ফুরফুরে: জাডেজা, রাহুলদের সঙ্গে নিজস্বী তুলে কোহালির টুইট, ‘‘সুন্দর অকল্যান্ডে জিম সেশনটা ভালই হল।’
বিরাট কোহালিদের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী বলে দিচ্ছেন, এই ভারতীয় দল আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে বিশ্বকাপের স্বপ্নে। এ বছরেই অস্ট্রেলিয়াতে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। যা জেতার জন্য ক্রমশ মরিয়া দেখাচ্ছে কোহালিদের। এর আগে ২০১৫ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপ না জেতার যন্ত্রণা যে তাঁরা ভুলতে চান, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে শাস্ত্রীর কথায়।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী এ-ও জানিয়ে দিয়েছেন যে, নিউজ়িল্যান্ড এবং দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সাদা বলের সিরিজকে তাঁরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে ধরছেন। কী ধরনের সংস্কৃতি রেখে যেতে চান তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘এমন এক দল আমরা গড়তে চাই যেখানে টস কোনও পার্থক্য গড়তে পারবে না, পরিবেশের দিকে না তাকিয়ে সব দেশে, সব প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যারা ভাল খেলতে পারবে। সেটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা ছুটছি।’’ তার পরেই যোগ করছেন, ‘‘হ্যাঁ, বিশ্বকাপ ভাবনায় আমাদের মন আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য যা যা করা দরকার, আমরা করব।’’
নিউজ়িল্যান্ডে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি, তিনটি ওয়ান ডে এবং দু’টি টেস্ট খেলবে ভারতীয় দল। ২৪ জানুয়ারি সফর শুরু হচ্ছে অকল্যান্ডে প্রথম কুড়ি ওভারের ম্যাচ দিয়ে। শাস্ত্রী বলছেন, বর্তমান এই ভারতীয় দলের সব চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, খেলোয়াড়রা একে অন্যের সাফল্য উপভোগ করেন। ‘‘এই দলে ‘আমি’ শব্দটার কোনও অস্তিত্ব নেই। সব সময় ‘আমরা’ শব্দটা প্রাধান্য পায়। প্রত্যেকে তার সতীর্থদের সাফল্যে আনন্দিত হয়, উপভোগ করে কারণ ওরাও জানে, ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। টিম জেতে, টিম হারে।’’
সামনের কয়েক মাসে যে ওয়ান ডে ম্যাচ হবে, সেখানেও কি অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারা হবে? শাস্ত্রীর ইঙ্গিত, ‘‘হ্যাঁ, সেটা হতেই পারে।’’ পুরো শক্তির অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ হেরেও ২-১ ফলে ওয়ান ডে সিরিজ জয়ের জন্য দলের মানসিক শক্তিকে কুর্নিশ করছেন হেড কোচ। বলছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া সিরিজের এই ফল প্রমাণ করে দিল, দলের মানসিক শক্তি এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। চাপের মধ্যে খেলতে শিখে গিয়েছে ছেলেরা। ওয়াংখেড়েতে ও রকম একপেশে ভাবে হারার পরে এমন দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে সিরিজ জেতা মোটেও সহজ নয়। অনেক প্রশংসাই প্রাপ্য ওদের।’’ যোগ করছেন, ‘‘ছেলেরা সাহস দেখিয়েছে। বিরাটও একদম ঠিক শব্দটা ব্যবহার করেছে সিরিজ জেতার পরে— সাহস। এই সিরিজ দেখিয়ে দিয়েছে আমরা তীব্রতার সঙ্গে সাহসী ক্রিকেট খেলতে ভয় পাই না।’’
যদিও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয় নিয়ে পড়ে থাকতে চান না শাস্ত্রী। সামনের দিকে তাকিয়ে নতুন লড়াইয়ের উপরে মনঃসংযোগ করতে চান। বলে দিচ্ছেন, ‘‘এই দল বর্তমানে দাঁড়িয়ে থাকে। আগে যা হয়েছে, তা দ্রুত অতীত হয়ে যায় ছেলেদের কাছে। আমরা সব সময় একই রকম সাফল্য ভবিষ্যতের রাস্তাতেও পাওয়ার কথা ভাবি।’’ চোটের জন্য শিখর ধওয়নের ছিটকে যাওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দেন শাস্ত্রী। বলছেন, ‘‘ধওয়নের কথা ভেবে খুবই খারাপ লাগছে। ও সিনিয়র ক্রিকেটার। ম্যাচউইনার। এ রকম ভাবে কেউ চোট পেলে দলের সকলেরই মন খারাপ হয়।’’ বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে-তে ফিল্ডিং করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে কাঁধে চোট পান ধওয়ন। তিনি নিউজ়িল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে, দু’টোর কোনও সিরিজেই খেলতে পারবেন না। তাঁর পরিবর্তে কুড়ি ওভারের সিরিজে দলে ঢুকেছেন সঞ্জু স্যামসন, ওয়ান ডে-তে থাকছেন পৃথ্বী শ।
ও দিকে অধিনায়ক কোহালি ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, কে এল রাহুলকে দিয়ে কিপিং করিয়ে যাওয়া হতে পারে। শাস্ত্রীও উড়িয়ে দিচ্ছেন না, ‘‘আমরা বিকল্প পছন্দ করি। রাহুল আমাদের হাতে নানা বিকল্প তুলে দিচ্ছে,’’ বলছেন তিনি। একই সঙ্গে কেদার যাদবকে নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা উড়িয়ে দিচ্ছেন। কেদার সম্প্রতি তেমন কিছুই করতে পারেননি। বোলিংও করছেন না। তবে কি শেষের দিকে এগোচ্ছেন কেদার? হেড কোচের জবাব, ‘‘কেদার এখনও ওয়ান ডে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। নিউজ়িল্যান্ডেও তা-ই থাকবে।’’ যদিও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মণীশ পাণ্ডেকে খেলানো হয়েছে কেদারকে বসিয়ে রেখে। কুল-চা জুটিকে কি ফেরানো হতে পারে? শাস্ত্রীর কথায়, ‘‘যখন যেমন দরকার, সেই বুঝে আমরা প্রথম একাদশ নামাই। ভেবে দেখতে হবে, কুলদীপ আর চহালকে একসঙ্গে খেলানো যাবে কি না।’’ সূর্যকুমার যাদবকে ভারতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার দাবি তুলেছে মুম্বই মহল। যদিও রঞ্জি ট্রফি স্তরে এখনও কিছুই করে উঠতে পারেননি সূর্য। এ নিয়ে শাস্ত্রীকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনিও এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘এটা নির্বাচকদের দায়িত্ব। আমি এর মধ্যে ঢুকি না।’’