সুস্থতার জন্য গোটা বিশ্বে প্রচার করা হচ্ছে, সকলের সঙ্গে সকলে দূরত্ব বজায় রেখে চলুক। কিন্তু অলিম্পিক্স ভিলেজে তা কোনও মতেই সম্ভব নয়। ফলে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়ে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।’’