Steffan Jones

কোচের টোটকায় ব্রডের প্রত্যাবর্তন 

২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ২১০ উইকেট পান ব্রড। বোলিং গড় ৩২।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৬:৩১
Share:

পথপ্রদশর্ক: ব্রডের সঙ্গে স্টেফান।

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টে পাঁচশো উইকেটের মালিক স্টুয়ার্ট ব্রডের জীবনকাহিনিতে রয়েছে নাটকীয় সব মোড়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের শুরুতেই সব চেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছিলেন তিনি। ২০০৭-এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর এক ওভারে ছ’টি ছয় মেরেছিলেন যুবরাজ সিংহ। পরের কয়েকটি বছরে তিনি ক্রিকেট মানচিত্রে জায়গা ধরে রেখেছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেই কলঙ্ক মুছে ওঠার মতো মনের জোর, তাঁর মধ্যে ছিল কি না প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল।

Advertisement

২০১৬ সাল সম্ভবত ব্রডের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বিগ ব্যাশে হোবার্ট হারিকেনসের হয়ে খেলছিলেন ব্রড। সেখানেই দেখা হয় বোলিং কোচ স্টেফান জোন্সের সঙ্গে। সমারসেটে ওয়েলিংটন স্কুলের ‘বোলিং ও পারফরম্যান্স এনহ্যান্সমেন্ট ট্রেনার’ ছিলেন স্টেফান। সারের স্কাউট হিসেবেও কাজ করতেন। সেখান থেকেই হোবার্টে ডাক পান। দেখা হয়ে যায় ব্রডের সঙ্গে। হাঁটুর অস্ত্রোপচার থেকে এত বছর আগে সেরে উঠলেও ব্রড হারিয়ে ফেলেছিলেন আগের ছন্দ। ছাত্রের পাঁচশো উইকেট নেওয়া উপলক্ষে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে স্টেফান জানালেন, বিগ ব্যাশের সময়েই তিনি লক্ষ্য করেন, আগের মতো গতি বা সুইং পাচ্ছেন না ব্রড। মনে হচ্ছিল যেন কোনও রকমে ডেলিভারি শেষ করে পরের বলের জন্য তৈরি হচ্ছেন।

নেটে ব্রডকে দেখে শুরুতে সে রকম প্রসন্ন ছিলেন না সতীর্থেরা। স্টেফানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, ব্রডকে পুরনো ছন্দ ফেরানোর। কী করেছিলেন স্টেফান? বর্তমানে রাজস্থান রয়্যালস অ্যাকাডেমির বোলিং কোচ ফোনে বললেন, ‘‘প্রথমেই কিন্তু বলে রাখছি, ব্রডের এই নতুন মাইলফলকের জন্য নিজে একেবারেই কৃতিত্ব নিতে চাই না। ব্রড যা করেছে, তা ওর নিজের তাগিদে, নিজের যোগ্যতায়। আমি শুধু সাহায্য করে গিয়েছি।’’

Advertisement

কী করেছিলেন স্টেফান? হোবার্টে পৌঁছে তিনি দেখেন, অনেকটাই ক্লান্ত ও মন্থর গতিতে বল করছেন স্টুয়ার্ট। তাই ইংল্যান্ড পেসারের কোমরের জোর বাড়ানোর উপর মনোনিবেশ করেন তিনি। কোমরে ‘থেরা ব্যান্ড’ পরিয়ে একটি যন্ত্রের সঙ্গে তা বাঁধা থাকে। বোলার যতই এগোবে, ততই পিছনের দিকে টানবে সেই ব্যান্ড। ব্রডের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল সেই ব্যান্ডের গতির বিরুদ্ধে গিয়ে বল করার। শুরুতে সমস্যা হলেও পরে এই পদ্ধতিতেই কোমরের জোর বাড়ে ব্রডের। এই পদ্ধতি তাঁর বলের গতি বাড়াতেও সাহায্য করেছে। সমস্যা হয়েছিল সুই নিয়েও। স্টেফান বলছিলেন, ‘‘রান-আপের ছন্দটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। খুবই মন্থর গতিতে দৌড়তে শুরু করেছিল ব্রড। ওকে বলেছিলাম, দৌড়নোর সময় যতটা সম্ভব বুকের কাঁছে হাঁটু তোলার চেষ্টা করো। তাতে বল ছাড়ার সময় হাত অনেক উঁচুতে থাকবে। শরীরটাও অনেক খুলবে।’’

২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ২১০ উইকেট পান ব্রড। বোলিং গড় ৩২। ২০১৬ থেকে ২০২০-র মধ্যে ১৯১ উইকেট আসে তাঁর। শেষ চার বছরে তাঁর বোলিং গড় ২৭। ব্রড নিজেও উপকৃত হয়ে টুইট করেছিলেন, ‘‘জীবনে অনেক বড় বোলিং কোচেদের সঙ্গে কাজ করেছি। তার মধ্যে স্টেফান জোন্স অন্যতম। ধন্যবাদ। খুব উপকৃত হয়েছি তোমার পরামর্শ পেয়ে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement